শেয়ারবাজারের পাঁচটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা চার জন শেয়ারহোল্ডারের ধারণ করা শেয়ারের বর্তমান অবস্থা জানতে চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিগুলোর শেয়ারে ওই চার ব্যক্তি ১৯৯৭ সালে বিনিয়োগ করেছিল। সে হিসেবে প্রায় ২৫ বছর আগে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের তথ্য চেয়েছে কমিশন।
স¤প্রতি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে এ তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। যেসব কোম্পানির তথ্য চাওয়া হয়েছে সেগুলো হলো- মার্ক বাংলাদেশ শিল্প অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, বাংলাদেশ ডাইং অ্যান্ড ফিনিশিং ইন্ডাস্ট্রিজ, প্যারাগন লেদার অ্যান্ড ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ও তৃপ্তি ইন্ডাস্ট্রিজ।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ডিএসই’র মূল মার্কেটে রয়েছে। বাংলাদেশ ডাইং অ্যান্ড ফিনিশিং ইন্ডাস্ট্রিজ উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি) স্থানান্তরের অপেক্ষায় আছে। মার্ক বাংলাদেশ শিল্প অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্যারাগন লেদার অ্যান্ড ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ তালিকাচ্যুতির অপেক্ষায় রয়েছে। আর তৃপ্তি ইন্ডাস্ট্রিজ ইতোপূর্বে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে একীভ‚ত হয়েছে।
বিএসইসি’র চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, শেয়ারহোল্ডার কে এম আমিনুর রহমানের মার্ক বাংলাদেশ শিল্প অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ১০০টি শেয়ার, বাংলাদেশ ডাইং অ্যান্ড ফিনিশিং ইন্ডাস্ট্রিজের ২০টি শেয়ার ও প্যারাগন লেদার অ্যান্ড ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজের ৫০ শেয়ার রয়েছে। একইসঙ্গে শেয়ারহোল্ডার এস এ জব্বারের পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের ১০০টি শেয়ার ও তৃপ্তি ইন্ডাস্ট্রিজের ৪টি শেয়ার রয়েছে। আর শেয়ারহোল্ডার ফারজানা আক্তারের বাংলাদেশ ডাইং অ্যান্ড ফিনিশিং ইন্ডাস্ট্রিজের ১০০টি শেয়ার রয়েছে। এছাড়া শেয়ারহোল্ডার শামীমা জিয়াউদ্দিনের মার্ক বাংলাদেশ শিল্প অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ৫টি শেয়ার রয়েছে। বর্ণিত কোম্পানি ও শেয়ারসমূহের বর্তমান অবস্থা আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
তথ্য মতে, ওই ৫টি কোম্পানির মধ্যে বর্তমানে পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ডিএসই’র ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে লেনদেন করছে। কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৯০ সালে। পরবর্তীতে আর্থিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ায় কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান করা বন্ধ করে দেয়। ফলে দীর্ঘ দিন লভ্যাংশ না দেয়ায় কোম্পানিটিকে ডিএসই’র ওটিসি মার্কেটে পাঠানো হয়। পরবর্তী আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কোম্পানিটিকে গত বছর পুনরায় ডিএসই’র মূল মার্কেটে ফিরিয়ে আনা হয়। বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থানরত কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১০ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৬০০টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৪৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৫৫ দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের শেয়ার ২৩০ দশমিক ৩০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে।
এদিকে স¤প্রতি দেশের উভয় শেয়ারবাজারের ওটিসি মার্কেট বিলুপ্তি ঘোষণা দিয়েছে বিএসইসি। আর ওই কোম্পানিগুলোকে আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনা করে অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (এটিবি), এসএমই প্ল্যাটফর্ম ও তালিকাচ্যুত করা হবে। সেদিক বিবেচনায় বাংলাদেশ ডাইং অ্যান্ড ফিনিশিং ইন্ডাস্ট্রিজকে অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৯৪ সালে। পরবর্তীতে আর্থিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ায় কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান করা বন্ধ করে দেয়। ফলে দীর্ঘ দিন লভ্যাংশ না দেয়ায় কোম্পানিটিকে ডিএসই’র ওটিসি মার্কেটে পাঠানো হয়। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ ১০০০ কোটি টাকা। কোম্পানিটির ফেসভ্যালু ১০০ টাকা। এ কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১২ লাখ। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৪০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪১ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার ২২ দশমিক ৩০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।
এছাড়া মার্ক বাংলাদেশ শিল্প অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্যারাগন লেদার অ্যান্ড ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ সিএসই’র ওটিসি মার্কেটে তালিকাভুক্ত ছিল। তবে কোম্পানি দুইটিকে তালিকাচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। আর তৃপ্তি ইন্ডাস্ট্রিজ ২০০৮ সালে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে একীভ‚ত হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন