নাটোরের সিংড়া উপজেলার এক গৃহবধূ ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। বাড়ির চার দেওয়াল থেকে বের হয়ে তিনি মাটির সাথে মিতালি করে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। প্রথম দিকে গৃবধূর শখ এখন সবার কাছে দৃষ্টান্ত। তিনি পরিবারে স্বামী স্কুল শিক্ষকের সাথে অবদান রাখছেন।
উপজেলার চামারী ইউনিয়নের মহিষমারী চক বলরামপুর গ্রামের গৃহবধু জেসমিন আক্তার। স্বামী স্কুল শিক্ষক ওসমান গণি ও কলেজ পড়–য়া ২ মেয়েকে নিয়েই তার সংসার। তিনি হলেন সিংড়া উপজেলার ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনে প্রথম নারী উদ্যোক্তা। দুই বছর আগে নিজ বাড়িতে কেঁচো খামার থেকে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে সফল হয়েছেন।
এবার শখের বসে ৫০ শতাংশ জমিতে বরইয়ের চাষ করেছেন। মাত্র ৩০ হাজার টাকা খরচ করে আয় করেছেন সোয়া লাখ টাকা। সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় বরই চাষি জেসমিনের সাথে। তিনি জানান, প্রায় ১০ মাস আগে নিজের ৫০ শতাংশ জমিতে বরই বাগান করার উদ্যোগ নেন। বরই গাছের চারা, শ্রমিক, ঘেরসহ তার খরচ হয়েছে মাত্র ৩০ হাজার টাকা।
তিনি জানান, বরই গাছের চারা রোপণের মাত্র ৭ মাসেই ফল ধরে বিক্রির উপযোগী হয়। বাগানের সবগুলো গাছের বরই পাইকারদের কাছে বিক্রি করেছেন দেড় লাখ টাকায়। সব খরচ বাদ দিয়ে আয় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বরইয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে।
গৃহবধূর স্বপ্নের বাগানে ঝুলছে নারিকেল কুল, কাশ্মিরি কুল ও বলসুন্দরী নামের উন্নত জাতের সু-স্বাদু বরই। নিজের কেঁচো খামারের উৎপাদিত ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহার করে অধিক লাভবান হয়েছেন তিনি। বাগানের বরই আকারে বড় তরতাজা ও উজ্জল রঙের সবার নজর কাড়ছে।
জেসমিন বলেন, নিজ খামারের কেঁচো সারের কারণে অন্যান্য সার পরিমাণে কম লেগেছে। তার আশা আগামীতে কোন খরচ লাগবে না। আর বাগান থেকে লাভের অঙ্কটাও আরও বেশি পাবেন বলে আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সেলিম রেজা বলেন, সিংড়া উপজেলায় ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনে প্রথম নারী উদ্যোক্তা জেসমিন আকতার। ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনের পাশাপাশি বরই চাষেও সফল হয়েছেন তিনি। আমরা কৃষি বিভাগ একজন নারী কৃষক হিসাবে জেসমিনকে ভার্মি কম্পোস্ট ও ফলবাগানের উপর প্রশিক্ষণ দিয়েছি। জেসমিনকে দেখে অনেক নারী কৃষক উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। আমরা কৃষকদের পাশে থেকে সব ধরনের পরার্মশ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। কৃষকদের মাঝে দিন দিন পরিবেশবান্ধব ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহারের জনপ্রিয়তা বাড়ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন