আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপকূলে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর তা-বে ভেসে যাওয়া বেড়িবাঁধ সাত মাস পরও মেরামত ও নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এতে উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন রায়পুরের সহ¯্রাধিক পরিবারের অন্তত ২৫ হাজার মানুষের জীবন জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। সামনে গ্রীষ্ম মৌসুমে কোনো ধরনের ঝড়-জলোচ্ছ্বাস হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গত বছর ২১ মে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু। ঝড়ে আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সরেঙ্গা, পূর্ব গহিরা, ধলঘাট, বার আউলিয়া ও মালিয়ারা গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। বিলীন হয়ে যায় অধিকাংশ বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ। নিয়মিত জোয়ারের পানি উঠানামায় খালে পরিণত হয়েছে। এতে অস্বাভাবিক লবণাক্ততার কারণে অধিকাংশ ফসলি মাঠ অনাবাদি হয়ে পড়েছে। ভবিষ্যতেও ফসল উৎপাদন বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকার কৃষিজীবীরা। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রায়পুরের মালিয়ারা থেকে বাইগ্যার ঘাট পর্যন্ত ৫৪০ মিটার বেড়িবাঁধ একেবারে মাটির সাথে মিশে গেছে। পাশাপাশি দক্ষিণে বার আউলিয়া পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতবিক্ষত। ঘরের জানালায় উঁকি দিলেই সাগরের গর্জন আর ঢেউয়ের পানি ছুঁই ছুঁই অবস্থা। স্থানীয় বাসিন্দা ছালেহ আহমদ (৩৭) বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় রাস্তাঘাটের অবস্থাও নাজুক। জোয়ারের পানি ঢুকার কারণে কোনো চাষাবাদ হচ্ছে না। অভাব-অনটনে আমাদের দিন কাটছে। দ্রুত বেড়িবাঁধ সংস্কারের দাবি জানিয়ে রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানে আলম ইনকিলাবকে বলেন, বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এখানকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে। এ ব্যাপারে ভূমি প্রতিমন্ত্রী যথেষ্ট আন্তরিক হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। চলতি মৌসুমে এই এলাকার মানুষ নতুন বেড়িবাঁধ নির্মাণের আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় এ বছরও তা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা। পাউবো সূত্র জানায়, গত বছরের ৯ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপকূল রক্ষায় ২৮০ কোটি ৩০ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর উপকূল রক্ষায় ব্যয় হবে ২৫০ কোটি টাকা। পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. কায়সার উদ্দিন জানান, আনোয়ারা উপকূলের মালিয়ারায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৪০ মিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। আশা করছি ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে কাজ শুরু হবে। পাউবো চট্টগ্রাম পওর বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার সাহা ইনকিলাবকে বলেন, একনেকে অনুমোদিত ২৮০ কোটি টাকার অধিকাংশ প্রকল্প টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে। তবে অনুমোদিত প্রকল্পের পরে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ এ বছর সম্ভব হবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন