দৈনিক ইনকিলাবে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ‘এশিয়াটিক ল্যাবরেটরীজ লি:’র প্রাইমারি পাবলিক অফার (আইপিও) স্থগিত করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গতকাল সোমবার সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম ইনকিলাবকে এ তথ্য জানান। তিনি আরো জানান, পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখিত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এশিয়াটিক ল্যাবরেটরীজের স্থায়ী সম্পদের মূল্য ও সম্পদের মালিকানা নিয়ে জটিলতা রয়েছে মর্মে অভিযোগ এসেছে কমিশনে। যার সত্যতা যাচাই করার জন্য কোম্পানিটির আইপিও আবেদন স্থগিত করেছে বিএসইসি। অনির্দিষ্টকালের জন্য এ স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে। এশিয়াটিক ল্যাবের স্থায়ী সম্পদের মূল্য নিয়েও কমিশনে বিভিন্নভাবে অভিযোগ এসেছে। সংবাদমাধ্যমে এই কোম্পানি নিয়ে প্রতিবেদন হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান কমিশনের এই মুখপাত্র। তবে তিনি তদন্ত কমিটির সদস্যদের নাম জানাতে পারেননি।
উল্লেখ্য, গত ১২ জানুয়ারি ‘শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ ! অন্যের সম্পত্তি দেখিয়ে আইপিও অনুমোদন’ শীর্ষক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক ইনকিলাব। প্রতিবেদন প্রকাশের পর স্টক মার্কেটে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরীজ লিমিটেড অন্যের সম্পত্তি নিজের দাবি করে আইপিও অনুমোদন নিয়েছে। রাজধানীর তেজগাঁও সাব রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রি হওয়া ৩৩৫২ নম্বর দলিলে উল্লেখিত সম্পত্তির মালিক ১১/৮/সি, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট নিবাসী এ কে এম খোরশেদ আলম। তার এই সম্পত্তির ওপর ৮তলা ভবনও। এটি বন্ধক রেখে অগ্রণী ব্যাংক আমিনকোর্ট শাখা থেকে তিনি ঋণ নিয়েছেন। এই দলিলের সম্পত্তিই নিজের দাবি করে আইপিও অনুমোদন নেয় এশিয়াটিক ল্যাবরেটরীজ লিমিটেড। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির প্রসপেক্টাসে উল্লেখিত অন্যান্য সম্পত্তির মূল্যও দেখানো হয় অন্তত ১৪ গুণ বেশি। গতকাল ১৬ জানুয়ারি ছিল আইপিও আবেদন গ্রহণের তারিখ। দেশের পুঁজিবাজার থেকে ৯৫ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা ছিল প্রতিষ্ঠানটির। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরীজ লি:।
গত ৩১ আগস্ট বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৮৩৭তম সভায় অনুমোদন লাভ করে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লি:। উত্তোলিত অর্থ ব্যবসায় সম্প্রসারণ, উৎপাদন, ভবন নির্মাণ ও ব্যাংকঋণ প্ররিশোধ এবং ইস্যু ব্যবস্থাপনা খরচ খাতে ব্যয় করবে।
কোম্পানিটি ২০২১ সালের ৩০ জুন আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী পুনর্মূল্যায়নসহ শেয়ার প্রতি নীট সম্পদ মূল্য দেখায় ৫৬ দশমিক ৬১ টাকা, পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া শেয়ার প্রতি নীট সম্পদ মূল্য দেখিয়েছে ৩৫ দশমিক ৪৮ টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন