মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

সেতুর অপেক্ষায় শত বছর

আদমদীঘির রক্তদহ বিলের খেয়াঘাটে ২৫ গ্রামের লাখো মানুষের চরম জনদুর্ভোগ

মো. মনসুর আলী, আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০৫ এএম

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদর ও সান্তাহার জংশন শহরবাসী ও নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার পুর্বঞ্চলের ২৫ গ্রামের প্রায় লাখো মানুষের সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য সান্তাহারের রক্তদহ বিলের সান্দিড়া-বোদলা খেয়াঘাটে একটি সেতু নির্মাণের দাবি শত বছরেরও বেশি সময়ের। একটি সেতু নির্মাণ করা হলেই এ অঞ্চলের মানুষ খুব সহজেই যাতায়াত করতে পারবে। এতে রক্তদহ বিলের দুই পাড়ের মানুষ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে। ব্যবসা ব্যাণিজ্যের ক্ষেত্রে ও বিলের দুই পাশের মানুষের যোগাযোগের সমস্যা দূর হবে। এছাড়াও কমে যাবে রানীনগর উজেলার ২৫ গ্রামের মানুষের ২৫ কিলোমিটার রাস্তা। মাত্র ৩০-৪০ মিনিটে বিলের দুই পাড়ের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পন্য হাটে আসতে পারবেন।
জানা যায়, প্রতিদিন রক্তদহ বিল পারের ২৫/৩০ গ্রামসহ এর আশপাশের এলাকার প্রায় লাখো মানুষ শত শত বছরের চেয়ে বেশি সময় ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ দৈনন্দিন জীবনের নানা চাহিদা মেটানোর জন্য নওগাঁ জেলা সদর, বগুড়ার সান্তাহার জংশন শহর, রাজশাহী ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য শহরে যাতায়েত করে। ফলে বর্ষা মৌসুমে রক্তদহ বিল পারের দুই পারের মানুষের সান্দিড়া-বোদলা খেয়াঘাটের নৌকায় একমাত্র ভরসা। বর্ষা মৌসুম শেষ হয়ে খড়া মৌসুম শুরু হলেই ভুক্তভুগিদের মাঝে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। বিলের পানি কমে গেলে পারাপারে নৌকা আর চলে না। ফলে চরম দুর্ভোগে পরতে হয় ভুক্তভুগিদের। সময়মত গন্তব্যে পৌছাতে পারেনা কেউ। অনেকে নৌকা না পেয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে সাঁতার দিয়ে এ বিল পার হয়ে থাকে। এতে প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটে।
এমতাবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য ভুক্তভুগিরা স্থানীয় মেম্বার, ইউপি চেয়াম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান এমপি ও মন্ত্রীদের দ্বারস্থ হয়ে উল্লিখিত খেয়াঘাটে একটি সেতু নির্মাণের দাবি করে আসছেন শত বছররের চেয়ে বেশি সময় ধরে।
নির্বাচন এলেই এলাকার ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও এমপি প্রার্থীরা উক্ত খেয়াঘাটে সেতু করার প্রতিশ্রতি দেন এবং নির্বাচন এলে ভুক্তভুগিদের মনে আশার আলো জেগে ওঠে। কিন্তু পরক্ষণে প্রতিশ্রতি বাস্তবায়ন করে না কেউ। রাস্তাঘাট সেতু, কালভাটসহ সারাদেশে বর্তমান সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়। কিন্তু শত বছরের চেয়ে বেশি সময় ধরে দুর্ভোগের শিকার মানুষগুলোর কথা ভাবছে জন প্রতিনিধিরা।
বোদলা গ্রামের মোদি দোকানি মাসুদ হোসেন বলেন, পদ্মা নদী গভীর পানিতে সেতু হয়েছে। আমাদের রক্তদহ বিল অনেকটা ভারাট হয়ে গেছে। জন প্রতিনিধিরা উদ্যোগ নিলে সহজেই আমাদের দাবি বাস্তবায়ীত হবে। আমরা সেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে একাধিক বার বিলের দুইপাশে রাস্তা তৈরির উদ্যাগ গ্রহন করে অর্থ অভাবে আমারা তা বাস্তবায়তি করা সম্ভব হয়নি। একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলেই ভুক্তভুগিরা দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে।
এ ব্যাপারে বোদলা গ্রামের আবু মুসা টুটুল বলেন, আমাদের যোগাযোগের একমাত্র পথ এই খেয়াঘাট। দীর্ঘদিনের আমাদের এই সমস্যা স্থনীয়, ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, এমপিকে অবগত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রানীনগর ও আদমদঘি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ব্রিজের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করা যায়, টাকা বরাদ্দ হলে সেতুটির কাজ শুরু হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন