'নির্বাচনে না এলে বিএনপি আইসিইউতে যাবে' আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে এক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি আইসিইউতে যাবে না আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে ইতিমধ্যে আইসিইউতে চলে গেছে। আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকার নাটক শুরু করেছে। খালেদা জিয়াকে নিয়ে এতো দরদ উথলে উঠলো কেনো! সরকার দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। খালেদা জিয়ার যখন রাজনীতি করার সময় আসবে তখন করবেন যেখানেই থাকুক। এটা নিয়ে আওয়ামী লীগের মাথা না ঘামালেও চলবে।
তিনি বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসের হোতা আওয়ামী লীগ নিজে, সরকার নিজে। অগ্নিসন্ত্রাস করে বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করে এবার লাভ হবে না। সুশৃঙ্খলভাবে আন্দোলন এগিয়ে যাবে।
দেশ খাদের কিনারায় চলে আসছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিদ্যুৎ গ্যাস জ্বালানির দাম বেড়েছে সেদিকে সরকারের খেয়াল নেই তাদের দরকার শুধু টাকা। বিদ্যুৎ আমদানি ক্যাবাসিটির নামে জনগণের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে৷ মুল্যস্ফীতি দুর্নীতি এমন পর্যাযে চলে গেছে কেউ বিনিয়োগ করছে না এজন্য দায় সরকারের।
তিনি বলেন, জনগণের প্রতি এ সরকারের কোন জবাবদীহীতা নেই। ১৪ সালে ১৫৪ জনকে বিনাভোটে সংসদ সদস্য বানিয়ে দিয়েছে। এরমধ্যে জাতীয় পার্টি বাম দলের লোক আছে। ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় এখন তাদের অনেকেই কথা বলছে তারা আওয়ামী লীগের চেয়ে খারাপ।
সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এটিই একমাত্র লক্ষ জানিয়ে ফখরুল বলেন, তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিনের হরতাল যখন করেছে তখন সংবিধানে ছিলো না। সংকট সমাধানে খালেদা জিয়া তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা করেছিলো। যতোবার ভোট চুরি করেছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি কখনও ভোট চুরি করেনি। আওয়ামী লীগের লজ্জা হওয়া উচিৎ বিএনপির ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তারপর মামলা নিয়ে বানিজ্য করে। পুলিশ কে ব্যবহার করছে র্যাবকে ব্যবহার করছে। মার্কিনীরা নিষেধাজ্ঞা দিবে এটি নিয়ে রাজনীতি করবে এটি বিএনপি চায় না। পকেট ভারির স্বার্থে উন্নয়ন করছে সরকার। ঐক্যবদ্ধ থেকে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে আরো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় দাবি এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে সংসদ ভেঙে দিতে হবে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে সেই কমিশন নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে সে নির্বাচনের জনগণ তাদের ভোটের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন করবে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আগস্ট মাস থেকে আমরা যখন চাল-ডাল, তেল-লবণের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করতে শুরু করেছি তখন থেকে তারা গুলি করে হত্যা করতে শুরু করেছে। আমাদের ১৭ জন নেতাকর্মীকে-আন্দোলনকারীকে প্রকাশ্যে রাজপথে গুলি করে মেরেছে। ইতোমধ্যে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। এখনো আমাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী জেলে রয়েছেন। এই যে ভয়াবহ একটি দুর্বিষহ অবস্থা। এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় কেন? ভয় একটাই সেটা আপনারা খুব ভালো করে জানেন, সেটা হলো নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, এবিএম মোশারফ হোসেন, জিএম সিরাজ, মৎস্যজীবী দলের মো. আবদুর রহিম, ওলামা দলের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন