পাঠ্যপুস্তকের কোন বিষয়ে দ্বিমত, অস্বস্তি কিংবা আপত্তি থাকলে সেগুলো সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের অধীনে প্রাথমিকের ১ম শ্রেণী ও মাধ্যমিকের ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণীর জন্য পাঠানো বইগুলো পরীক্ষামূলক ছিল। আমরা মাধ্যমিকের ৩৩ হাজার প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষামূলক সংস্করণ বইগুলো দিয়েছি। আমরা প্রতিনিয়ত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষাবিদদের কাছ থেকে ফিডব্যাক নিব এবং সে অনুযায়ী বছরব্যাপী আমরা এগুলোকে পরিমার্জন পরিশীলন করব। কাজেই এবার ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ১ম শ্রেণিতে যে বইগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে উঠেছে সেগুলোতে ভুল থাকতে পারে। বিষয়বস্তুর সাথে কারো দ্বিমত, অস্বস্তি কিংবা আপত্তি থাকতে পারে, সেগুলো আমাদের জানাবেন। আগামী বছরগুলোতে সেগুলো সংশোধন করবো।
গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে ছাত্রলীগ আয়োজিত শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাউপকরণ বিতরণ ও একুশ শতকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্রসমাজের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
নতুন শিক্ষাক্রমের আওতায় কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন আনাসহ মাদরাসা শিক্ষার আধুনিকায়নের জন্য কাজ করার কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, আমাদের কারিগরি শিক্ষাকে অনেক বেশি গুরুত্ব ও সম্মান দিতে হবে। এজন্য কারিগরি শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার পথে যে বাধা আমরা তা নিরসনে কাজ করছি। আমরা মাদরাসা শিক্ষার আধুনিকায়নের জন্য কাজ করছি।
দীপু মনি বলেন, মাদরাসা শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় যে বিষয়গুলো আছে, সেসব যেমন ভালোভাবে শিখবে তেমনি নতুন প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে আধুনিক শিক্ষাও নিবে। মাদরাসা শিক্ষার্থীরা মমূলধারার শিক্ষার্থীদের থেকে দু›শো নাম্বার বেশিতে পরীক্ষা দেয়। নতুন শিক্ষাক্রমে তা সমানে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, তাদের ভাষা শিক্ষার ব্যাপারে আমরা অনেক জোর দিচ্ছি। আগে তারা কেবল কোরআনের ভাষাটাই শিখতো কিন্তু এখন তারা আরবি সাহিত্যের ভাষাও শিখছে। দেশে বিদেশে স্টাবলিশ হওয়ার জন্য তাদেরকে আরবি ভাষা, ইংরেজি ভাষা শেখানোর পাশাপাশি প্রযুক্তির সব সুবিধা নেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, আমরা একটা সময়োপযোগি শিক্ষাক্রম প্রণয়ণ করেছি। কারণ এখন আমাদের সামনে ২০৩০ সালের যে টেকশই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যার ৪নং লক্ষ্য শিক্ষা হচ্ছে সবকিছুর কেন্দ্রে। কাজেই আমরা যদি একটি জীবনব্যাপী, সাম্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাব্যাবস্থা প্রণয়ন করতে পারি তাহলে ১৭ টি লক্ষ্যের বাকি ১৬টি লক্ষ্য অর্জন অনেক সহজ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আমরা প্রথম তিনটি শিল্পবিপ্লবের অংশীদার হতে পারিনি কিন্তু আমাদের এখন সুযোগ আছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের অংশ হওয়া ও সফলতা অর্জনের। এবং সেজন্য একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদেরকে একটি যুগোপযোগি শিক্ষাব্যাবস্থার প্রণয়ন করতে হবে। আমাদের যে মুখস্ত বিদ্যা ও পরীক্ষার ভীতিদায়ক, শুধুমাত্র সনদ ভিত্তিক ও জ্ঞাননির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা ছিল তা থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের দক্ষতার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের আশপাশের দেশের মতো সফট স্কিল ভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের করতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের শিক্ষায় এই পরিবর্তনটা আনতে হবে।
আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন