শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

শিক্ষক সঙ্কটে আন্তর্জাতিক মানদন্ডে নেই জবি

ওবায়দুল ইসলাম, জবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় আন্তর্জাতিকভাবে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মানদন্ড বজায় রাখতে পারছে না জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১টি ইনস্টিটিউট ও ২২টি বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আন্তর্জাতিকভাবে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মানদন্ড যাচাইয়ে সর্বশেষ ৪৮তম বার্ষিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে। মানদন্ডের বিধি অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর গড় অনুপাতের নূন্যতম মানদন্ড ধরা হয় ১:২০। অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১জন করে শিক্ষক থাকতে হবে।

তবে ৪৮তম বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউট থেকে বর্তমানে পাঠাদান করা হচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১৫ হাজার ৯৬০জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছে ৬৭৮ জন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:২৪। মানদÐের বিধি অনুপাতে আন্তর্জাতিক মানদÐের বাইরে থাকা বিভাগগুলোর মধ্যে কলা অনুষদের ৮টি, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ৪টি, বিজ্ঞান অনুষদের ১টি, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ৭টি, আইন অনুষদের ২টি বিভাগ এবং ১টি ইনস্টিটিউট হচ্ছে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ।
আন্তর্জাতিক মানদÐ অনুযায়ী সন্তোষজনক অবস্থানে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ এন্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ফার্মেসী ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ। এই বিভাগ ২টিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:১০। অর্থাৎ প্রতি ১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১জন শিক্ষক পাঠদান করে যাচ্ছেন। উপযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থী থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরোত্তর সফলতাও বয়ে আনছে এই দুই বিভাগ।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের আইন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:৪০। এই বিভাগে ৫৫৪ শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক রয়েছেন ১৪ জন। ফলে মানদÐ অনুযায়ী শিক্ষক কম থাকায় এই বিভাগটি সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. সরকার আলী আক্কাস বলেন, আমাদের বিভাগে স¤প্রতি দুইজন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কয়েকজন শিক্ষক উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে রয়েছেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

আইন অনুষদের অন্য আরেকটি বিভাগ ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন। শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতের প্রায় একই চিত্র এই বিভাগেও। এখানে প্রতি ৩৯ জন শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে মাত্র ১জন শিক্ষক। অর্থাৎ যেখানে ২জন শিক্ষক থাকাটা বাধ্যতামূলক ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ৪টি বিভাগ রয়েছে। কিন্তু এগুলোর একটি বিভাগও মানদÐ বজায় রাখতে পারেনি। এর মধ্যে একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগে ৩৬ জনের জন্য ১জন শিক্ষক, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে প্রতি ৩৭ জন শিক্ষার্থী জন্য ১জন শিক্ষক, মার্কেটিং বিভাগে ৩১ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১জন শিক্ষক এবং ফিন্যান্স বিভাগে ৩২ জনের জন্যও ১জন শিক্ষক রয়েছেন।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩টি অনুষদের মোট ১৭টি বিভাগে আন্তর্জাতিক মানদÐ অনুযায়ী শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত নেই। কলা অনুষদের বাংলা বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, দর্শন বিভাগ, সংগীত বিভাগ ও নাট্যকলা বিভাগ ও বিজ্ঞান অনুষদের পরিসংখ্যান বিভাগ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অর্থনীতি বিভাগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, সমাজকর্ম বিভাগ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, লোকপ্রশাসন বিভাগ ও ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ২টি ইনস্টিটিউটের একটি হলো শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট।

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত সংখ্যক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করণে প্রশাসনকেই দায়িত্ব দেয়া হয়। শিক্ষকদের গবেষণার সুযোগ যত বেশী হবে শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের সংখ্যাও ততটাই বাড়বে। আর ভালো ফলাফল থাকলে একজন শিক্ষার্থীদের তার নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষক হিসেবে যোগদান করতে পারবে।
এদিকে গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরিক্ষায় সিট ফাঁকা রেখেই আবেদন বন্ধ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মানদÐ বজায় রাখতেই এমনটা করা হয়েছে বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রাসময় কম হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আন্তর্জাতিক মানদÐ সব বিভাগে বজায় নেই। তবে আমাদের বিভিন্ন বিভাগের ভালো শিক্ষার্থীসহ বিভিন্নভাবে পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন