তীব্র শীত, হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশায় সিরাজগঞ্জে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে সাথে সিরাজগঞ্জে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শাসকষ্ট রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। এক সপ্তাহে জেলা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ৪২০ জন ডায়রিয়া ও ৬৪ জন নিউমোনিয়ায় আক্রান্তরোগী ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে শিশুসহ নানা বয়সী রোগী। আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই শিশু ও বয়ষ্করা। সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে গত ১ সপ্তাহে এখানে ৩৬ জন নিউমোনিয়া এবং ৫০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে।
এদিকে, অতিরিক্ত রোগীর চাপ হওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। এতে শয্যা খালি না থাকায় অনেকে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে। অভিভাবকরা সচেতন হলে এই রোগ থেকে শিশুদের সহজে রক্ষা করা সম্ভব বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার গত সাত দিনে ৪২০ জন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জেলার ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে।
যাদের অধিকাংশের বয়স এক থেকে দেড় বছর। সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আল্পনা বেগম জানান, তার সন্তান ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর রায়গঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে দুইদিন চিকিৎসা শেষে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তার সন্তান অনেক ভালো রয়েছে। বেলকুচি উপজেলার চালা গ্রামের হামিদ শেখ জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিন দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছি। পাতলা পায়খানা কমে নাই। চিড়া আর স্যলাইনের পানি খাচ্ছি। শরীরে স্যালাইন দেয়া হয়েছে।
শহরের মিরপুর মহল্লার শহিনুর বেগম জানান, ২ দিন দিন আগে মেয়ের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। প্রথম দিন শ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হয়েছে মেয়ের। এখন অবস্থা কিছুটা ভালো।
সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা জীবন্নাহার জানান, এক সপ্তাহ ধরে ৫০ জন ডায়রিয়া এবং ৩৬ জন নিউমোনিয়া রোগী ভর্তি রয়েছে।
হাসপাতালের শিশু বিশেজ্ঞ ডা. মেহেদি হাসান বলেন, রাত ও দিনে তীব্র ঠান্ডার কারনে শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এছাড়া ধুলাবালিও এ রোগ বৃদ্ধির কারণ। শিশুদের এ থেকে রক্ষায় ঠান্ডা এবং গরম থেকে সতর্ক রাখতে হবে। তাছাড়া ধুলাবালির সংস্পর্শ থেকে রক্ষা করতে হবে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ফরিদুল ইসলাম জানান, তীব্র শীতের কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। ঠান্ডার কারণে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত এসব রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. রামপদ রায় বলেন, এক সপ্তাহে তীব্র শীতই মূলত ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার কারণ। তবে ঠান্ডাজনিত রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্যালাইন, অ্যান্টিবায়োটিকসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ পর্যাপ্ত মজুত আছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন