কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদ তীরের কৃষি জমি কেটে অবাধে চলছে রমরমা মাটির বাণিজ্য। উপজেলার রাজারভিটা এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি কাউকে তোয়াক্কা না করে নদী তীর থেকে অবৈধভাবে এসব মাটি কেটে বিক্রি করছে। ফলে নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ওই সব এলাকা নদীতে পরিনত হয়ে যাবে। এতে হুমকির মুখে পড়বে কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) সোলার সেচ ব্যবস্থা নির্মাণ প্রকল্পের সোলার প্যানেল পাম্প ও শত কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর রক্ষা প্রকল্প, রাজার ভিটা ফাজিল মাদরাসাসহ তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন স্থাপনা ও নদী তীরবর্তী জনপদ এবং আবাদী জমি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে কয়েক দফায় আবেদন করেও কোন প্রতিকার না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে রাজার ভিটা গ্রামের মানুষ।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার রাজার ভিটা এলাকায় পাউবো বাধের ভেতরে ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের সামনে ৩টি জায়গায় নদীর তীর কেটে সারিবদ্ধ ট্রলিতে মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি তুলতে গেলে ট্রাকটর (ট্রলি) নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এভাবে মাটি কাটা অব্যাহত থাকায় নদীর তীর সংলগ্ন এলাকা সমুহ নদীর পানির সমান হয়ে যাচ্ছে। এতে সামান্য পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে এসব জমি নদীর সাথে মিশে গোটা এলাকা নদীতে পরিনত হবে মর্মে এলাকা বাসীর অভিযোগ। এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, একটি পয়েন্টে আশাদুর রহমান, শামিউল আলম সপ্নীল, মিঠুমিয়া ও বিদ্যুৎ মিয়া তাদের ভট ভটি (ট্রলি) দিয়ে মাটি কেটে অবাধে বিক্রি করছে। ট্রলিতে মাটি কাটার ছবি উঠাতে দেখে ইউনুছ আলীসহ বেশ কয়েক জন এগিয়ে এসে বলেন, নদীর এই তীরটি আমাদের গ্রামের প্রটেকশন হিসাবে কাজ করছে এছাড়াও সরকারিভাবে দেয়া সোলার সেচ ব্যবহার করে আমরা বিভিন রকম ফসল উৎপাদন করছিলাম। এভাবে তীর থেকে মাটি কেটে নিলে নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারনসহ হুমকির মুখে পড়বে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)’র কুড়িগ্রাম জেলার সদর, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার চরাঞ্চলে পোর্টেবল সেচ বিতরণ সেচ ব্যবস্থা নির্মানের মাধ্যমে সেচ এলাকা সম্প্রসারণ কর্মসূচির আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৫ কিউসেক সোলার সেচ নির্মাণ প্যানেল, শত কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান ব্রহ্মপুত্রের ডান তীর রক্ষা প্রকল্প, বিভিন্ন স্থাপনাসহ নদী তীরবর্তী জনপদ ও সরকার ঘোষিত নৌবন্দর পুনঃস্থাপনের পরিকল্পনা। এলাকাবাসী কয়েক দফায় নদী, কৃষি জমি ও বিএডিসি চর উন্নয়ন সোলার প্যানেল পাম্প ভাঙন প্রতিরোধ কল্পে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও প্রতিকার না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে রাজার ভিটা গ্রামের মানুষ। থানাহাট ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. মাহফুজার রহমান জানান, এই এলাকায় সরকারিভাবে কৃষকদের কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য তিনটি সোলার সেচ প্রদান করা হয়েছিল। প্রায় কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত সোলার সেচ তিনটি রক্ষক আশাদুজ্জামান, ডালিম ও সপ্নীল। তারা নিজেরাই মাটির ব্যবসায় নিয়োজিত। এখান থেকে মাটি কাটার ফলে সোলার তিনটিসহ ডান তীর রক্ষা প্রকল্প হুমকির মুখে রয়েছে।
মাটি ব্যবসায়ী মো. বিদ্যুত মিয়া জানান, চরটি নদীতে ভেঙে যেতে পারে তাই আমাদের জমি থেকে একটি পয়েন্টের মাধ্যমে মাটি বিক্রি করছি। শামিউল আলম সপ্নীল বলেন, আমার গাড়ি ভাড়া নিয়ে মানুষ মাটি বিক্রি করে। আমার কোন পয়েন্ট নেই, বিদ্যুত চাচার পয়েন্ট আছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না খোঁজ নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন