দিনদিন তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় অকার্যকর হয়ে পড়ছে দেশের উত্তরাঞ্চলের কয়েক লাখ কৃষকের আশা-ভরসার তিস্তা সেচ প্রকল্প। প্রায় দুই মাস থেকে বৃষ্টি না হওয়ার কারনে নদী-নালা পুকুর খাল বিলশুকিয়ে যাচ্ছে। ফসলি জমি ফেটে চৌচির। এতে চলতি মৌসুমে আবাদি জমির সেচ কাজ ব্যহত হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন প্রকল্প এলাকার কৃষকেরা। প্রমত্তা তিস্তা এখন ধূ ধূ বালুচর। পানির অভাবে প্রকল্প এলাকার মূল সেচ খালগুলো থাকছে পানি শূন্য। পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল হামিদ জানায়, দুই মাস থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় আমরা পাঁচ বিঘার বোরো ধানের ক্ষেত ফেটে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একমাত্র আল্লাহাই ভরসা।
প্রমত্তা তিস্তা এখন ধূ ধূ বালুচর। পানির অভাবে শুধু সেচ কার্যক্রমই নয়। ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তায় মাছ ধরে বা নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা হাজার হাজার জেলে, মাঝি-মাল¬া এখন সম্পূর্ণ বেকার। পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের জেলে মোজ্জামেল জানান, আমি নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্ত নদীতে পানি না থাকায় আমার মতো অনেকে বেকার হয়ে পড়েছেন। আমি পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে আছি।
নদী শুকিয়ে এখন ধূধূ বালুচর। সীমান্তের জিরোপয়েন্ট থেকে ব্র্রক্ষপুত্র পর্যন্ত তিস্তার ১২০ কিলোমিটার এলাকায় ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় নদীর জলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা প্রায় ১৫ হাজার জেলে এখন সম্পূর্ণ বেকার। পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেযারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ খাঁন জানান, নদীতে পানি না থাকার কারণে কৃষকরা বিপাকে পড়েছে। অপরদিকে কয়েক হাজার জেলে ও মাঝি কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এরই মধ্যে পানি না থাকায় খেয়া পারাপাড়ের নৌকাগুলো শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে অনেকেই।
শুকনো মৌসুমে ব্যারেজের ৪৪টি গেটের বন্ধ রেখে সেচ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার চেষ্ট করেন পানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। সে কারণে নদীর ভাটি অংশ খাঁ খাঁ মরু ভূমিতে পরিণত হয়েছে। তিস্তা সেচ প্রকল্প এলাকার কৃষকের বাড়তি ফসলের প্রয়োজনের কাছে বলি হয় তিস্তা নদীকে জীবিকা করা তিস্তা পারের হাজার হাজার পরিবার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন