রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

খোলা ময়দানে নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সার

উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছেন ডিলাররা

| প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আদমদীঘি (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা : বগুড়ার সান্তাহার বাফার সার গুদামের ইনচার্জকে টাকা দিলেই মিলে ভালমানের সার। টাকা না দিলে রোদে পোড়া ও বৃষ্টি ভেজা জমাটবাঁধা পাথরের মত নিম্নমানের সার নিতে হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তম বিসিআইসির সান্তাহার বাফার সার গুদাম থেকে নওগাঁ জেলার রানীনগর, বদলগাছি, মহাদেবপুর, সাপাহার, নিয়ামতপুর, পোরশা, মান্দা, পতœীতলা, ধামইরহাট ও আত্রাই উপজেলার বিসিআইসির সার ডিলারেরা সার উত্তোলন করে। এগুদামে চাহিদার তুলনায় হাজার হাজার টন বেশি সার মজুদ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গুদামে জায়গা না থাকায় কোটি কোটি টাকা মূল্যের হাজার হাজার বস্তা সার খোলা আকাশের নিচে মজুদ রাখা হয়েছে। ফলে একদিকে রোদ বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে এসব সার, অন্যদিকে খোলা আকাশের নিচে মজুদ সার ধোয়া পানিতে পুরে নষ্ট হচ্ছে বাফার সার গুদামের আশপাশ এলাকার ক্ষেত, মরে যাচ্ছে পুকুর, জলাশয়ের মাছ ও গাছপালা এবং নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। মজুদ সারের গন্ধে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। এছাড়াও এসব সার প্রয়োগ করে কৃষকরা কোন ফল পাচ্ছে না। স্থানীয় কৃষক এবং বিসিআইসির অনুমোদিত সার ডিলারদের অভিযোগে জানা যায় চাহিদার তুলনায় মজুদ করা হয়েছে বেশি। গুদামে ধারণ ক্ষমতা না থাকায় খোলা আকাশের নিচে মজুদ রাখা হয়েছে হাজার হাজার টন সার। দীর্ঘদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে মজুদ করে রাখা সারগুলো রোদ বৃষ্টির পানিতে ভিজে জমাট বেঁধে ওজনে কম ও পাথরের মত হয়ে নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের হাজার হাজার টন সার। খোলা আকাশের নিচে রাখা রোদ বৃষ্টিতে ভেজা সার কৃষকরা জমিতে প্রয়োগ করে ফল না পাওয়ায় এসব নিম্নমানের সার ক্রয় করছে না কৃষকরা। এ কারণে এসব সার উত্তোলন করে ডিলারদের লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। এই অনিয়মের কারণে ইতোমধ্যে পতœীতলা ও ধামইরহাটের ডিলার সান্তাহার বাফার গুদাম থেকে সার উত্তোলন বন্ধ করে জয়পুরহাট এবং আত্রাই এর ডিলার নাটোর বাফার গুদাম থেকে সার উত্তোলন করছে। ফলে সান্তাহার বাফার গুদামের চাহিদা অনেকটা কমে গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সার ডিলার জানান চাহিদার তুলনায় অহেতুক মজুদ করে খোলা আকাশের নিচে রাখায় সরকারের কোটি কোটি টাকার সার নষ্ট হচ্ছে, সেই সাথে গুদামের বাহিরে মজুদ রাখা সার কৃষকরা প্রয়োগ করে ফলন না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাই তারা এই সব সার ক্রয় না করায় আমরা লোকসানে পড়ছি। তারা আরোও জানান, গুদাম থেকে ভালো সার নিলে ট্রাক প্রতি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। তা না দিলে বাহিরের মজুদ সার নিতে বাধ্য করে। এ ব্যাপারে নওগাঁর সার ডিলারদের সভাপতির মো. রফিক এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা গুদামের বাহিরে রাখা সার নিব না, এসব সারের মান নিয়ে কৃষকরা ঝামেলা করছে, তারা এই সারগুলো ক্রয় না করার কারণে আমাদের লোকসানে পড়তে হচ্ছে। সান্তাহার শহর পার্শ্ববর্তী সান্দিড়া গ্রামের কৃষক বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলী, মুক্তিযোদ্ধা আঙ্গুঁর ও গোলাম রাব্বানী দুলাল জানান খোলা আকাশের নিচে মজুদ সারের ধোওয়ানীর পানি প্রবেশ করে বাফার গুদামের আশপাশ এলাকার ক্ষেত পুড়ে গেছে, পুকুরের মাছ এবং গাছপালা মরে যাচ্ছে ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে বাফার ইনচার্জ আব্দুল মালেকের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন