শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

বড়াইগ্রামে জোনাইল বাজার-চামটা ব্রিজমুখী সড়ক

হাসানুল বান্না উজ্জল, বড়াইগ্রাম (নাটোর) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

নাটোরের বড়াইগ্রামের জোনাইলে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, সঠিকভাবে স্ক্যারিফাই ও রোলার মেশিন ব্যবহার না করে দায়সারাভাবে রাস্তা সংস্কার করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এলজিইডি সূত্র জানা গেছে, উপজেলার জোনাইল বাজার-চামটা ব্রিজমুখী সড়কের ৩.৬৭২ কিলোমিটার পাকা রাস্তা সংস্কারের জন্য টেন্ডার দেয়া হয়। এর মধ্যে জোনাইল বাজারের মধ্যে ২৯২ মিটার আরসিসিসহ অবশিষ্ট অংশ কার্পেটিং করা হবে। এক কোটি ৬৭ লাখ লাখ টাকার চুক্তিতে ঠিকাদার খাইরুল কবির রানা কাজটি বরাদ্দ পান। তার কাছ থেকে নাটোরের ঠিকাদার আকরামুল ইসলাম আক্কু কিনে নিয়ে কাজটি করছেন। কিন্তু সংস্কার কাজে শিডিউল না মেনে নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরাতন ভাঙা রাস্তাটি প্রথমে স্ক্যারিফাই (মেশিনের সাহায্যে পিচ ঢালাইসহ খোয়া ওপড়ে দিয়ে পুনরায় রোলার করা) করার সময় যথাযথ নিয়ম না মেনে পুরাতন রাস্তার পিচসহ আস্ত কার্পেটিং তুলে আগের মত করে বিছিয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ এগুলো ভেঙ্গে ছোট ছোট করে দেয়ার কথা। আবার স্ক্যারিফাই করার পর ভালভাবে রোলার করার কথা থাকলেও তা না করা হয়নি। ফলে পরবর্তীতে খোয়া বিছিয়ে রোলার করা হলেও রাস্তা অসমান থেকে যাচ্ছে। এ্যাজিংয়ে নতুন ও ভাল মানের ইট ব্যবহার করার নিয়ম থাকলেও তা না করে রাস্তার পুরাতন ইট ব্যবহার করা হয়েছে। অনেক জায়গায় এ্যাজিংয়ের এসব ইট এখনই আঁকাবাঁকা হয়ে গেছে। রাস্তার অধিকাংশ স্থানে নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। এতে রোলার করার পর মিঠাসহ নিম্নমানের ইটের খোয়া ভেঙে গুড়া হয়ে গেছে। এছাড়া বেশ কিছু জায়গায় পুড়ে যাওয়া ফাঁপা ইটের খোয়াও ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া এসব ইটের আকার সর্বোচ্চ দেড় ইঞ্চি মাপের হওয়ার নিয়ম থাকলেও রাস্তার বেশির ভাগ অংশে বড় বড় খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে।
চামটা গ্রামের ভ্যানচালক রাশিদুল ইসলাম জানান, রাস্তায় ব্যবহার করা খোয়ার প্রায় সবই তিন নম্বর ইটের। নিম্নমানের ইটের খোয়াগুলো খুব তাড়াহুড়া করে বিছিয়ে দিয়ে রোলার করে বালু দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব খোয়া রোলার করার পর গুড়া হয়ে যাচ্ছে। এ সময় সেখানে উপস্থিত আরো পাঁচ-ছয়জন ব্যক্তি জানান, আমরা ঠিকাদারের লোকজনকে বললেও তারা আমাদের কথা শোনে না। তারা নিজেদের ইচ্ছামত কাজ করে যাচ্ছে। এভাবে সংস্কার করা হলে রাস্তা বেশিদিন টিকবে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শ্রমিক বলেন, রাস্তায় ভাল-মন্দ সব রকম ইটের খোয়াই দেয়া হয়েছে। ঠিকাদার যেমন উপকরণ দেবে তেমন দিয়েই কাজ করতে হবে বলে তারা জানান।
ঠিকাদারের প্রতিনিধি গাজীউর রহমান ও সোহেল রানার কাছে জানতে চাইলে তারা সঠিক মানের উপকরণ দিয়েই কাজ করা হচ্ছে বলে দাবি করলেও এক পর্যায়ে তারা এ প্রতিবেদককে অনৈতিক সুবিধার প্রস্তাব দিয়ে এসব নিয়ে সংবাদ না লেখার অনুরোধ করেন।
কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন বলেন, আমরা রাস্তায় মান সম্পন্ন খোয়া দিতে বলেছি।
উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল করিম বলেন, পুরাতন রাস্তার তুলে ফেলা কার্পেটিংয়ের আস্তরণ ভেঙে ব্যবহার করা যাবে, কিন্তু না ভেঙে দিলে অনিয়ম হবে। তবে রাস্তায় দেয়া খোয়াগুলোর মান খারাপ নয়, মোটামুটি ভাল বলে তিনি দাবি করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন