সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ও দশঘর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী চাউলধনী হাওরে দুটি হত্যাকান্ডের পর আরো এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে হাওর এলাকায় ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গত ৩০ জানুয়ারি বিকেলে চাউলধনী হাওর থেকে আসক আলী (৬০) নামের এক বৃদ্ধের লাশও উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের বাড়ি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের জগদিশপুর গ্রামে। নিহতের পুত্র বাদি হয়ে বিশ্বনাথ থানায় গত ৩-২-২৩ তারিখে হত্যা মামলা করে।
চাউলধনী হাওর জলমহাল গ্রæপটি বিশ্বনাথ দশঘর মৎসজিবী সমবায় সমিতি লীগ গ্রহণ করলেও সাবলীজ গ্রহীতা একদল সন্ত্রাসী বাহিনী হাওরে কৃষকদের খাল-বিল দখল করে তান্ডব চালাচ্ছে। ইতোপূর্বে কৃষক ছরকুম আলী দয়াল ও স্কুল ছাত্র সুমেলকে দিবালোকে গুলি করে হত্যা করেছে এ বাহিনী। এ দুটি হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি সাইফুল জেল হাজতে থাকলেও বাকি আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে বহিরাগত কিছু লোকের সহায়তায় পুণরায় হাওর দখল শুরু করেছে।
গত ৩ ফেব্রæয়ারি দশপাইকা, চানপুর মীরগাঁও গ্রামের পাশে মৌখালি নামক বিলে একদল লোক সেচ মেশিন দিয়ে পানি সেচ দিয়ে মাছ ধরেছে। লীজের কাগজে দেখা গেছে সরকারিভাবে মৌখালি বিল লীজ দেয়া হয়নি। এ বিলে মসজিদ ও কয়েকটি গ্রামের কৃষকদের ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর, খাল-বিল ও জলাশয় রয়েছে। হাওর রক্ষা ও কৃষক বাঁচাতে বিশ্বনাথ উপজেলা আ.লীগের অন্যতম সদস্য আবুল কালাম যিনি সর্বোচ্চ ত্যাগ করে আন্দোলন শুরু করেছিলেন তাঁকে অনেকগুলো সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। বেশ কিছুদিন পূর্বে কামার গাঁও গ্রামের মৎমজীবী সমিতির সদস্য জুনাব আলী বাদি হয়ে বিশ্বনাথ থানায় একটি সাজানো মিথ্যা মামলা দায়ের করে, (মামলা নং-৬, তারিখ ০৯-১০-২২ইং)। এ মামলায় আবুল কালাম আদালতে হাজিরা দিতে গেলে শুনানী শেষে আদালত জামিন না মঞ্জুর করেন। বর্তমানে তিনি জেল হাজতে রয়েছেন। আবুল কালামের আইনজীবী এএসএম গফুর জানিয়েছেন, ৭দিন পূর্ণ হওয়ার পর পুণরায় জামিনের আবেদর করবেন।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই মামুন জানান, গত ৩১ জানুয়ারি এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। দশঘর মৎসজীবী সমবায় সমিতি হাওর লীজ নিয়ে লীজের শর্ত ভঙ্গ করে সাবলীজ দেয়ায় হাওরে ৩টি হত্যকান্ড ঘটেছে।
এদিকে কৃষকদের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত জলাশয়ের সাথে কৃষকদের ভুমি চিহ্নিত করার জন্য আবুল কালাম বাদি হয়ে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেছেন। আদালত রিট মঞ্জুর করে সীমানা নির্ধারণের নির্দেশ দিলেও স্থানীয় প্রশাসনের কোন টনক নড়ছেনা। ফলে হাওর এলাকায় একের পর এক হত্যাকান্ড ঘটছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ইনকিলাবকে বলেন, হাওর জরিপের জন্য কমিটি করে দেয়া হয়েছে। সহকারি কমিশনার (ভুমি) আছমা জাহান বলেন, জরিপের কাজ চলছে। এক প্রশ্নের জবাবে আছমা জাহান বলেন, ডিসি অফিস থেকে সীমানা নির্ধরণের কোন সময় সীমা দেয়া হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন