বৃষ্টির আগে ধূলা এবং বৃষ্টির পর কাদায় মাখামাখিতে পাকাসড়ক। সান্তাহারসহ পুরো আদমদীঘি উপজেলায় সড়ক-মহাসড়কে এমন অবস্থা চলছে দীর্ঘদিন থেকে। জনভোগান্তির এ ঘটনায় জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসন যেন নীরব দর্শক। অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে অবৈধ ট্রাক্টর ও মাটি কারবারিরা। এক পশলা বৃষ্টির পানিতে আঞ্চলিক মহাসড়ক ও গ্রামীণ সড়কে সৃষ্টি হয় কাদায় মাখামাখি অবস্থা। এমন অবস্থা চলছে আদমদীঘি উপজেলাজুড়ে। ফসলি জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন এবং খনন করা মাটি দিয়ে ফসলি জমি ভরাট ও ইট ভাঁটিতে পরিহবন করা অবৈধ ট্রাক্টরট্রলি থেকে পড়া মাটিতে পাকা সড়কগুলোর এমন বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পরেছেন সড়কে চলা বাস, ট্রাক, অটোরিকশা, ইজিবাইক, ভ্যান, মোটরসাইকেল চালক ও পথচারিরা। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। সরেজমিনে জানা গেছে, বছরের পর বছর ধরে অবৈধ ট্রাক্টরট্রলি মালিক-শ্রমিকরা সান্তাহার-বগুড়া এবং সান্তাহার-নাটোর আঞ্চলিক বাইপাস মহাসড়ক এবং উপজেলার শহর ও গ্রামীণ পাকাসড়ক দিয়ে অবাধে মাটি পরিবহন করে আসছে। ট্রাক্টরের ট্রলি থেকে পড়া মাটিতে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কজুড়ে জমাট বেধে যায় মাটির পুরু আবরণ। সড়কে জমা হওয়া মাটি বৃষ্টির আগে প্রচণ্ড ধূলা এবং বৃষ্টির পরে সড়কে কাদায় মাখামাখি অবস্থার সৃষ্টি করে। দেখে মনে হয় ইটের খোয়া, পাথর ও বিটুমিনের পরিবর্তে মাটি দিয়ে নির্মাণ করা সড়ক। সান্তাহার-বগুড়া, সান্তাহার-নাটোর বাইপাস রোড, ছাতিয়ানগ্রাম রোড, চাঁপাপুর রোড, কুন্দুগ্রাম রোডসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক ও শহর-গ্রামীণ পাকাসড়কগুলো কাদার সড়কে পরিণত হয়েছে। পথচারীরা গায়ে কাদা মাটি লাগার ভয়ে চলাচল করতে পারছে না। বিশেষ দুর্ভোগে পড়েছেন সাইকেল ও মোটরসাইকেল চালকেরা। তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। পিছলে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে ছোট-খাট দুর্ঘটনা। বৃষ্টির পূর্বে সড়কগুলো ছিল ধূলায় আচ্ছাদিত।
রাণীনগর থেকে সান্তাহারে আসা মোটরসাইকেল আরোহী আবু সাইদ বলেন, আমি প্রতিদিন মেয়েকে নিয়ে সান্তাহারের একটি প্রাইভেট সেন্টারে যাতায়াত করি। এই রাস্তয় অবধৈ ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলের কারণে কি যে কষ্ট হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করা দুরুহ। বৃষ্টির কারণে কাদাযুক্ত রাস্তায় মোটরসাইকেল নিয়ে কয়েকবার কাদায় পরে গেছি।
জাহিদুল নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী বলেন, ফসলি জমির উর্বর মাটি যাচ্ছে ইট ভাটায়। জমি কেটে পুকুর খনন করে মাটি, বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরির জন্য ভরাটের কাজে ট্রাক্টরে করে মাটি বহনের সময় রাস্তায় পড়ে জমে থাকে। সেই মাটি রোদের সময় প্রচন্ড ধূলা আর বৃষ্টি হলেই কাদায় পরিণত হয়।
এ প্রসঙ্গে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টুকটুক তালুকদার বলেন, অবৈধ যানের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। আগামীতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন