শীতের সকালে মিষ্টি রোদের ছোঁয়া, আহ! কি আরাম। শীতের সকালে রোদে বসে গুড়-মুড়ি বা গরম পিঠা খাওয়ার দৃশ্য চিরন্তন। শীতের কুয়াশা ভেদ করে গ্রামের আকাশে সূর্য তাড়াতাড়ি উঁকি দিলেও রাজধানীর উঁচু উঁচু ইমারত ডিঙিয়ে সূর্যের দেখা একটু দেরিতেই পাওয়া যায়। তবে গতকাল সারাদিন রাজধানীর আকাশে সূর্যের দেখা মেলেনি। মেঘ আর ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল সূর্য। তাপমাত্রা খুব বেশি না কমলেও ছিল তীব্র শীতের অনুভূতি। মূলত কুয়াশা ও মেঘের কারণে রোদ উঠতে না পারায় কমে গেছে দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যবধান, একই সঙ্গে উত্তর দিক থেকে বয়ে যাওয়া ঠান্ডা বাতাসের কারণে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। এ অবস্থা আগামী ৩ থেকে ৪ দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলেও আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন।
ঢাকায় শীতের তীব্রতা বাড়ায় ফুটপাতে, বস্তিতে নিদারুণ কষ্টে দিন কাটছে নিম্নবিত্তদের। ভ্যান গাড়িতে করে সবজি বিক্রি করা সবুজ মিয়াবলেন, ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতের কারণে সকালে উঠে আড়তে যেতে কষ্ট হয়। আর খুব ভোরে আড়তে না যেতে পারলে ভাল মাল পাওয়া যায় না। তরকারি নিয়ে আসার পর এখানেও রাস্তার পাশে ঠান্ডার মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে বিক্রি করতে হয়। শীতের একই ধরনের কষ্টের কথা বলেন রিকশাচালক সাইফুল। তিনি বলেন, হাত-পা জমে যাচ্ছে। বেশিক্ষণ রিকশা চালাতে পারছি না। দু’একটা টিপ মারার পর পাতা, কাগজ কুড়িয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত কাটানোর চেষ্টা করি।
গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো ঢাকায়ও তীব্র শীত অনুভূত হয়েছে। সারাদিনই মেঘ-কুয়াশায় ঢাকা ছিল রাজধানীর আকাশ, সেই সাথে উত্তরের হিমেল হাওয়ার পরশে তীব্র শীত।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, এখন শৈত্যপ্রবাহ নেই। রাতের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে তাকে বলে শৈত্যপ্রবাহ। শৈত্যপ্রবাহ নেই, তারপরও কিন্তু তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। এর কারণটা হলো দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্যটা কমে এসেছে। আগে কোনো স্থানে হয়তো সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি, আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেখানে পার্থক্য ছিল ১৫ ডিগ্রি, এখন সেখানে হয়তো পার্থক্য কমে ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে গেছে। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি, আর সর্বোচ্চ ১৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি। পার্থক্য ৫ ডিগ্রির মতো, কিন্তু আগে সেখানে ১৫ ডিগ্রির মতো পার্থক্য ছিল। এজন্য বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। আগামী চার-পাঁচদিন শীতের এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আপাতত শৈত্যপ্রবাহ আসার সম্ভাবনা নেই। এ পরিস্থিতি কাটার পর পরবর্তী অবস্থাটা বুঝা যাবে।
’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন