বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

তীব্র শীত শ্রমিকের হাটে ভিড়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

 প্রকৃতিতে চলছে তীব্র শৈত্য প্রবাহ। শীতের সাথে ঠাণ্ড বাতাস থাকার কারণ জমে যাওয়ার অবস্থা। এই তীব্র শীতের মাঝেও খেটে খাওয়া মানুষদেরকে জিবীকার সন্ধ্যানে ঘর থেকে বের হতে হয়। তেমনি বের হতে হলো ষাটোর্ধ্ব আবদুর রহমানকে। ইচ্ছে না করলেও কাক ডাকা ভোরে বাঁশের ঝাঁকা আর কোদাল হাতে জীবিকার সন্ধ্যানে বের হলেন তিনি। গন্তব্য আশুলিয়ার শ্রম বিক্রির হাট।
দিন মজুরের কাজ পেতে গত ৫ বছর ধরেই প্রতিদিন সকাল হাটে হাজির হন তিনি। কাজের সন্ধানে সাত সকালে শ্রমিকের এমন হাটগুলো দিনমজুর বা কামলার হাট নামে পরিচিত।

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আশুলিয়ার জিরাবো, নরসিংহপুর, ছয়তলা, নবীনগর, ইপিজেড ও জিরানীসহ ৮টি স্থানে এভাবেই চলছে শ্রমের হাটে মানুষ বেচাকেনা। নিয়মিত হাট বসলেও এ হাটে নেই কোনো খাজনা বা হাট কমিটির চাঁদাবাজির ঝামেলা। আপন গতিতেই চলছে এই হাট, এদিক থেকে কিছুটা শান্তিতে থাকলেও কাজের নিশ্চয়তা ও জীবনের নিরাপত্তা একদম অনিশ্চিত।

গতকাল রোববার সকাল ৭টার দিকে আশুলিয়ার নবীনগরের জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকার মেইন গেটের বাইরে এমন চিত্র দেখা গেছে। মানুষের হাটের এই বেচাকেনা চলে ভোর ৬টা হতে সকাল ৯টা পর্যন্ত। এ সকল হাটে রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, রংমিস্ত্রি ও দিনমজুরসহ বিভিন্ন পেশার শ্রমজীবী মানুষের সরগরম হয়ে ওঠে। শ্রমের এই হাটে শ্রমিক কিনতে আসেন অনেক প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার ও মালিকরা। শ্রমের হাটে আসা অনেকে বিক্রি হলেও কিছু থেকে যান অবিক্রীত। দরদাম শেষে যারা বিক্রি হন তারা রওনা হন মালিকের গন্তব্যে।

সারা দিন ঘাম ঝরানো কঠোর পরিশ্রমে শেষে সন্ধ্যা বেলায় বাসায় ফেরে যান এই পরিশ্রমী মানুষগুলো। আবার পরে দিন ভোরবেলায় হাটে আসার পালা। এভাবেই চলছে শ্রমজীবী মানুষগুলোর জীবন। শীত উপেক্ষা করে হাটে আসা দিন মজুর আল-আমিন জানান, তিনি আগে গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। চাকরি না থাকয় বাধ্য হয়ে মানুষের হাটে নিজেকে বিক্রি করতে এসেছেন। তাও মাঝে মাঝে কাজ পেলেও বেশির ভাগ সময় তিনি নিজেকে বিক্রি করতে পারেন না। আজিজুল ইসলাম (৫৫) জানান, ১০ বছর ধরে তিনি এভাবেই কাজ করে যাচ্ছেন। সারা দিনের জন্য নিজেকে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করেন যেকোনো কাজের জন্য। কাজ পেলে মুখে হাসি ফুটে, না পেলে মলিন মুখে অপেক্ষা করতে হয় পরবর্তী দিনের জন্য। এদিকে হাটে নারী শ্রমিকও ছিল চোখে পড়ার মতো। তারা সারা দিন রাজমিস্ত্রির জোগানদাতা বা বাসাবাড়ির কাজ করার জন্য ৩০০-৪০০ টাকায় শ্রম বিক্রি করেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন