বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

হারাতে বসেছে বিবিচিনি শাহী মসজিদের ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য

রক্ষণাবেক্ষণ ও নেই প্রয়োজনীয় সংস্কার

| প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বেতাগী (বরগুনা) উপজেলা সংবাদদাতা : প্রয়োজনীয় সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম ঐতিহাসিক কীর্তি বরগুনা জেলার বেতাগীর বিবিচিনি শাহী মসজিদটি সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য হারাচ্ছে। টিকে থাকলেও কালের বিবর্তনে ক্রমশ ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। দর্শণার্থী ও নামাজিদের ওঠানামার জন্য মসজিদের দক্ষিণ পাশের ২১ ধাপ বিশিষ্ট ৪৮ ফুট দীর্ঘ সিঁড়িটি ধেবে গিয়ে ধসে পড়ছে। সিঁড়ি নির্মাণের ফলে যাতায়াতের পথ সুগম ও সহজ হলেও বর্তমানে টিলা বেয়ে মুসল্লিদের নামাজ পড়তে ও পর্যটকদের আসা-যাওয়া করতে দুর্ভোগে পড়তে হয়। পূর্ব পাশের ২৫ ধাপ বিশিষ্ট ৪৬ ফুট দীর্ঘ সিঁড়িটির অবস্থাও নাজুক। সম্ভাবনাময় এ পর্যটন স্পটটি পর্যটকদের পাশাপাশি সকলের হৃদয়কে আকৃষ্ট করে তুলতে ও পরিবেশ রক্ষার্থেও নেই কোনো উদ্যোগ। স্থানীয় কিছু লোক মসজিদের টিলার নিচের মাটি কেটে তাদের জমি বাড়িয়ে আবাদ করে টিলার ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে চলছে। বেতাগী সরকারি কলেজের ইসলামী ইতিহাসের বিদায়ী অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বের কেন্দ্রস্থল ইতিহাস সমৃদ্ধ মসজিদটি দেখার কেউ নেই এমনটি মনে হচ্ছে। সপ্তদশ শতাব্দীতে বিবিচিনি গ্রামে নির্মিত এক গম্বুজ বিশিষ্ট এ মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৩৩ ফুট, প্রস্থ ৩৩ ফুট। দেয়ালগুলো ৬ ফুট চওড়া বিশিষ্ট। দক্ষিণে এবং উত্তর দিকে তিন তিনটি দরজা রয়েছে। তবে মসজিদটিতে মূল প্রবেশদ্বার একটি। মসজিদের সংস্কার কাঠামোয় প্রবেশদ্বারের মূল ফটক সংস্কার করা হলেও প্রবেশপথ এখনো অপরিসর। এগুলো খিলানের সাহায্যে নির্মিত হয়। মসজিদের ইটগুলো মোঘল আমলের ন্যায় তৈরি। দৈর্ঘ্য ১২ ইঞ্চি, প্রস্থ ১০ ইঞ্চি এবং চওড়া ২ ইঞ্চি। সমতল ভূমি হতে মসজিদ নির্মিত স্থানটি আনুমানিক কমপক্ষে ৩০ ফুট সুউচ্চ টিলার উপর অবস্থিত। তার উপরেও প্রায় ২৫ ফুট মসজিদ গৃহ। প্রতœতত্ত্ব বিভাগ দীর্ঘদিনের অরক্ষিত জরাজীর্ণ অবস্থা থেকে মসজিদটি উদ্ধারের পর সংস্কার করলেও প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এ সংস্কার কাঠামোয় মসজিদের পুরানো কাঠামোগত বৈশিষ্ট্যের সাথে হুবুহু মিল রেখে কাজ করা হয়। মসজিদের ভেতরে অবাধে বায়ু চলাচলের পথগুলো উন্মুক্ত রাখা হয়। কোন মতে স্থাপন করা হয় বাতি ও বৈদ্যুতিক পাখা। জানা যায়, পরবর্তীতে  ১৯৯৩ সালে মসজিদের আরও সৌন্দর্য বৃদ্ধি, অবকাঠামোগত সম্প্রসারণ ও সংস্কারের জন্য প্রতœতত্ত্ব বিভাগ ১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিলেও দুঃখের বিষয় অদ্যবধী তার আর আলোর মুখ দেখেনি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নওয়াব হোসেন নয়ন মসজিদটির সংস্কার ও উন্নয়নে সংশ্লিষ্টদের নিকট দাবি জানিয়েছেন। খুলনা প্রতœতত্ত্ব  বিভাগ জানায়, এ বিষয় তাদের সার্বক্ষণিক দৃষ্টি রয়েছে। বাজেট অপ্রতুলতার কারণে অনেক কিছুই করা সম্ভব হয়ে উঠে না। তবে দর্শনীয় স্থান হিসেবে স্থানীয়রা নিজেদের সম্পদ মনে করে দেখাশুনা করলে প্রতিষ্ঠানটির উন্নতি হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এমএম মাহমুদুর রহমান বলেন, সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে স্থানীয় প্রশাসনের বিশেষ নজড় রয়েছে। এ স্থাপত্যটি রক্ষা করা সরকারের পাশাপাশি জনগণেরও নৈতিক দায়িত্ব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Faisal ২০ জানুয়ারি, ২০১৭, ১১:৫১ এএম says : 0
আমার সৌভাগ্য হয়েছিল ঔ মসজিদ এ একবার নামাজ পরার, আর তখন দেখেছিলাম মসজিদের পশ্চিম পাশে অনেক বড় একটি পুরাতন কবর,এত বড় কবর আমি নিজ সরাসরি এর পূবে দেখিনি ?
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন