নুরুল আলম বাকু, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে : পৃথিবীতে রয়েছে সব বিচিত্র রং, গঠন, চেহারা, চরিত্র ও বিচিত্র মনের মানুষ। নানা মানুষের মধ্যে রয়েছে বিচিত্র সব শখ। কেউ পরের সুখেই অনুভব করে নিজের সুখ। আবার নিজের সুখের জন্য অনেক মানুষ অনেক কিছু করে থাকে। আবার এমনও মানুষ রয়েছে নিজের প্রতিভায় মানুষকে অসম্ভব কিছু দেখিয়ে আনন্দ পায়। এমনই এক মানুষ যার নাম সিরাজুল ইসলাম (৫০)। সে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া গ্রামের মৃত হারু মালিথার বড় ছেলে। সংসার জীবনে রয়েছে তার স্ত্রী ও দু’পুত্র। তিনি প্রতি ঘণ্টায় ১২ কিলোমিটার বেগে একটানা ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত দৌড় দিতে পারেন। তিনি দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে এভাবে রাস্তায় দৌঁড়ান। এ পর্যন্ত দৌড় দিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় গিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, যশোর ও ভেড়ামারা। গত কয়েক দিন আগে নিজ বাড়ি থেকে সিরাজ দৌড় দিয়ে দর্শনা পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড মোড়ে আসেন। এসময় উৎসুক জনতা তাকে দেখে জিজ্ঞাসা করে, চাচা আপনি মাঝে মধ্যে দেখি দৌড়ে আসেন আবার দৌড়ে চলে যান। আসলে আপনি এ রকমভাবে দৌঁড়ান কেন? জবাবে মিষ্টভাষী সিরাজ সহজ-সরল ভঙ্গিতে বলেন, বাবা আমি একজন চাষি মানুষ। আমার শখ দৌড়ানো। দৌড়িয়ে আমি আনন্দ পাই। আমি সপ্তায় একটানা কমপক্ষে ২৫ কিলোমিটার না দৌঁড়ালে ভাল লাগে না। আমি প্রায় ৩০ বছর ধরে এভাবে দৌড় দিয়ে আসছি। এতে আমি যেমন আনন্দ পাই, তেমনি আমার দৌড়ানো দেখে অনেক মানুষও মজা পায়। আমি জীবনে বিভিন্ন দৌঁড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছি। বছর দুয়েক আগে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আমি চুয়াডাঙ্গা থেকে দর্শনা পর্যন্ত ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছি। আমি বুঝি, আসলে মানুষের মনের জোর থাকলে অনেক অসম্ভবই সম্ভব হয়ে ওঠে। মনের জোরই বড় জোর। মানুষের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হলো মনোবল। আর আল্লাহ যদি আমাকে বাঁচিয়ে রাখেন তাহলে দৌড় দিয়ে দেশের সবকয়টি জেলা পাড়ি দেবার ইচ্ছা আছে। তিনি বলেন দৌঁড়ালে শরীর ও মন ভাল থাকে। তাই যাদের সামর্থ্য আছে শরীর ভাল রাখার জন্য প্রতিদিন তাদের কিছু সময় দৌড়ানো উচিৎ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন