ফরিদপুর থেকে ভাঙ্গা ৩০ কিলোমিটার এবং ফরিদপুর থেকে দৌলতদিয়াঘাট ৩০ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রসস্ত করন জরুরী হয়ে পড়ছে। জেলা সদরের সাথে দুটি উপজেলার দুরত্ব উওর ও দক্ষিনের দুরত্ব ৬০ কিলোমিটার। এই ৬০ কিলোমিটার সড়কই অপ্রসস্ত। ফলে ফরিদপুর থেকে ভাঙ্গা এবং ফরিদপুর দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়।
গত এক। বছরে দুটি উপজেলার মহাসড়কের বিভিন্ন স্হানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন তিন শতাধিক এবং আহত হয়েছেন আরো তিনশত। কারন হিসেবে উঠে আসছে ৬০ কিলোমিটার সড়কই অপ্রস্তু।
পাশা-পাশি মহাসড়কে প্রায় দুই শতাধিক ফুটপাত হকারদের দখলে থাকা, দুর্বল ট্রাফিক অব্যবস্থাপনায় দুর্ঘটনার কারন গুলো উঠে আসছে।মহাসড়ক অপ্রস্তু থাকায় ফরিদপুর ও মাদারীপুর অঞ্চলের আওতাধীন মহাসড়কের পথচারীদের এসব দুর্ঘটনা ঘটে বিভিন্ন যানবাহনের। ফরিদপুর - ভাঙ্গা এবং ফরিদপুর - দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার সড়ক প্রস্তকরনের কাজ চলমান আছে বলে গণমাধ্যম কে নিশ্চিত করছেন,ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কানুন গো এস এম কুদ্দুস।
উল্লেখিত, অপ্রস্তু সড়কে রিজিওন এবং জেলা হাইওয়ে পুলিশ চালকদের বিভিন্ন অপরাধে ১৫ কোটি টাকা জরিমানা আদায় করেছে। ফরিদপুর - মাদারিপুর অঞ্চলে ১৮টি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। এগুলোর আওতায়, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব মহাসড়কে চালকদের পরিচালিত জানবাহনে ২২৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
মাদারীপুর হাইওয়ে রিজিয়নের তদন্তে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন প্রায় তিনশ জন এবং আহত হয়েছেন ৩১৬ জন।
মাদারীপুর (হাইওয়ে পুলিশ) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের নিহতের সংখ্যা ৩০৫ জন। জানুয়ারি থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব মহাসড়কে বেপরোয়া গতিতে ও ট্রাফিক নিয়ম না মেনে যানবাহন চালানোর অপরাধে হাইওয়ে জেলা পুলিশ ১৩ কোটি ১১ লাখ ৪৮ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে। এছাড়া সড়ক প্রসস্ত না থাকায় একই সময়ে বিভিন্ন দিক থেকে আসা গাড়ি বের হতে না পেরে মুখোমুখি সংঘর্ষেের অপরাধে যানবাহন থেকে ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে ফরিদপুর জেলা পুলিশের ট্রাফিক পুলিশ।
ফরিদপুর জেলা পুলিশের ট্রাফিক ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোঃ তুহিন লস্কর এবং ফরিদপুর জেলা মটর ওয়াকার্স শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি. নং. ১০৫৫) সাধারণ সম্পাদক গোলাম নাসির জানান, ফরিদপুরসহ দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের ২২টি জাতীয় মহাসড়কে সব ধরনের অবৈধ থ্রি-হুইলার (নছিমন, করিমন, ভটভটি, মাহিন্দ্র, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক ও চলছে এই দুটি মহাসড়ক দিয়ে । এর থেকে ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে। সড়কে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এসব অবৈধ যান মহাসড়কে অবাধে চলাচল করছে এখনও। এটাকেও সড়ক দুর্ঘটনার কারন বলে সচেতন মহল মনে করেন। যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পদ্মাসেতু চালু হওয়ার পর ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে উওরবঙ্গের আঞ্চলিক ও দক্ষিণবঙ্গের দূরপাল্লায় পরিবহন চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে। মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচলের কারণে প্রতিনিয়ত নানা দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়ক ও মহাসড়ক গুলোতে চলাচলকারী বিভিন্ন ধরনের যানবাহন গুলো দুর্ঘটনার আরেকটি কারণ হলো ত্রুটিপূর্ণ সড়কব্যবস্থা এবং সড়ক অপ্রস্ততা। হাইওয়ে পুলিশের নজরদারিতে বেপরোয়া মহাসড়কগুলোতে বাঁক থাকার কারণে সামনের দিক থেকে চলাচলকারী যানবাহন গুলোকে মামলা জরিমানা করা হয়। সম্মুখ থেকে আসা গাড়ি দেখতে না পেয়ে অনেক চালক দুর্ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন। অপ্রস্তু রাস্তার পাশে হাট-বাজার স্থাপন এবং ওভারব্রিজ না থাকা, মহাসড়কের মধ্যে ১৮টি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি ৩৮টি।তাদের নিয়মিত টহল না থাকাও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন স্হানীয়া।
প্রফেসর তারিক হোসেন খান ইনকিলাবকে বলেন, সড়ক তো আছেই তারপরও, চালকের অসাবধানতা- অদক্ষতা ও লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালক, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহ, পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালানো, সড়ক দুর্ঘটনা রোধেও পুলিশ চালকদের সচেতনতা,না থাকা, ওভারটেকিং, ট্রাফিক আইন সম্পর্কে অজ্ঞতা ও ট্রাফিক আইন
ভঙ্গ করা, রাস্তার মোড়ে প্রয়োজনীয় ডিভাইডার না থাকা, ওভারব্রিজের না থাকা, সড়ক ব্যবহারকারীদের মধ্যে অব্যবস্থাপনা, সড়কের ওপর অবৈধ হাটবাজার ও স্থাপনা, যত্রতত্র রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, অতিরিক্ত মাল ও যাত্রী বোঝাই প্রভৃতি কারণে এসব মহাসড়কে বেপরোয়া চলাচলকারী ফুটপাত, জেব্রা ক্রসিং, ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না থাকা অনেক সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে। ফরিদপুরেের আইনজীবী এডভোকেট নার্গিস বলেন,অপ্রস্তু সড়কে চালকারী যানবাহনগুলোর চালকরা অনেক সময় ক্লান্ত-থাকেন।তার অজান্তেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে । তাই এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। কোনোভাবেই অসুস্থ “ওভারটেকিং প্রবণতা। বা ক্লান্ত পরিশ্রান্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো যাবে না। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ সাধারণত রাস্তায় ধীরগতির গাড়িগুলোকে ওভারটেকিংয়ের প্রয়োজন পড়ে। এসময় হর্ন বাজিয়ে সামনের গাড়িকে সংকেত দিতে হয়। কিন্তু অনেক সময় সংকেত না দিয়ে একজন আরেকজনকে ওভারটেক করার চেষ্টা করে যার ফলে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ফরিদপুর ট্রাফিক ইনচার্জ (প্রশাসন) তুহিন লস্কর বলেন, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফরিদপুরের আওতাধীন সড়ক-মহাসড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনে ৫ হাজার ৫৯৩টি মামলা করা জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়া প্রায় ১০ হাজার রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেল জব্দ ও রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। টাকা । এতে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। হাইওয়ে পুলিশের মাদারীপুর রিজিয়নের কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম বলেন, মাদারীপুর রিজিয়নের আওতাধীন ৯৮৭ কিলোমিটার চলাচলকারী সাধারণ মানুষের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়কগুলোয় পুলিশ সদস্য নিয়ম অনুযায়ী সব ধরনের কাজ করছেন। তবে উল্লেখিত, দুটি উপজেলার প্রায় ৬০ কিলোমিটার সড়কও প্রসস্ত করনও খুবই জরুরী হয়ে পড়ছে। অন্যথায় মৃত্যুর মিছিল বাড়বে কমবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন