পার্বতীপুরের অদম্য মেধাবী ল্যাম্ব হাসপাতালের স্পেশাল এ্যসাইনমেন্ট কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান ৫২ বছর বয়সে সন্ধ্যাকালীন এমবিএ পরীক্ষায় হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় থেকে ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট হয়ে এলাকার মানুষের কাছে সুনাম কুড়িয়েছেন এবং অতি বয়সী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা লাভে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এই প্রতিভাবান বয়ষ্ক শিক্ষার্থীর কাকতালীয়ভাবে দেখা মেলে গত শনিবার রাতে পার্বতীপুর পৌর অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এসএসসি ১৯৮৬-৮৭ ব্যাচের বন্ধুমিলন মেলায়। বন্ধুরা বন্ধুমেলার পক্ষ থেকে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী শিক্ষার্থী বন্ধুকে বিশেষ সম্মাননা ও ক্রেস্ট প্রদান করে।
জানা যায়, দিনাজপুরের পার্বতীপুরের রাজবাসর গ্রামের আলহাজ এলাহী বকসের ছেলে হাবিবুর রহমান স্থানীয় জ্ঞানাঙ্কুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৬ সালে এসএসসি, ১৯৮৮ সালে পার্বতীপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর ১৯৯২ সালে ল্যাম্ব হাসপাতালের সেবামূলক কার্যক্রমে মাঠকর্মী হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে স্পেশাল এ্যসাইনমেন্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। উল্লেখ্য, অদম্য ইচ্ছার কাছে কোন বাধাই কাউকে দমাতে পারেনা সেক্ষেত্রে হাবিবুর রহমান একটি মডেল। তিনি চাকরির পাশাপাশি ১৯৯৩ সালে ডিগ্রি পাশ করেন। এছাড়াও ২০০৭ সালে এশিয়ার ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে মাস্টার্স অব সোস্যাল সাইন্স এমএসএস (অর্থনীতি) বিভাগে ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট হন। এরপরেও তিনি থেমে থাকেন নি। ২০২২ সালে একই চাকরির পাশাপাশি প্রায় ১৫ বছর পর ৫২ বছর বয়সে গিয়ে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ১১তম সান্ধ্যকালীন ব্যাচে এমবিএ পরীক্ষায় ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট হন। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর জানান, বয়স যে কোন ব্যাপার নয় শিক্ষার কাছে তা প্রমাণ করেছে শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান। সে একজন প্রতিভাবান ব্যক্তি। যিনি সবসময় নতুন কিছু শিখতে পছন্দ করতেন। বিশ^বিদ্যালয়ের এসোসিয়েট প্রফেসর ড. মো. শামীম হোসাইন জানান, অনেকেই মনে করেন একটি নির্দিষ্ট বয়সের পরে হয়তোবা আর কোন শিক্ষা লাভ করা যায় না। কিন্তু না, হাবিবুর রহমান প্রমাণ করেছেন, শিক্ষার কোনো বয়স নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন