রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে মুড়িকাঁটা পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে দামও ভাল থাকায় পেঁয়াজ চাষিদের মুখে হাসি ফুঁটেছে। পেঁয়াজের এমন দাম থাকলে উপজেলার চাষিরা খরচ পুষিয়ে অনেক লাভবান হবেন বলে জানান তারা।
গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পদ্মা নদীর পার দিয়ে হাজার হাজার একর জমিতে মুড়ি কাঁটা পেঁয়াজের আবাদ করেছে চাষিরা। এসকল পেঁয়াজের উৎপাদনও বিগত বছরগুলোর চেয়ে অনেক ভাল হয়েছে। জমির উর্বরতা এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারণে সার-কীটনাশক বিহীন উৎপাদিত পেঁয়াজ বিঘা প্রতি ৬০ থেকে ৭৫ মণ হয়েছে।
গোয়ালন্দ কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করতে ৪০/৪৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। তবে বর্ষার পানি পেলে সেই জমিতে উর্বরতা থাকে। সুতরাং পদ্মা নদীর পার দিয়ে পেঁয়াজ আবাদ করতে ৩০/৩৫ হাজার টাকায় এক বিঘা জমিতে খরচ হয়। পেঁয়াজও অনেক ভাল হয়।
গোয়ালন্দের সফল কৃষক হুমায়ন আহম্মেদ বলেন, আমি ৫ একর জমিতে মুড়িকাঁটা পেঁয়াজ আবাদ করেছি। এর মধ্যে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে লাগানোর পর ৩ একর পেঁয়াজ ডুবে যায়। পরবর্তীতে সেই জায়গায়ও আবার পেঁয়াজ লাগাতে হয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার বিগত বছরগুলোর চেয়ে অনেক ভাল পেঁয়াজ হয়েছে। প্রথমে পেঁয়াজের দাম ৭/৮শ টাকা ছিল। এখন বাজারে ১২/১৩শ মণ পেঁয়াজ। এভাবে দাম থাকলে নষ্ট হয়ে যাওয়া পেঁয়াজের লোকসান উঠিয়ে লাভবান হবো। সুতরাং সরকারের কাছে আমাদের দাবি কৃষকের বাঁচাতে হলে অবশ্যই পেঁয়াজসহ কৃষি পণ্যের দাম বাড়াতে হবে।
আরেক পেঁয়াজ চাষি তৌফিক ও কৌশিক দুই ভাই বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে মুড়িকাঁটা পেঁয়াজ লাগিয়েছি। পেঁয়াজও বিগত বছরগুলোর চেয়ে অনেক ভাল হয়েছে। বিঘা প্রতি প্রায় ৮০ মণ হচ্ছে। আবার বাজারে পেঁয়াজের দাম ভাল। এভাবে দাম থাকলে আমাদের মত কৃষক আরোও উৎসাহ পাবে। কিন্ত বাজারে দাম কমে গেলে কৃষকের লোকসান গুনতে হবে। তখন কৃষক উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে।
এসময় আরেক পেঁয়াজ চাষি মালেক বেপারী বলেন, আবহাওয়া ভাল থাকায় মুড়ি কাঁটা পেঁয়াজ অনেক ভাল হয়েছে। বিঘা প্রতি ৪০/৪৫ হাজার ব্যয় হয়েছে। এক বিঘা জমিতে প্রায় ৭০/৮০ মণ পেঁয়াজ হয়েছে। বাজারে এমন দাম থাকলে কৃষক অনেক লাভবান হবে। সরকারের কাছে দাবি কৃষক বাঁচাতে কিছু দিনের জন্যে হলেও ভারতের পেঁয়াজের এলসি বন্ধ রাখতে হবে।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জামান জানান, জমির উর্বরতা ভাল এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার গোয়ালন্দ উপজেলায় মুড়ি কাঁটা পেঁয়ায় অনেক ভাল হয়েছে। এখন পর্যন্ত মুড়ি কাঁটা পেঁয়াজের দামও অনেক ভাল। এভাবে দাম থাকলে কৃষকের মুখে হাসি থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন