নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় বোরো চাষের ধুম পড়েছে। মাঠে মাঠে কৃষকেরা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন। মাঠের পর মাঠজুড়ে কোথাও কৃষকেরা বীজতলা থেকে চারা তুলছেন, কোথাও চলছে জমি তৈরি কাজ, কোথাও সেচযন্ত্রের সাহায্যে জমিতে সেচের পানি তোলা হচ্ছে, আবার কোনো কোনো এলাকায় চলছে চারা রোপনের কাজ। কৃষক পরিবারের সদস্যদের একটুও ফুরসৎ নেই।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, বাঙালিপুর, বোতলাগাড়ি ও খাতামধুপুর ইউনিয়নে এবং পৌর এলাকার বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরে হয়েছে সাত হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে।
সরেজমিনে গতকাল উপজেলার বাঙালিপুর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় ঘুরে কৃষক ও কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরোর চাষাবাদ হবে। কারণ বর্তমানে মাঠে রবিশস্য আলু, সরিষা, গম ক্ষেত ছাড়া কোথাও এক চিলতে জমি খালি নেই। কোন কোন জমিতে বোরোর চারা রোপন করা হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। আবার কোন জমি চারা লাগানোর জন্য জমি তৈরি করছেন কৃষকেরা। মাঠে মাঠে এখন ডিজেল ও বিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্রের আওয়াজ। আর এসব সেচযন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসা পানির দৃশ্য। সেচযন্ত্রের শব্দ ও কদর্মাক্ত জমি কিংবা বীজতলায় সারিবদ্ধ কৃষকদের গানে গানে মুখরিত হয়ে উঠেছে গ্রামাঞ্চলের মাঠের পর মাঠ।
গত কয়েক দিনে ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে বীজতলা দিয়ে চরম আতঙ্কে পড়েছিলেন উপজেলার কৃষকেরা। কিন্তু কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যথাযথ পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা এবং কৃষকদের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের কারণে কুয়াশায় বীজতলা তেমন একটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি এবারে।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ মো. সালাহউদ্দিন জানান, উপজেলা এখনও বোরোর চারা রোপনের কাজ পুরোদমে শুরু হয়নি। তবে ফেব্রæয়ারি মাস থেকে উপজেলায় পুরোদমে বোরার চারা রোপনের কাজ শুরু হবে। তিনি জানান, এ পর্যন্ত সৈয়দপুর উপজেলায় ১৯৫ হেক্টর জমিতে বোরা চারা রোপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পুরো বোরা আবাদ মৌসুমে অনুক‚ল আবহাওয়া বজায় থাকলে এবং কীটপতঙ্গ ও রোগরালাইয়ের আক্রমনসহ কোন রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয় না দেখা দিলে এবারে উপজেলায় বোরোর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন