সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

রাঙ্গুনিয়ায় দুষ্প্রাপ্য খেজুরের রস

নুরুল আবছার চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া (চট্টাগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০১ এএম

শীতের খেজুর রসের স্বাদ অনন্য, যার তুলনা নেই। শরীরে জন্যও এর উপকারিতা বেশি। মহানগরে শীতকালে খেজুরের রস খুজে নেওয়াটা কষ্টকর। গ্রামাঞ্চলেও আজকাল সহজে দেখা মেলে না এ রসের। রাঙ্গুনিয়ায়ও গাছ-গাছির অভাবে রস এখন দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। রাঙ্গুনিয়ায় এক সময় বাড়ির আঙিনায়, সড়কের পাশে সারি সারি খেজুর গাছ দেখা যেত। শীতকাল আসলেই ভোরে রস সংগ্রহ করে বিক্রি করতে দেখা যেত গাছিদের। আশপাশের উপজেলা থেকেও রাঙ্গুনিয়ায় রস সংগ্রহে আসত সাধারণ ক্রেতারা। তবে নগরায়ণের ফলে রাঙ্গুনিয়ার সেই মুখরোচক খেজুর রস এখন পাওয়া দুষ্কর। গুটিকয়েক গাছি পুরাতন এই পেশা ধরে রেখেছেন। উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের কৃষক আবুল কাশেম তাদেরই একজন। শীতকাল এলেই ব্যস্ততা বেড়ে যায় তার। তখন অন্য কাজ বাদ দিয়ে খেজুরের রস বিক্রি করেই সংসার চালান তিনি। রস বিক্রি করেই প্রতি মৌসুমে আয় করেন অর্ধলাখ টাকা।

তিনি জানান, শীতের শুরুতেই খেজুর গাছ কাটা শুরু করেন তিনি। রসের প্রচুর চাহিদা। প্রতিদিন ভোরে রস সংগ্রহ করে গাছ থেকে নামাতেই বিক্রি হয়ে যায়। বাজারে নিয়ে যেতে হয় না, বাজারে যাওয়ার পথেই বিক্রি হয়ে যায়। এমনকী অগ্রিম অর্ডার নিয়েও রস দিতে পারেন না অনেকে। এই পেশায় ঝুঁকি অনেক বলে জানান আবু হোসেন। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যে হারে খেজুর গাছ হারিয়ে যেতে বসেছে তাতে এক সময় হয়তো আমাদের এলাকায় খেজুর গাছ থাকবে না। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হবে। আমি প্রতি মৌসুমে রস সংগ্রহ করি। তাছাড়া অন্য মৌসুমে মোটামুটি চাষবাস করেই আমার দিন পার হয়। কৃষক আবু নাছেরের মতো উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অর্ধশত গাছি এই পেশায় জড়িত। উপজেলার পদুয়া, সরফভাটা মীরেরখীল, শিলক, বগাবিলি, দক্ষিণ রাজানগর, স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, পারুয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় এখন খেজুর রস পাওয়া যাচ্ছে। তবে প্রতি বছর তা কমে আসছে। সরফভাটা মীরেরখীল এলাকার গাছি মো. জাফর জানান, প্রতি লিটার খেজুরের কাঁচা রস বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। প্রতিদিন প্রায় ১২ থেকে ১৫ লিটার রস বিক্রি করেন তিনি। প্রতিদিন রস বিক্রি করে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার মতো আয় করেন।
রাঙ্গুনিয়া পৌর মেয়র শাহজাহান সিকদার বলেন, এক সময় খেজুর রসের জন্য রাঙ্গুনিয়া বিখ্যাত ছিল। এখন গাছ নেই বললেই চলে। যা আছে, সেগুলো থেকে আগের মতো রস পড়ে না। ফলে ঐতিহ্যের খেজুর রসের প্রচুর চাহিদা থাকা স্বত্ত্বেও দিন দিন তা বিলুপ্তির পথে বসেছে। খেজুর গাছ রক্ষায় সকলকে সচেষ্ট হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন