শরণখোলা উপজেলা সংবাদদাতা : বাগেরহাটের শরণখোলায় গভীর রাতে ফিল্মি স্টাইলে সান্তা (২১) নামে এক অনার্স পড়ুয়া ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। বন্দুকের নলের মুখে পিতা-মাতাকে কুপিয়ে লুটপাট শেষে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে কিশোরীর মুখ বেঁধে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে করে অপহরণকারীরা নির্বিঘেœ পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা সদরের রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। ঘটনার পর রাতেই আহত দু’জনকে গুরুতর অবস্থায় শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যসহ এলাকার সচেতন নাগরিক কমিটির ব্যানারে বিক্ষোভ সামবেশ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদর সংলগ্ন খালের বিপরীত পাড়ের রাজৈর এলাকার দুলু গাজীর মেয়ে ও পিরোপুরের মহিলা কলেজের কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের ফাতেমা-তুজ-জোহরা সান্তাকে অপহরণের উদ্দেশ্যে হানা দেয় উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ধনাঢ্য সবুর আকন ও তার ছেলে সজিব আকনসহ অন্তত ২০/২১ সশস্ত্র ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী। পুলিশের পরিচয় দেয়ার পর দরজা খোলার সাথে সাথে দুলু গাজী ও তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগমকে রাম দা দিয়ে মাথায়, পিঠে ও মুখেসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এরপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তার মেয়ে সান্তার মুখ বেঁধে বাড়ি সংলগ্ন খালের ঘাটে আগে থেকে অবস্থান করা ট্রলারে করে নদীর দিকে পালিয়ে যায়। ঘটনার সময় সন্ত্রাসীরা নগদ ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ২০/২৫ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে বক্তব্য নেয়ার জন্য সবুর আকনের ০১৭১৭-২৭১১৪৬ নাম্বার মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুলু গাজী জানান, তার মেয়ে সান্তার সাথে ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি বিয়ে হয় রায়েন্দা বাজারের বাসিন্দা সবুর আকনের ছেলে সজিব আকনের। বিয়ের পর থেকে শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামী কর্তৃক সান্তার উপর শারীরিকভাবে নির্যাতন শুরু হলে মাত্র ১০ মাসের মাথায় বাধ্য হয়ে সান্তা ডিভোর্স দেয় স্বামী সজিবকে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা-পাল্টা মামলা হয়। সজিব গংদের দায়েরকৃত মামলা দু’টি মিথ্যা প্রমাণিত হলে ক্ষিপ্ত হয়ে তার মেয়ে ও তাকে শায়েস্তা করতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করে সাবেক স্বামী সজিব ও তার পিতা সবুর আকন। তিনি আরো বলেন, ঢাকা থেকে ভাড়ায় আনা সন্ত্রাসীরা সান্তাকে গুম অথবা মেরে ফেলতে পারে। তার মেয়েকে দ্রুত উদ্ধারের জন্য তিনি প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ দাবি করেন। এ ব্যাপারে শরণখোলার থানার ওসি আঃ জলিল জানান, ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ পাঠিয়ে বলেশ্বর নদীসহ সম্ভাব্য সকল স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। অপহৃতকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে এবং মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন