কক্সবাজারের উখিয়ার জালিয়া পালং ইউনিয়নের ইনানী বড়খাল এলাকার গহীন অরণ্যে সন্ধান পেয়েছে অবৈধ অস্ত্র তৈরির কারখানা। পাহাড়ের গহীনে অস্ত্র তৈরি করে বন্যপ্রাণীকে আক্রমণ করতো স্থানীয় জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে অভিযানে নেতৃত্ব দেন ইনানী রেঞ্জের অফিসার শামীম রেজা এবং আথে ছিলেন ইনানী বিট অফিসার তোসাদ্দেক হোসেন, বনবিভাগের কর্মকর্তা, এফজিসহ প্রায় ৭৮ জন স্টাফ।
বন বিভাগের অভিযান আঁচ করতে পেরে পালিয়ে যায় অস্ত্র তৈরির মূলহোতা জাহাঙ্গীর আলম ওরফে সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর । এসময় সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অবৈধভাবে গড়ে তোলা স্থাপনা গুড়িয়ে দেয় বনবিভাগ। দেশীয় তৈরি এক নলা বন্দুকসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করেন ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তা শামীম রেজা মিঠু। তিনি অত্র প্রতিবেদককে জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ দুষ্কৃতকারীদের নজরে রেখে ও গোপন সংবাদের প্রেক্ষিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুষ্কৃতকারীরা ইনানী বড়খালের অভ্যন্তরে গহীন অরন্যে সামাজিক বনায়নের জায়গায় অবৈধভাবে ১০একর জমি দখল করে রাখে। তারা বনভূমি, সামাজিক বনায়নের গাছ, পাহাড় টিলা ধ্বংস করে কলা বাগান ও অন্যান্য বাগান করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। অত্র এলাকাগুলো ছিল জীববৈচিত্র্য ভরপুর ও বন্য হাতি ও অন্যান্য পশুপাখিদের অভয়ারণ্য। ঐ সন্ত্রাসী বাহিনী বনের পশু পাখি, জীবজন্তু শিকার ও কলা গাছ খেতে আসা হাতিকে প্রায় সময় গুলি করে চলছে এবং বনভুমি ধ্বংস করে বন্যপ্রাণী হত্যার করার জন্য অবৈধ আস্তানাও গড়ে তুলেছে।
তারই ধারাবাহিকতায়, বৃহস্পতিবার সকালে অভিযান পরিচালনা করে উক্ত আস্তানায় ১টি দেশীয় তৈরি একনলা বন্দুক,১টি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল, ৫০ পিস সিসা, ১শ ২১পিস ম্যাচ (দিয়াশলাই) ও একটি কাঠের বাটযুক্ত বন্দুক, দেশীয় বন্দুক তৈরি প্রক্রিয়াধীন উপাদানসহ ওবায়দুল্লাহ (১৫) নামক একজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতার কৃত ব্যক্তি সন্ত্রাসী ও অস্ত্র তৈরির কারিগর জাহাঙ্গীর আলমের ভাতিজা বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত ওবায়দুল্লাহ ও পলাতক জাহাঙ্গীর আলমকে আসামি করে অজ্ঞাত ৮/১০ জনকে আদামী করে উখিয়া থানায় একটি রীতিমতো মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রেঞ্জকর্মকর্তা শামীম রেজা বলেন, গ্রেফতারকৃত ওবায়দুল্লাহ (১৫) কে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে, সে জাহাঙ্গীরের নির্দেশে বনভূমি দখল করে বন্যপ্রাণী হত্যার পরিকল্পনা ও দস্যুতার সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে।
এখানে উল্লেখ্য যে, ইতিপূর্বেও গত ২২ সেপ্টেম্বর উখিয়া রেঞ্জের থাইংখালীর গহীন বনে রাসেলের ডেরায় অভিযান চালিয়ে দুইটি দেশীয় তৈরি বন্দুকসহ বিপুল অস্ত্র উদ্ধার করে বনবিভাগ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন