খলিল শিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে : রূপগঞ্জের রাজউকের নির্মাণাধীন পূর্বাচল উপ-শহরের ৩০০ ফুট রাস্তায় ক্ষিলখেত ও রূপগঞ্জ থানাকে ম্যানেজ করে চলছে ফিটনেসবিহীন পুরাতন গাড়ি। এতে যাত্রী নিরাপত্তা ও সড়ক পরিবহনে ব্যাপক অনিয়ম দেখা গেছে। সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্বাচল ৪নং সেক্টর এলাকায় শতাধিক ফিটনেসবিহীন প্রাইভেটকার নামক গাড়ি। এসব গাড়ি কাঞ্চণ ব্রিজ এলাকার এশিয়ান বাইপাস সংযোগস্থল থেকে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত যাত্রী বহন করছে। অভিযোগ রয়েছে বাড়তি ভাড়া আদায়ের। মাত্র ৭ কিলোমিটার রাস্তায় জনপ্রতি ৬০ টাকা দিয়ে যাতায়াত করছে এ পথে চলাচলরত যাত্রীরা। রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ও খিলক্ষেত থানা পুলিশের সহায়তায় এসব ফিটনেসবিহীন প্রাইভেটকারের দৌরাত্ম্যে বৈধ পরিবহন মালিকরা তাদের গাড়ি নামাতে পারছেন না। কমদামি ও পুরাতন ফিটনেসবিহীন গাড়ি নামিয়ে নিয়মিক মাসোহারা আদায় করছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ও পরিবহন শ্রমিক নামের অনিবন্ধিত সংগঠন। আর এ বে-আইনি সুবিধা আদায়ের জন্য এসব গাড়ির অলিখিত অনুমতি দিয়েছে থানা পুলিশ। রাজধানীর কোলঘেষা হওয়ায় প্রতিদিন এ পথে হাজার হাজার যাত্রী সাধারণ যাতায়াত করেন। এ পথে এসব ফিটনেসবিহীন গাড়ি ছাড়া অন্যকোনো গাড়ি নেই রাস্তায়। তাই বাধ্য হয়েই কুড়িল পর্যন্ত এসব ঝুঁকিপূর্ণ গাড়িতেই চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। এ পথে নিয়মিক চলাচল করেন মধূখালী এলাকার আরমান মিয়া। ভূলতা জেনারেল হাসপাতালে অভ্যর্থনা বিভাগে চাকরি তার। প্রতিদিনি সকালে কাঞ্চণ ব্রিজ হতে এসব ফিটনেসবিহীন গাড়ি দিয়ে যাতায়াত করেন। মাঝে মধ্যে গাড়ি রাস্তার মাঝেই বিকল হয়ে যায়। এ সময় পেছন থেকে ট্রাকের ধাক্কায় আহত হন তিনি। তারপরও জীবিকার তাগিদে বিকল্প গাড়ি না থাকায় এ পথে চলতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। অপর যাত্রী কালনী এলাকার আক্তারুজ্জামান বলেন, আমি নিয়মিত এ পথে রাজউকে যাতায়াত করি। ৩০০ ফুটের এ রাস্তায় এলে জীবনটা হাতে নিয়ে চলি। কারণ এ পথের গাড়িগুলো ভাঙ্গাচোরা ও রাস্তায় বিকল হয়ে পরে। এতে প্রায়ই অফিসে যেতে দেরি হয়। এরই মাঝে আদায় হয় বাড়তি ভাড়া। এ ভাড়া নিয়ে যাত্রী ও চালকদের সাথে নিত্য বিরোধ চোখে পড়ে। এ পথে গাড়ি চালান ব্রাহ্মণখালী এলাকার ইয়ানুছ মিয়া। পুরাতন গাড়ি কমদামে কিনে গাড়ি চালান তিনি। এতে যা আয় হয় তার একটি অংশ এতদিন খিলক্ষেত থানা ও পুলিশ ও কাঞ্চন পুলিশ ফাঁড়িতে দিতে হতো। এখন এই টাকা নেয় কাঞ্চণ সেতু এলাকায় পুলিশ বক্সে দায়িত্বরত টিআই ইকবাল। ফলে গুড়ের লাভ পিপাড়ায় খায় বলে মন্তব্য করেন তিনি। এসব বিষয়ে কাঞ্চণ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সেলিম রেজা বলেন, পুরাতন গাড়ি থেকে কোনো প্রকার টাকা আদায় হয় না। পূর্বাচলের ৩০০ ফুট রাস্তাটি আনুষ্ঠানিক চালু না হওয়ায় কিছু অনুমোদনহীন গাড়ি চলাচল করে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে টিআই ইকবাল টাকা আদায় বিষয়টি অস্বীকার করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন