ভোজ্য তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং আমদানী নির্ভর ভোজ্য তেলের ওপর নির্ভশীলতা কমাতে কৃষি বিভাগের সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও প্রণোদনায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর কৃষকরা আমন ক্ষেতে সরিষা চাষ করে আশার আলো দেখছেন।
উপজেলা বিভিন্ন এলাকা ঘরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সরিষার হলুদ ফুলের সমাহার। আমন ধান কাটার সাথে সাথে ওই জমিতেই সরিষা চাষ করছেন কৃষকরা। চকচকা গ্রামের সরিষা চাসি সাংবাদিক ফিজারুল ইসলাম ভুট্টু বলেন, ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে সরিষার দামও বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ফলে বাড়তি লাভের পাশাপাশি পরিবারের চাহিদা পুরুন হচ্ছে। একই কথা বলেন অন্য সরিষা চাষিরা।
কৃষি বিভাগ বলছে, খরচ ও চাষের সময় দুটোই কম হওয়ায় কৃষকের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সরিষা চাষ। গত কয়েক বছরে নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনের ফলে শস্যটির ফলনও আগের চেয়ে বেড়েছে। ফলে শস্য ভান্ডার খ্যাত দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ীসহ আশপাশের এলাকার বিভিন্ন স্থানে দিন দিন বাড়ছে সরিষার চাষ। চলতি বছর উপজেলায় ১২৫৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার অধিক ১৩০১ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়।
এদিকে ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরিষাকে বিকল্প হিসেবে দেখছে সরকার। এজন্য ফসলটির উৎপাদন বাড়াতে কৃষককে বীজসহ দেওয়া হচ্ছে পরামর্শ। ফসলের শ্রেণি বিন্যাসে পরিবর্তন এনে গতিশীল করা হচ্ছে সরিষার চাষ।
অন্যদিকে আমন ধান গোলায় তুলে বোরো চাষের বীজতলাসহ সকল প্রস্ততি সম্পন্ন করতে কৃষকের যতটুকু সময় লাগে এর মাঝেই ক্ষেত থেকে সরিষা ঘরে উঠে আনতে পারে কৃষক। তাই অনেকেই আমন ধান সংগ্রহের পর জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষের পর আবার বোরো ধান রোপণ করেন। এতে একই জমিতে বছরে তিনটি ফসল উৎপাদন করে বাড়তি লাভবান হতে পারে কৃষক।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, সরিষা চাষে কৃষককে আগ্রহী করে তুলতে এবার উপজেলার ৩২শ’ কৃষককে এক কেজি করে সরিষার বীজ প্রনোদনা দেয়া হয়েছে। কৃষি অফিস মাঠ পর্যায়ে কর্মীরা ফসলের সার্বক্ষনিক তদারকি করছে। তিনি বলেন, নভেম্বরে সরিষা চাষের উপযুক্ত সময় হলেও এবার কৃষকদের মাঝে সরিষা চাষে ব্যাপক উৎসাহের কারণে এখন পর্যন্ত কৃষক সরিষার বীজ বোপন করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন