তিস্তার ধু-ধু বালুচরে ভুট্টার বাম্পার ফলন। অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে ও অল্প পরিশ্রমে ভুট্টা চাষে লাভজনক হওয়ায় অত্র এলাকার কৃষকেরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছে। গত বছর ২৪ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। এ বছর ২৬ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ করা হয়েছে।
ফলন বেশি হওয়ার ও বাজার মূল্য বেশি হওয়ার কারণে দিন দিন ভুট্টা চাষ বেড়ে চলেছে। কম খরচে ও অল্প পরিশ্রমে ভুট্টা চাষে লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১ হাজার ৯৯৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। অত্র এলাকার মাটি ভুট্টা চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বিগত বছরের তুলনায় ভুট্টার জমি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ডিমলা উপজেলার চরখড়িবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক মনোয়ার হোসেন জানান, আমাদের বন্যায় প্রতিবছর বসত-ভিটা, আবাদি জমি সবকিছু তিস্তার ভাঙনে বিলীন হয়। আমরা সবকিছু হারিয়ে পথে বসিয়েছি। তিস্তার ধু-ধু বালুচরে আমরা ভুট্টার চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি। গত বছর আমি তিন বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছি। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ার কারণে এ বছর ৫ বিঘা জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছি। ফলনও হয়েছে ভালো। জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল মালেক জানান, আমরা চর এলাকায় বালুচরে ভুট্টার চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছি। কিশোরগঞ্জ উপজেলার রনচন্ডি ইউনিয়নের কৃষক মোতালেব জানান, তিস্তার বালুচর আমাদের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিয়েছে। ডোমার উপজেলার গোমনাতী ইউনিয়নের আব্দুল গফুর জানান। আমাদের এদিকে শুধু ধু-ধু বালু মাটি। আমাদের এদিকে শুধু ভুট্টা চাষ হয়। ভুট্টা চাষে অধিক লাভ। কারণ ভুট্টায় খরচ কম, তাতে অধিক লাভবান হওয়া যায় বলে জানান কৃষকেরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড.এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম জানান- ডিমলা, ডোমার, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ ৪টি উপজেলায় এ বছর ২৬ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। বিঘায় ২৫ থেকে ৩৫ মণ ভুট্টার ফলন পেয়ে থাকি। আমাদের এক সময় বালুচর ছিল। যে দিকে তাকান ফাঁকা ছিল। কিন্ত চরগুলো এখন আর ফাঁকা নাই। যেদিকে তাকাই শুধু ভুট্টা আর ভুট্টা। হেক্টরে ১১ মেট্রিকটন ফলন পাওয়া যায়। গত বছর উৎপাদন লক্ষমাত্রা ২৭ হাজার ৬শ’ মেট্রিকটন। এবছর ২৮ হাজার মেট্রিকটন ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন