শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

কেউ রাখে না তাদের খবর

| প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ আনিস উর রহমান স্বপন, ধামরাই (ঢাকা) থেকে : কথায় বলে কর্তার গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই। কথাটা পুরোটাই উল্টো রয়েছে ঢাকার ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নে পাল্লী এলাকায় অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের আশ্রয়স্থলে। যা আদর্শ গ্রাম হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছে এলাকায়। অথচ বাস্তবে থাকলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট কোন দপ্তরেই নামের তালিকা নেই। সরকারি খাস জমিতে ৫২টি পরিবার ঘরবাড়ি নির্মাণ করে মাথাগোঁজার ঠাঁই নিয়ে বছরের পর বছর বসবাস করলেও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কোন কর্মকর্তা খোঁজ নেয়নি এখানকার বাসিন্দাদের। কে রাখে কার খবর এমনটাই হয়েছে এখানে। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের পাল্লী গ্রামের পাশে প্রায় ২৬ একর সরকারি খাস জলাশয় ছিল। এর একপাশে প্রায় ১০ একর জায়গার মধ্যে মাঝখানে পুকুরের জায়গা রেখে সরকারিভাবে তিন’পাশে ২০০৫/২০০৬ সালের দিকে ছিন্নমূল মানুষের আশ্রয়নের জন্য মাটি ভরাট করা হয়। এ ভরাটকৃত মাটি বর্ষা ও বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে প্রায় সমান হয়ে যায়। থেকে যায় শুধু সীমানা। অজ্ঞাত কারণে পরবর্তীতে ওই জায়গায় সরকারের পক্ষ থেকে আর কোন ধরনের তদরকি করা হয়নি। সরকারি তদরকি না থাকার কারণে বসবাসরত পরিবারগুলো একএক করে নিজেরাই একটু একটু করে মাটি ভরাট করে কোনরকম করে মাথাগোঁজার ঠাঁই করে নেয়। বসবাসরত পরিবারের লোকজন বলেন, বোটাবোটি (নির্বাচন) আইলেই আমাগো খবর নেয় এলাকার নেতাকর্মীরা। বোটাবোটি গেলে আর চেয়ারম্যান মেম্বারগো দেহা (দেখা) যায় না। উপজেলা থেইক্যাও কোন স্যার আহে না। আমরা কিমুন আচি না আচি কেউ দেহে না। তারা কষ্টের ভাষায় আরো বলেন, আমাগো ছেলে-মেয়েদের লেহা-পড়া করার জন্য একটা স্কুলও নাই। গভীর নলক‚প শৌচাগার ও কবরস্থানের মসজিদের জায়গা পর্যস্ত নেই। এমন বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য একটা রাস্তা পর্যন্ত নেই। এমনকি অনেক বাড়িতে বিদ্যুৎ পর্যন্ত নেই বাড়ির দলিলপত্র (কাগজ) নেই বলে। তবে অনেকেই বিদ্যুৎ পেয়েছে টাকা খরচ করে। এখানকার বাসিন্দাদের প্রতি বাড়ির সামনে বিশাল একটি পুুকুর থাকলেও তারা পুকুরে মাছ চাষ ও হাঁস পালন তো দূরের কথা গরু ছাগল গোসল পর্যন্ত করাতে পারে না। একটি প্রভাবশালী মহল স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মন্ত্রণালয় থেকে ইজারা নিয়েছে। ফলে এখানকার লোকজন মাছ চাষ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত আব্দুল লতিফ, আনোয়ার, আয়তন নেছা, ঠান্ডু বেপারী বলেন, পূর্বে আমাদের বাড়িঘর ছিল না অন্যের বাড়িতে থাকতে হতো। পরের কথা শুনতে হতো অনেক। এখন অন্যের কথা শুনতে না হলেও কবে যেন এখান থেকে আমাদের চলে যেতে হয়। কেন চলে যেতে হবে এমন প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন বসবাসের ১০/১২ বছর গেলেও আমাদের বাড়ির কোন তালিকা করেনি সরকারের লোকজন। অনেকে আবার বাড়ি তৈরি তা আবার মৌখিক হস্তান্তর করে অন্যত্র চলেও গেছে এমন অভিযোগও রয়েছে। এ ব্যাপারে গত কয়েকদিন আগে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার হেলালুদ্দীন আহম্মদ এরসঙ্গে কথা হয় ধামরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে। এ সময় দৈনিক ইনকিলাবের উপজেলা সংবাদদাতা ও ধামরাই প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আনিস উর রহমান স্বপন সরেজমিনে পুরো বিষয়টি তুলে ধরেন। পরে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে ওখানে সরজমিনে গিয়ে বসবাসরত পরিবারের তালিকা তৈরি করে বিস্তারিত রির্পোট দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ তমিজ উদ্দিন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন