বৃহস্পতিবার দিল্লিতে মিলিত হয়েছেন জি-২০ ভূক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সেখানে এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাদের বিভাজনগুলোকে দূরে রাখতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের প্রতি আহ্বান জানানোর পরেও ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়ে উত্তেজনা আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, বৈঠকটি রাশিয়ার ‘উস্কানিবিহীন এবং অন্যায় যুদ্ধ’ দ্বারা বিঘ্নিত হয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ইউক্রেনের কিছু শস্য রপ্তানির অনুমতি দেয়ার জন্য করা চুক্তি ‘বাতিলের’ জন্য পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। এর আগে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সাহায্যের আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন যে, তাদের প্রতি জি ২০ দেশগুলোর দায়িত্ব রয়েছে।
এটি ছিল মোদির ইংরেজিতে একটি বিরল ভাষণ - তিনি তার বার্তাটি কতটা গুরুত্ব সহকারে নিতে চেয়েছিলেন তার একটি প্রমাণ। তিনি ইউক্রেনের যুদ্ধের সরাসরি কোন উল্লেখ করেননি কিন্তু স্বীকার করেছেন যে, আলোচনা ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা দ্বারা প্রভাবিত হবে। জি ২০-এর জন্য ভারতের স্লোগান হল ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যত’। মোদি প্রতিনিধিদের এটিকে উপলব্ধ করার এবং তাদের একত্রিত করে এমন বিষয়গুলোতে ফোকাস করার আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবারের আলোচনাসূচীতে খাদ্য নিরাপত্তা, উন্নয়ন সহযোগিতা, সন্ত্রাসবাদ এবং মানবিক সহায়তা সংক্রান্ত ষিয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে - এটি জি ২০ সভাপতি থাকাকালীন ভারতের অগ্রাধিকারের প্রতিফলন। তবে ইভেন্টটিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ এবং আমেরিকা ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের (তিনটি বড় শক্তির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন) নিয়ে বিভক্তি দেখা গিয়েছে। গত সপ্তাহে ব্যাঙ্গালোরে এ জি-টোয়েন্টিভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের মধ্যেকার বৈঠক শেষ হয়েছে, কিন্তু সেখানেও ইউক্রেন সঙ্কট নিয়ে মতবিরোধের জেরে কোনও যৌথ ঘোষণাপত্র জারি করা যায়নি।
ব্যাঙ্গালোরের খসড়া ঘোষণাপত্রে ইউক্রেন সংঘাতের কথা উল্লেখ করা হলে চীন ও রাশিয়া একযোগে তার তীব্র প্রতিবাদ জানায়। সদস্য দেশগুলো শেষ পর্যন্ত এই প্রশ্নে একমত হতে না-পারায় কোনও ঘোষণাপত্রও আসেনি। ব্যাঙ্গালোর বৈঠকের পর ভারতের তরফ থেকে যে ‘চেয়ারম্যানস সামারি’ (সারাংশ) জারি করা হয় তাতে শুধু জানানো হয়েছিল বেশির ভাগ সদস্য দেশ ইউক্রেন যুদ্ধের তীব্র নিন্দা জানালেও যে প্যারাগ্রাফগুলোতে ইউক্রেনের উল্লেখ ছিল তাতে রাশিয়া ও চীন স্বাক্ষর করেনি।
পরে পশ্চিমা নেতারা গঠনমূলক আলোচনার অভাবে হতাশা প্রকাশ করেন; রাশিয়া পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে এ ফোরামকে ব্যবহার করে রাশিয়া বিরোধী ‘প্রচারণা’ চালানোর অভিযোগ করেছে। চীনের সাথে ভারতের দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ অতিরিক্ত সংঘর্ষের কারণ হতে পারে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর একটি কঠিন পরিস্থিতিতে সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন। সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট, বিবিসি নিউজ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন