পটিয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধ প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। খুন, চুরি ও ছিনতাই সন্ত্রাস, জায়গা দখল-বেদখলের ঘটনাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড ধারাবাহিক স্টাইলে চলছে। সেই সাথে ইয়াবা ব্যবসায়ীর তৎপরতাও বেড়েছে। ২০২২ সালের এপ্রিল মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ৮ মাসে ১১টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। দোকান, মসজিদ, মন্দিরে চুরিসহ খামারিদের কোটি টাকা মূলের দেড় শতাধিক গরু ডাকাতি হয়েছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২৫ জানুয়ারি দুর্বৃত্তের হাতে খুন হয়েছে আলী আহমদ (৫৫) নামের এক রিক্সা চালক তাকে দুর্বৃত্তরা গলা কেটে হত্যা করে শ্রীমাই খালের পাড়ে ফেলে দেয়। এর আগে ১৩ জানুয়ারি রাতে পটিয়া পৌরসদরে ৯নং ওয়ার্ডে সন্ত্রাসী ঘটনায় জিয়াউল হক জিয়া নামের এক ছাত্রলীগ নেতা আহত হলে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিলে সেখানে আমান উল−াহ শিমুল নামের জিয়ার বন্ধুকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে গুরুত্বর আহত করে। একই রাতে উপজেলার ধলঘাটস্থ ৪শত বছরের প্রাচীন ‘বুড়াকালী’ মন্দির থেকে কালী দেবীর গলায় পড়া প্রায় ৩০ লাখ মূল্যের ৪০ ভরি স্বর্ণ চোরের দল চুরি করে নিয়ে যায়। ২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর পটিয়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের ফুইল্যাতলী এলাকায় হাইদগাঁও গ্রামের হাসান নামের এক কোম্পানী কর্মচারীকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাইকারী দল ২৫ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ২০২২ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে টেক্সি ছিনতাইকারী টেক্সি চালক নুরুল আলমকে খুন করে টেক্সি নিয়ে যায়। ২২ এপ্রিল রমজানের শবে কদর রাতে কাশিয়াইশ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের ভাই সোহেলকে সন্ত্রাসীরা খুন করে। ১৭ এপ্রিল গৈড়লা কালাবাবার আশ্রম এলাকায় স্বামীর হাতে নববধু প্রিয়াংকা মলি−ক খুন হয়। ২৪ এপ্রিল পটিয়া আমজুর হাট এবাদত খানা এলাকায় ২ শীর্ষ যুবলীগ নেতাকে সন্ত্রাসীরা গুলিবিদ্ধ করে। ৩০ এপ্রিল হাইদগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি জিতেন কান্তি গুহকে সন্ত্রাসীরা গাছে বেঁেধ নির্যাতন চালায়। ২৬ মে পটিয়া পাহাড়ি এলাকায় সন্ত্রাসীরা ১৪জন শ্রমিককে অপহরণ করে। ১৬ আগষ্ট পটিয়া সদরে ৫নং ওয়ার্ড জাপার কেন্দ্রিয় নেতা শামসুল আলম মাষ্টারের স্ত্রী জেসমিন আকতারকে তার পুত্র মাইনুল গুলি করে হত্যা করে। ৬ সেপ্টেম্বর পটিয়া গৈড়লায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী বিমান ধরকে রাতে ছিনতাইকারীরা কুপিয়ে খুন করে। ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া গিরিচৌধুরী বাজার এলাকায় উজ্জ্বল সেন নামের এক যুবককে খুন করে। ২০ সেপ্টেম্বর পটিয়া জিরি গ্রামে পরকীয়া জেরে ইদ্রিস নামের এক যুবক খুন হয়। ২ অক্টোবর কোলাগাঁও গ্রামের ডাকাতের হাতে এক দোকান কর্মচারী খুন হয়। ৬ অক্টোবর পটিয়া খরনা ইউনিয়নের ফকিরপাড়া পাহাড়ি এলাকায় আনু মিয়া নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া পটিয়া বাইপাস এলাকায় ও খাজা টাওয়ারের বটতল এলাকায় ইয়াবা ব্যবসায়ী ও ছিনতাইকারীদের তৎপরতায় এলাকার লোকজন অতিষ্ট। এ স্থানে প্রায় সময় মোবাইল ছিনতাই, রিক্সা ছিনতাই, যানবাহন আটকিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। পটিয়া সার্কেলে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দায়িত্বে থাকলেও আইন শৃৃঙ্খলার ব্যাপারে তেমন তদারকি নেই। অপরাধ মূলক কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাওয়ার ব্যাপারে অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে সমস্ত ঘটনা হচ্ছে সেগুলোর ব্যাপারে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। অনেক অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন