সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ও আরিচায় ফেরি চলাচল বিঘ্ন

রাজবাড়ী জেলা/আরিচ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ঘন কুয়াশার কারণে গতকাল ও দেশের গুরুত্বপুর্ন নৌরুট রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল ৬ ঘন্টা পর শুরু হয়।
কুয়াশার ঘনত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২ টা থেকে দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষনা করে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮ টায় কুয়াশা কিছুটা কমে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হয়।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যাবস্থাপক মোঃ সালাহউদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়তে থাকে এতে রাত ২ টার সময় নৌপথে মার্কিন বাতি অস্পৃষ্ট হয়ে পরলে দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষনা করা হয়। কুয়াশার ঘনত্ব কমে গেলে সকাল ৮ টায় পুনরায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়। এদিকে দীর্ঘ সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় নদী দুই প্রান্তে পারের অপেক্ষায় আটকে পরেছে ছোট বড় বেশ কিছু যানবাহন । প্রচন্ড শীত আর কুয়াশায় বিপাকে পরেছেন, বয়স্ক, শিশু ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে আরিচা-কাজিরহাট এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে নাব্যতা সংকট, সরু নৌ-চ্যানেলে মার্কিংসহ এমনিতেই নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে। এরপর ঘণকুয়াশায় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকছে। ফলে উক্ত নৌ-রুটগুলোতে চলাচলরত যাত্রী এবং যানবাহন শ্রমিকদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে মধ্যরাত থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত পদ্মা-যমুনায় অব্যহতভাবে ঘণকুয়াশা পড়ায় ফেরি চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিদিনই ৭/৮ঘন্টা করে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকছে।এ যেন, মড়ার পর খড়ার ঘা।
বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকেই নদীতে হালকা কুয়াশা পড়তে থাকে। মধ্যরাতে কুয়াশার তীব্রতা বেড়ে গেলে দুর্ঘটনা এড়াতে কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেন। কাজিরহাট থেকে ছেড়ে আসা ফেরি ক্যামিলিয়া, বেগম রোকেয়া ও কুঞ্জুলতা আরিচা ঘাটের অদুরে এসে দিক হারিয়ে ফেলে। এসময় ফেরি তিনটি ঘাটে ভীড়তে না পেরে যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে যমুনা নদীতে নোঙর করে থাকে। এছাড়া আরিচায় একটি এবং কাজিরহাটে একটি ফেরি নোঙর করে রাখা হয়। পরের দিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় ঘণকুয়াশা কেটে গেলে পুণ:রায় ফেরি চলাচল শুরু হয়।
এদিকে ঘণকুয়াশার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ৬ ঘন্টা পর ফেরি চলাচল শুরু হয়।এসময় রো-রো ফেরি শাহ-পড়ান, বীর শ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর, ভাষা শহীদ বরকত, বীর শ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, এনায়েতপুরী এবং ছোট ফেরি রজনি গন্ধা ও হাছনা হেনা যাত্রী ও যানবাহন বোঝাই করে মাঝ নদীতে নোঙর করে থাকতে বাধ্য হয়। এছাড়া পাটুরিয়া ঘাটে ৩টি এবং দৌলতদিয়া ঘাটে ৩টি ফেরি নোঙর করে থাকে। আটকে পড়া এসব ফেরির যাত্রী ও যানবাহন শ্রমিকদেরকে শীতের মধ্যে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ঘণকুয়াশায় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় পাটুরিয়া -দৌলতদিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসগুলোকে ফেরি পারাপার হতে এসে ঘাটে বসেই ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর যাত্রীবাহী যানবাহনগুলোকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে। এরপরও ফেরি বন্ধ থাকায় আগের দিন রাতে আসা নৈশকোচগুলোসহ সকল যাত্রীবাহী যানবাহনগুলোকে ঘাটে এসে ৭/৮ঘন্টা পর পরের দিন সকালে নদী পারাপার হতে হচ্ছে। দীর্ঘ এসময় যাত্রীদেরকে বাস ও ফেরির মধ্যেই বসে এবং রাস্তায় ঘোরা-ঘুরি করে সময় কাটাতে হচ্ছে। খাবার সংকট এবং প্রকৃতির ডাকে সারা দেওয়াসহ নানা ধরেেনর ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এসব যাত্রীদেরকে। বিশেষ করে কুয়াশা এবং ঠান্ডার মধ্যে বেশী অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে নারী এবং শিশু যাত্রীদেরকে।
এদিকে ফেরি বন্ধ থাকায় পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে আরিচা টার্মিনালে না রেখে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উপর আটকিয়ে রাখা হয়। এতে স্থানীয় যানবাহন চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডিজিএম শাহ মুহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ বলেন, ঘণকুয়াশা এটা প্রকৃতিগত সমস্যা। এখানে মানুষের করার কিছুই নেই। কুয়াশার কারণে নৌপথ চোঁখে দেখা যাচ্ছিল না। এমতাবস্থায় ফেরি চালালে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এ আশংকায় ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮ টায় ঘনকুয়াশা কেটে গেলে পুণরায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে তিনি জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন