লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ৭ম শ্রেণির ছাত্র রাসেল হোসেন হত্যার ঘটনায় আ. লীগ নেতা বিএম শাহজালাল রাহুলসহ জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। গতকাল শুক্রবার সকালে চরবংশী ইউপির মিয়ারহাট বাজারে কয়েকশত গ্রামবাসী মানববন্ধন করেন। অন্যদিকে, রাহুলকে ইউনিয়নের যুগ্মসাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিস্কার করেছে আ.লীগ। রাহুলের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে গৃহকর্মী ধর্ষণ, হত্যাসহ ১২টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশসূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের মিয়ারহাট বাজারে আ.লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে ছুরিকাঘাতে রাসেল নিহত হয়। আহত হন পুলিশ কর্মকর্তাসহ আরও ১৫/২০ জন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে রাহুলসহ পাঁচজনকে আটক করেন।
এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় রায়পুর থানা পুলিশ উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের মিয়ারহাট বাজারে থাকা রাহুলের আস্তানা থেকে তিনটি ধারালো ছুরি, একটি রামদা, একটি চাপাতি, তিনটি চাকু এবং তিনটি খেলনা পিস্তল জব্দ করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহত রাসেলের মা ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় রাহুলসহ আটকদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
গ্রেফতার রাহুল উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন আ.লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। অন্যরা হলেন- সদরের পূর্ব নন্দনপুর গ্রামের মৃত আবদুল মান্নানের ছেলে মো. সোহাগ (২৭), রায়পুরের চরলক্ষ্মী গ্রামের মৃত ইউসুফ কারীর ছেলে ফারুক কারী ও চরকাছিয়া গ্রামের মানিক শিকদারের ছেলে সুমন শিকদার (৩০)। তারা এলাকায় রাহুলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এজাহারে নিহতের মা ফাতেমা বেগম উল্লেখ করেন, তার স্বামী মনির হোসেন চরের জমিতে ফসল চাষাবাদ করেন। তবে সেই জমির ফসল জোরপূর্বক কেটে নেন আ. লীগ নেতা রাহুল। তার স্বামী প্রতিবাদ করলে হত্যার হুমকি দেয়া হয়।
বুধবার সকালে রাসেল সেই জমি দেখাশোনা করতে ঘর থেকে বের হয়। পথে মাছঘাটে পৌঁছালে রাহুল তার লোকজন নিয়ে রাসেল ও তার বাবা মনির হোসেনের ওপর হামলা করে। হামলাকারীরা রাসেলের পেটে ধারালো ছুরি ঢুকিয়ে দিলে সে গুরুতর জখম হয়। স্থানীয় লোকজন কিশোর রাসেলকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে জানান।
রায়পুর থানার ওসি শিপন বড়ুয়া বলেন, শাহজালাল রাহুলসহ আটকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রাহুলের ফাঁসির দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন