সীমান্তবর্তী শেরপুর গারো পাহাড়ি অঞ্চল ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ীতে ভোর ও রাতে ঘনকুয়াশা এবং হাড়কাঁপানো শীতে কাবু হয়ে পড়েছে হতদরিদ্র মানুষ। গোটা গারো পাহাড়ে শীত জেঁকে বসায় বাড়ছে লেপ-তোষক এবং পুড়াতন শীত বস্ত্রের দোকানে ভিড়। সর্দি কাশি ও জ¦রে, কাহিল ও আক্রান্ত হচ্ছে ছোট ছেলে মেয়ে,শিশু ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। শেরপুরে আবহাওয়া অফিস না থাকায় গারো পাহাড়ের তাপমাত্রা জানা সম্ভব না হলেও প্রচন্ড ঠান্ডায় মণে হচ্ছে তাপমাত্রা সর্বনিম্মে রয়েছে। তবে রাতে তাপমাত্রা আরো কমে যায় বলে গারো পাহাড়ের শালচুড়া গ্রামের সরোয়ার্দী দুদু মন্ডল জানান। কুয়াশার কারণে সকাল ও সন্ধার পর যানবাহন চলাচল করছে হেডলাইট জ¦ালিয়ে। বন্দভাট পাড়া গ্রামের শ্রমিক রুস্তম আলী বলেন, ভাই একসপ্তাহ যাবৎ শীতে মাঠে কাজে যেতে পারছি না।
সন্ধ্যার পরই উপজেলা শহরগুলোও হয়ে পড়ছে জনশূন্য। সকাল-সন্ধ্যায় বাড়ীতে আগুনের কুন্ড জ্বালিয়ে হতদরিদ্র মানুষ শীত নিবারণের ব্যর্থ চেষ্টা করছে বলে জানান প্রতাবনগর গ্রামের আলহাজ. রেজায়ুর রহমান। কেহবা তেল চিটচিটে কাঁথামূড়িয়ে থর থর করে কাঁপছে বলে জানান সাড়িকালিনগরের আলহাজ. শরীফ উদ্দিন সরকার। শীতের তীব্রতায় হতদরিদ্র মানুষের দুর্ভোগের অন্তনেই। দরিদ্রÑঅতিদরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেনীর লোকের ভিড় বাড়ছে পুরাতন শীতবস্ত্রের দোকানে। দামও আরেক দফা বেড়ে গেছে। বাড়ছে হতদরিদ্র মানুষের দুঃখÑদুর্দশা-কষ্ট। শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে পাহাড়ি মানুষ। বেশী দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হতদরিদ্র খেটে খাওয়া দিনমজুর শ্রেনীর লোকজন।
শীতের দাপটে বেড়েছে কম্বলের চাহিদা। হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায় গরম কাপড়ের চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে মৌসুমী শীতবস্ত্র ব্যবসায়ী। তারা পুরাতন শীতবস্ত্র জ্যাকেট, কম্বল, ফুলহাতা গেঞ্জি, কোর্ট, সোয়েটার, ইত্যাদি কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
সপ্তাহকাল যাবৎ হাঁড়কাঁপানো শীতে দোকানগুলোয় ক্রেতা সংখ্যা বেড়েছে জানান. পুড়াতন গরম কাপড় ব্যবসায়ীরা। রিক্সা চালক সামেদ আলী পুরাতন জাম্পার কিনে বলেন- ভাই ১৭০ টাকায় ১ টা পুরাতন জাম্পার কিনলাম। এটা দিয়েই শীত পার করমু ইনশাআল্লাহ। শতবর্ষী ডা: আব্দুল বারী, বলেন, শীতে কাবু হয়ে বাড়িতে ঘন্টাখানেক খড়ের আগুনে শরীর গরম করে খেয়ে শুয়ে পড়ি। লেপ-তোষকও হিম ঠান্ডা। এবারের শীতে বেশী কাবু হয়ে পড়েছি।
জানতে চাইলে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: ফারুক আল মাসুদ বলেন, সাড়ে ৩ হাজার কম্বল সরকারী বরাদ্দ পেয়ে চেয়ারম্যানদের মধ্যে বন্টন করে দিয়েছি। তারা শীতার্থদের মাঝে বিতরণ করেছেন। আরো বরাদ্দ পাওয়া যাবে আশা করছি। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত বন্টন ও বিতরণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন