গারো পাহাড়ের ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ি উপজেলায় অব্যাহত লোডশেডিংয়ের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকরা ও চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তারা শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল নিয়ে উদ্বিগ্ন। ক’জন শিক্ষার্থীর সাথে আলাপকালে তারা জানান, লোডশেডিং-এর কারণে পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে। তারা আরো আক্ষেপ করে জানান, পড়ালেখার সময় রাতেও লোডশেডিংয়ের কারণে পড়ালেখা করা যায় না।
তারা জানান, অনেকেই রাতে কুপি অথবা হ্যারিকেন কেউবা মোম জ্বালিয়ে পড়ালেখা করতে বাধ্য হন। অভিভাবক শালচুড়ার সরোয়ার্দী দুদু মন্ডল জানান, দিনে যেমন-তেমন, রাতেতো বিদ্যুৎ থাকা উচিৎ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, বিদ্যুতের লোডশেডিং এবং ভোল্টেজ আপডাউনের কারণে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হচ্ছে। লোডশেডিং কমই হচ্ছে, তবে গত ক’মাস থেকে বিদ্যুতের ভোল্টেজ আপডাউন বেড়েছে। তবে যত কিছুই হোক বরাবরই গভীর রাতে বিদ্যুতের লোডশেডিং বেশি থাকে। তবে এবার অন্যান্যবারের তুলনায় একটু কম লোডশেডিং হচ্ছে। তাছাড়া এখন সেচ মৌসুম শুরু হয়নি। বিদ্যুতের চাহিদাও বেশি বলে তিনি মন্তব্য করেন। গারো পাহাড়ে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টায় লোডশেডিং হচ্ছে ১০-১৫ বার। লোডশেডিংয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে ভোল্টেজ আপডাউন। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলছে। এতে করে উপজেলায় নষ্ট হয়েছে গ্রাহকদের হাজার হাজার বাল্ব, কম্পিউটার, বৈদ্যুতিক পাখা, ফ্রিজ, টিভি। বিশেষ করে সেচ মওসুমে এ অবস্থা হলে মোটর পুড়ে বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হবে কৃষকের। পুড়ে যাওয়া এক একেকটি সেচপাম্প মেরামত করতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা বাড়তি খরচ হবে। একই সঙ্গে বিঘ্ন ঘটবে পানি সরবরাহে। পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলে উৎপাদনে মার খেতে হবে বলে একাধিক কৃষক জানিয়েছেন। একই কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অন্য সময়ের তুলনায় বোরোর সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। সরবরাহ বৃদ্ধি না হলে বোরো আবাদে সমস্যায় পড়বে কৃষক।
ঝিনাইগাতী বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের আবাসিক প্রকৌশলী মো. রুকুনুজ্জামান বলেন, এখন লোডশেডিং নেই। তবে লাইনে ফল্ট হলে বিদ্যুৎ থাকে না, লাইন বন্ধ করে মেরামত করতে হয়।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ফারুক আল মাসুদ বলেন, লোডশেডিং এখন সহনীয় পর্যায়েই রয়েছে বলে মনে হয়। তবে আসছে সেচ মওসুমে বিদ্যুতের লোডশেডিং হলে বোরো আবাদ ব্যাহত হবে। এ ছাড়া ভোল্টেজ আপডাউন একটি বিরাট সমস্যা। এ ব্যাপারেও বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন