অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় এবারও নতুন বছরের প্রথম দিন আজ থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে শুরু হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা (ডিআইটিএফ)। মেলার ২২তম আসর রোববার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন।
গতকাল শনিবার দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) যৌথ আয়োজনে মেলা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লা আল মামুন এবং ইপিবির কর্মকর্তা।
মেলা মাঠের আয়তন ৩১ দশমিক ৫৩ একর। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এবারের মেলায় প্রবেশ মূল্য ধরা হয়েছে (পূর্ববর্তী ৩ বছরের মতো) প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য জনপ্রতি ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য জনপ্রতি ২০ টাকা। ভিআইপি গেটে গাড়ি আগমন ও নির্গমনের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছর মেলায় বাংলাদেশসহ অংশ নিচ্ছে ২১টি দেশ। এগুলো হলোÑ ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, নেপাল, হংকং, জাপান, আরব আমিরাত, মরিশাস, ঘানা, মরক্কো ও ভুটান।
তিনি আরো জানান, মেলায় এবারও সাধারণ, প্রিমিয়ার, সংরক্ষিত, বিদেশী, সাধারণ মিনি, সংরক্ষিত মিনি, প্রিমিয়ার মিনি, বিদেশী মিনি প্যাভিলিয়ন, সাধারণ ও প্রিমিয়ার স্টল, ফুড স্টল, রেস্তোরাঁসহ ১৩ ক্যাটাগরির ৫৮০টি স্টল থাকবে। থাকবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসসমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। এ ছাড়াও থাকবে একটি ই-শপ, দু’টি শিশু পার্ক, তিনটি রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্র, একটি প্রাথমিক চিকিৎসা, মা ও শিশু কেন্দ্র। বিনোদনের জন্য মাঠের মধ্যে ফুলের বাগান ও এটিএম বুথ। মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি, র্যাব, আনসার এবং বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্সসহ ১৪০টি সিসি ক্যামেরা।
মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার মাধ্যমে দেশী-বিদেশী পণ্যের সঙ্গে ভোক্তাদের পরিচিত হওয়ার সুযোগ বাড়ে। সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উৎপাদকদের মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে উৎসাহ যোগায় এবং নতুন নতুন শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
বাণিজ্যমেলায় ২০১০ সালে ২২ কোটি ৮৬ লাখ, ২০১১ সালে ২৫ কোটি, ২০১২ সালে ৪৩ কোটি ১৮ লাখ, ২০১৩ সালে ১৫৭ কোটি ও ২০১৪ সালে ৮০ কোটি টাকা এবং ২০১৫ সালে ৮৫ কোটি টাকার রফতানি আদেশ পাওয়া গেছে। এবার আরো বেশি রফতানি আদেশ পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
এবারের মেলার উদ্ধোধন অনুষ্ঠানে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের পণ্য ও সেবা খাতে ২৯টি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ, ২২টি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানকে রৌপ্য এবং পণ্য খাতে ১৫টি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ব্রোঞ্জ ট্রফির জন্য মনোনীত করা হয়েছে। এর বাইরেও পণ্য খাত নির্বিশেষে একটি প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ রফতানি আয় অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ স্বর্ণ ট্রফির জন্য মনোনীত করা হয়েছে। মোট ৬৬টি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জন্য জাতীয় রফতানি ট্রফি ও সনদ প্রদান করা হবে। বাণিজ্যমেলা আয়োজনের জন্য পূর্বাচলে ৬০ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সেখানে আগামী তিন বছরের মধ্যে চীনা সরকারের সহযোগিতায় স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। সেখানে সারা বছর বিভিন্ন মেলা আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন