সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় বয়স্কভাতা প্রাপ্তরা চরম হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। ভাতা প্রাপ্তরা সমাজসেবা অফিস ও জনপ্রতিনিধিদের নিকট আসা-যাওয়া করতে করতে অনেক নারী-পুরুষের জুতো ছিড়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের কারো কপালে বয়স্ক ভাতা জুটছে না। অনেক সহায়-সম্বলহীন বয়স্করা ভাতা পাওয়ার আশায় তিন, চার হাজার টাকা খরচ করে একটি বই পেলেও সমাজ সেবা অফিস সেই বই তাদের নয় বলে অস্বীকার করছে। এতেই ভাতা প্রাপ্তদের জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। পুরানগাঁও গ্রামের ৭৩ বছর বয়সী বৃদ্ধা হালিমা বেগম জানান, ধার করে প্রায় ৪ হাজার টাকা খরচ করে ৩ বছর পর একটি বই পেয়েছি। কিন্ত সমাজসেবা অফিস এ বই দিয়ে ভাতা দিচ্ছেনা।
উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্র জানায়, গত দু’বছর ধরে নতুন বয়স্ক ভাতা বন্ধ রয়েছে এবং সমাজ সেবা অফিস ও প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ নতুন তালিকা করে যাচাই বাচাই পূর্বক পাঠানোর কথা রয়েছে। এই তালিকা ২০২৩ সালের ভাতা ভোগীদের জন্য চুড়ান্ত করে ভাতা দেয়া হবে। কিন্তু ইতোমধ্যে কয়েকটি ইউনিয়নে শতাধিক লোকদের নিকট সমাজসেবা অফিসের ভাতার বই বিতরণ করা হয়েছে। এসব বই নিয়ে ভোক্তভুগীরা সমাজ সেবা অফিসে গেলে তারা এ বই ভুয়া বলে ফিরিয়ে দেন। কিন্তু এ বইগুলোতে সমাজ সেবা অফিসের শীল ও নম্বর রয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সমাজসেবা অফিসের প্রায় শতাধিক বই জনপ্রতিনিধিরা পেলেন কোথায় এবং তারা কেন বিতরণ করছেন? এসব বইয়ে আবার ইস্যুর তারিখ, মোবাইল নম্বর ও সমাজসেবা কর্মকর্তার স্বাক্ষর নেই। এনিয়ে উপজেলার তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
ভাতার বই বিতরণকারী বিশ্বনাথ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামিম আহমদ ও রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার জামাল আহমদ জানান, সমাজ সেবা অফিস থেকে তারা এসব বই সংগ্রহ করেছেন। সমাজ সেবা অফিস এখন অস্বীকার কোন সুযোগ নেই।
এ ব্যাপারে সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোহম্মদ আশরাফুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, রামপাশা ইউনিয়ন থেকে প্রায় অর্ধশত ভুক্তভোগী বই নিয়ে সমাজসেবা অফিসে এসেছেন। কিন্তু যেহেতু তালিকা চুড়ান্ত হয়নি এবং আমরা এ বই বিতরণ করিনি। সেহেতু ভাতা প্রদানের কোন সুযোগ নেই। আমি বিষয়টি উপজেলা মাসিক সভায় অবহিত করেছি এবং বই কে দিল তা খতিয়ে দেখা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান জানান, গত ৩০ ডিসেম্বর সমাজসেবা কর্মকর্তা বিষয়টি আমাকে অবহিত করেছেন। অফিস থেকে কেউ অনুমোন ছাড়া বই বিতরণ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন