শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ইনকিলাবে সংবাদ প্রকাশের পর বাগেরহাট কারাগারের অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত শুরু

| প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা : বাগেরহাট জেলা কারাগারের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়েছে। বাগেরহাট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তপন কুমার বিশ্বাসের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার নাজিম উদ্দিন এই অনিয়মের তদন্ত কাজ শুরু করেছেন। সরকার যেখানে কারাগারের অনিয়ম দূর করে আধুনিকতার ছোঁয়ায় শোধনাগারের চেষ্টা করছে সেই মুহূর্তে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের অসৎ উদ্দেশ্য নানা দুর্নীতির আশ্রয় নেয়। বাগেরহাট কারাগারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে ‘দৈনিক ইনকিলাব’ সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট মহলের। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মহোদ্বয়ের নির্দেশে কারাগারের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে শাসন বিভাগীয় তদন্ত চলছে। আশা করি তদন্ত কাজ শেষে অল্প সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে’। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কারাগারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন না মেনে চলা, সরকারি বিধি মোতাবেক বাসা ভাড়া না দেয়া, বন্দিদের সাক্ষাতে অর্থ নেয়া, মসজিদের অনুদানের অর্থ আত্মসাত করাসহ বন্দিদের শারীরিক নির্যাতন এবং নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়সহ খাবারের নানা অনিয়ম করার অভিযোগ রয়েছে। কারাগারের কয়েকজন বন্দির সাথে কথা বলে জানা গেছে, কারাগার মানেই একটি বন্দি জীবন। নানা সুবিধা-অসুবিধার মধ্যে দিয়ে কাটাতে হয় এখানে। কেউ জানে না একজন বন্দির জন্য সরকার দৈনিক তাদের কি পরিমাণ খাবারের বরাদ্দ দিয়েছেন। বাজার দরে কারা অভ্যন্তরে ক্যান্টিন চালু করা হলেও চড়া দামে কিনতে হয় পণ্য সামগ্রী। প্রত্যেকটি দ্রব্যের মূল্যের ২-৩ গুণ বেশি দামে বিক্রি করে। আর এই অর্থ কয়েকজন ভাগবাটোয়ারা করে নেয় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কারারক্ষী জানান। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রধান কারারক্ষী দেলোয়ার হোসেন  প্রতিদিন ২০-২৫ হাজার টাকা অবৈধ পন্থায় আয় করতে নানা কৌশল ব্যবহার করছেন। বদলির আদেশ আসলেও বিভিন্ন উপায় ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। ৮শ’ বর্গফুটের কোয়ার্টারে থাকলেও দুই বছরের বেশি সময় ধরে ভাড়া কর্তন করছেন না। ডেপুটি জেলারের কক্ষে বন্দিদের সাথে সাক্ষাতের ব্যবস্থায় জনপ্রতি ২-৪ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া অন্য কর্মকর্তাদের সহায়তায় মসজিদের উন্নয়নের নামে সাক্ষাতকারীদের কাছ থেকে পাওয়া অনুদানের অর্থও লোপাট করছে। ১৬টি কোয়াটারের প্রতিটিতে একটি করে পরিবারের বসবাসের নিয়ম থাকলেও সেখানে সাবলেট দিয়ে ২টি পরিবার বসবাস করছে। প্রতিটি বাসায় রান্নার জন্য অবৈধ হিটার ব্যবহার করা হয়। বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার নগরকান্দি গ্রামের বাদশা শেখ বলেন, আমার ঘনিষ্ট একজনের সাথে দেখা করতে আসলে প্রথমে ৫শ’ টাকা চায়। পরে অনেক অনুরোধের পর দুশ’ টাকা দিয়ে সাক্ষাত করি। শরনখোলার আলামিন বলেন, জেল খানায় স্বজনদের সাথে সাক্ষাত করতে গেলেই এক থেকে দেড় হাজার টাকা নিয়ে যেতে হয়। ওখানে টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না। বাগেরহাট কারাগারের সুপার গোলাম দোস্তগীর দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কারাগারে বর্তমানে কোন অনিয়ম নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন