খেজুরের রস-শেরপুর ও গারো পাহাড়ের যশ। কথাটি বহু বছরের পুরনো। যা এককালে গুড়ের জন্য অন্য জেলায় নিয়ে যাওয়া হতো। ছিল অনেক খ্যাতি। সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরে খেজুরের চাষ হয় না। কিন্তুু এমনইতেই ছিল শেরপুর জেলার সর্বত্রতো বটেই বিশেষ করে গারো পাহাহাড় ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলাজুড়ে। তখন প্রতি বাড়ীতে ছিল খেজুর গাছ। বাড়ীর পাশে ছিল খেজুর বাগান। কিন্তুু সেই খেজুর গাছ এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। ফলে খেজুরের রসও এখানে দুর্লভ। তবে শেরপুর ও গারো পাহাড়ে এখনও কিছু বাড়ীর গাছে মিলছে খেজুরের টাটকা রস। এই রস পান করতে ভোর থেকে আগ্রহীরা ভিড় জমাচ্ছেন। শহরে কম দেখা গেলেও গ্রামে মানুষ ভিড় করে খেজুরের টাটকা রস পান করতে। রসের এমন বিকিকিনি চলায় পুরো এলাকা এখন ভোরবেলা সরব থাকে। জেলার গারো পাহাড় নালিতাবাড়ী উপজেলার মধুটিলা যাওয়ার পথে সড়কের দুধারে দেখা মেলে খেজুর গাছের সারি। পরিচর্যায় গাছগুলোতে এবার মিলছে টাটকা রস। রসের খবর ছড়িয়ে পড়েছে পুরো জেলাজুড়ে। ফলে টাটকা খেজুরের রস পান করতে ভোর থেকে পিপাসুরা ছুটে আসছেন।
স্থানীয়রা জানান, রস সংগ্রহ করার খবর পেয়ে শহরসহ দূর দূরান্তের মানুষ ভোর ৫টা থেকে ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে রস কিনছে। প্রতি লিটার ৬০-৬৫ টাকায়। এক গ্লাস রস বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। ভোরবেলা মোটরসাইকেলে ঝিনাইগাতী উপজেলা শহর থেকে ক’বন্ধু মিলে রস খেতে এসেছেন আশ্রাফুল আলম. সিদ্দিক, বিপ্লব,রুবেল, মিস্টার,মামুন ও শহিদুল্লাহ। তারা বলেন, অনেক দিন খেজুরের টাটকা রস পাইনা,খাইওনা। তারা বলেন, খেজুর রস পানও করেছি। কিন্তু গাছ থেকে নামিায়েই টাটকা রস পান করিনি। ফেসবুকে দেখলাম এখানে খেজুরের রস পাওয়া যায়। তাই বন্ধুদের নিয়ে পান করতে আসলাম। বিক্রেতা আক্কাছ আলী বলেন,নির্ভেজাল রসের চাহিদা বেশি দামও ভালোই। ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। রস বিশুদ্ধ রাখতে কলসীর মুখে জাল বেঁধে দেই। যাতে বাদুড়সহ পাখ-পাখালী রস পান করতে না পারে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি গাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ লিটার রস মেলে। দুই দিন পরপর রস সংগ্রহ করতে হয়। মাটির হাঁড়ি ও প্লাস্টিকের বোতলে রস সংগ্রহ করা হয়। প্রতি গ্লাস রস ১০ টাকায় বিক্রি হয়।
রস বিক্রেতা আক্কাছ আলী অরো বলেন, এখানে বেশ কিছু খেজুরগাছ রয়েছে। সবগুলো থেকে রস নামানো যায় না। তেমন লাভ না হলেও একটা সৌখিনতা। লোকজন আসে, রস পান করে,ভালোই লাগে। সে বলেন, রস সংগ্রহের পাত্র নেট দিয়ে ঢেকে রাতে পাহারার দেই।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও ) মো: ফারুক আল মাসুদ বলেন, শেরপুর গারো পাহাড়ি অঞ্চলের কৃষকদের খেজুর গাছ চাষের প্রবণতা কম। সাধারণত দেশের উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা বেশি খেজুরের চাষ করেন। পর্যাপ্ত রোদ, কম আদ্রতা, কম বৃষ্টিপাত ও উষ্ণ আবহাওয়ায় চাষের জন্য উপযোগী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন