শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

লোকসানে সাতক্ষীরার ফুলকপি চাষিদের মাথায় হাত

| প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আবদুল ওয়াজেদ কচি, সাতক্ষীরা থেকে : সাতক্ষীরা জেলায় প্রতি কেজি ফুলকপির পাইকারি দর যাচ্ছে ১ টাকা ৫০ থেকে ২ টাকা। অথচ কৃষকের উৎপাদন খরচ হড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। আড়তদার ও পাইকাররা বলছে, চাহিদার বাজারে সরবরাহ বেশি থাকায় সবধরনের সবজি‘র দাম পড়ে গেছে। সাতক্ষীরার ছোট বাশঘাটা গ্রামের ফুলকপি চাষি সাকিম হোসেন জানান, গতকাল সকালে ২৫ মন ফুলকপি বিক্রি করতে সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড় বাজারে আসেন। কিন্তু এক সপ্তাহ আগে যে ফুলকপি প্রতি মন পাইকারি ৪৬০ টাকা থেকে ৪৮০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন তা কমে ৭০ টাকা মন দরে বিক্রি করেছে। এই কৃষক বলেন, জমিতে সেচ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করে প্রতি মন ফুলকপি উৎপাদন করতে হয়েছে তার কমপক্ষে ৪০০ টাকা। কিšুÍ বাজারে যে পাওয়া যাচ্ছে তাতে করে উৎপাদন খরচ তো উঠবে না বরং লোকসান যাবে এবার ফুলকপি চাষে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগঁড়দাড়ী গ্রামের  সবজি চাষি আমজাদ হোসেন। বারো মাসই নানা প্রকার সবজি চাষ করেন। চলতি শীতমৌসুমে ২ বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছেন। এবার বিঘাতে প্রায় ২০ হাজার টাকা উৎপাদন পড়েছে ফুলকপি উৎপাদনে। স্থানীয় লাবসা সবজি‘র আড়তে ক্ষেতের ফুলকপি বিক্রি করতে যান তিনি। ভোর ৬ টায় ১৫ মন ফুলকপি নিয়ে লাবসা আড়তে হাজির হয়। দুপুর ১২ পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কোনো ক্রেতার নাগাল পাননি। অবশেষে প্রতি মন ফুলকপি মাত্র ৬০ টাকা দরে বিক্রি করে চলে চলে যান তিনি। সাতক্ষীরা জেলা কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতি‘র সভাপতি মো. রওশন আলী জানান, চলতি শীতকালীন মৌসুমের শুরুতে সাতক্ষীরায় সবধরনের সবজি‘র দাম ভালো যাচ্ছিলো। কিন্তু সম্প্রতি বাজারে একই সাথে প্রচুর পরিমাণ সবজি উঠায় দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। ফলে চাহিদার তুলনায় আমদানি বেশি হওয়ায় সবজি চাষিরা লোকসানে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, এবার সাতক্ষীরা জেলার সবজি‘র আবাদ যেমন বেড়েছে তেমনি আবার জেলার বাইরে থেকে সবজি আসছে বাজারে। যে কারনে স্থানীয় চাষিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যানুযায়ী চলতি শীতমৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলাতে ৮ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সাতক্ষীরা উপজেলায় ২ হাজার ১৫০ হেক্টর, কলারোয়ায় ১ হাজার ২২০ হেক্টর, তালায় ২ হাজার ১০০ হেক্টর, দেবহাটায় ৯৫০, কালিগঞ্জে ১ হাজার ৪০০ হেক্টর, আশাশুনিতে ১৫০ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলাতে ১৩০ হেক্টর। সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচলক কৃষিবিদ কাজী মো. আব্দুল মান্নান সাতক্ষীরাতে মূলত বারো মাসই নানা ধরনের শাক-সবজি উৎপাদন করা হয়। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া সব ধরনের ফসলের উপযোগী। তিনি বলেন, সম্প্রতি বাজারে সবজি‘র ন্যায্য দাম না থাকায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন