মোহাম্মদ আবদুল গফুর : গত ২০ জানুয়ারি শুক্রবার ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এক নতুন যুগ, এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ গ্রহণের পরই ট্রাম্প সর্বপ্রথম যে ঘোষণা দান করেছেন তা হলো, আমরা বিশ্বের গতিধারা ঠিক করব। বর্তমান বিশ্বের রাজনৈতিক ঘটনাবলীর দিকে বিশ্লেষকের দৃষ্টিতে যারা তাকায় তারা জানেন কেউ পছন্দ করুক, বা না করুক এ ঘোষণা এক নির্মম বাস্তবতা। যে কোন দিক দিয়ে বিচার করলে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠবে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই বর্তমান বিশ্বে সব দিক বিবেচনায় সর্বাপেক্ষা ক্ষমতাধর রাষ্ট্র। পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম উভয় গোলার্ধের কোন রাষ্ট্রই বর্তমান বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ বিশেষ অবস্থানের বাস্তবতাকে অস্বীকার করতে পারে না। প্রশ্ন ওঠে, তা হলে এই অনস্বীকার্য বাস্তবতাকে নতুন করে উচ্চারণের প্রয়োজন পড়লো কেন?
এ প্রশ্নের আংশিক উত্তর মিলবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারাভিযানের প্রধান প্রতিপাদ্যের মধ্যে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকালীন তাঁর প্রচার অভিযানের মূল বক্তব্যই ছিল : ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’। তাঁর এ বক্তব্যের অর্থ হলো আমেরিকা একদা গ্রেট ছিল কিন্তু এখন নেই। তাই আমেরিকাকে পুনরায় গ্রেট বানাতে হবে তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত করে। তাঁর এ আহ্বান ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র্রের জনগণের প্রতি। লক্ষ্য করার ব্যাপার যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর জনগণ কিন্তু তার এই আহ্বানে সাড়া দেয়নি। জনগণের অধিকাংশ ভোট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাননি, জনগণের অধিকাংশ ভোট পেয়েছেন ট্রাম্পের ডেমোক্রাট প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটন। কিন্তু আমেরিকার সংবিধানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে বিশেষ বিধান রয়েছে তার কল্যাণে পপুলার ভোট কম পেয়েও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ট্রাম্প অধিকাংশ ইলেকটরাল কলেজের সমর্থন লাভ করার মাধ্যমে। ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ডেমোক্রাট প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে কম পপুলার ভোট পেয়েও অধিকাংশ ইলেকটরাল কলেজের সমর্থন লাভ করায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।
এ নিরিখে বলা যায় মার্কিন জনগণের অধিকাংশের ভোট না পেয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন-সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যের সুযোগে অধিকাংশ ইলেকটরাল কলেজের সমর্থন লাভ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ জনগণের সমর্থন না পাওয়া সত্ত্বেও মার্কিন সংবিধানের বৈশিষ্ট্যের সুযোগে অধিকাংশ ইলেকটরাল কলেজের সমর্থন লাভের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়াটা ট্রাম্পের জন্য নিশ্চয়ই অমর্যাদাজনক হয়েছে, যদিও এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান মাফিক তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়াতে কোন অসুবিধা হয়নি।
আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় গণমাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সংক্রান্ত যেসব খবর প্রকাশিত হচ্ছিল তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ ব্যাপারে যে ব্যাপক ধারণা সৃষ্টি হচ্ছিল তাতে সকলেই ধরে নিয়েছিলেন ট্রাম্প নন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনই ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংবিধানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যের সুযোগে কম পপুলার ভোট পেয়েও অধিকাংশ ইলেকটরাল কলেজের ভোট পাওয়ার সুবাদে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে গেছেন। এতে নিয়মতান্ত্রিকতার মাপকাঠিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বৈধ বিবেচিত হলেও অধিকাংশ পপুলার ভোটে প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় তার প্রেসিডেন্ট হওয়াটাকে মার্কিন জনগণ খুব একটা সুনজরে দেখেনি।
তার প্রমাণ পাওয়া যায় তার প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথগ্রহণকালীন সময়ে সমগ্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী ট্রাম্প-বিরোধী বিক্ষোভ সংঘটিত হওয়া থেকে। যেখানে সাধারণত কোন দেশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঘটনা জনগণের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দের সঞ্চার করে থাকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তার বিপরীত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সংক্রান্ত বিধানের বৈশিষ্ট্য যে আদলেই ত্রুটিপূর্ণ তাও নতুন করে প্রমাণিত হলো। এককালের গণতান্ত্রিক বিশ্বের নেতা হিসাবে পরিচিত এবং বর্তমান বিশ্বেরও অন্যতম প্রধান গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দ তাদের সংবিধানের এই অবাঞ্ছিত ত্রুটি সংশোধনের বিষয়ে কতটা আগ্রহ প্রদর্শন করেন সেটাও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিশ্বের দেখার বিষয়।
এত গেল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সংক্রান্ত বিধানের অন্তর্নিহিত দুর্বলতার কথা। এর সাথে যদি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচ্চারিত কিছু কথাবার্তা বিবেচনায় আনা যায় তা হলে মনে হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামল একটি কালো অধ্যায়ই যোগ করতে পারে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর নতুন প্রেসিডেন্ট যেভাবে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে নিন্দা-সমালোচনা শুরু করেছেন তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল করে দিতে পারে।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গণমাধ্যমের অন্যতম রয়টার্স ও ওয়াশিংটন পোস্টের কল্যাণে ইতিমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সম্পর্কে যেসব প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে গভীর হচ্ছে রাজনৈতিক বিভেদ। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী নগরীতে কিভাবে বিক্ষোভে ফেটে পড়ছে তার বর্ণনা দিতে গিয়ে গত মঙ্গলবার ঢাকার একটি জাতীয় দৈনিকে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তার অংশবিশেষ নিচে তুলে ধরা হলো ঃ
“শ্লোগানমুখর লাখ লাখ মানুষ। হাতে পোস্টার-ফেস্টুন কিংবা প্ল্যাকার্ড। ‘ট্রাম্পের ঘৃণাই আমাদের ভালবাসা’; কিংবা ‘দেয়াল নয়, সেতু গড়–ন’- এমন অনেক শ্লোগান লেখা। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলছে সবাই। অনেকেরই মুখ রঙমাখা। নারীদের মাথায় প্রতিবাদের প্রতীক গোলাপি টুপি- ‘পুসি হ্যাট’। হোয়াইট হাউস এলাকা দেখতে দেখতে গোলাপি হয়ে উঠেছে। শহর তলিতে এক তিল ফাঁক নেই। ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে শ্লোগানে প্রকম্পিত গোটা রাজধানী। শনিবারের নারী বিক্ষাভের ছবিটা এরকমই ছিল।
‘ওয়াশিংটনের ইতিহাসে এত বড় বিক্ষোভ আর হয়নি। বলা হচ্ছে, দেশটিতে যে এখন আগের চেয়ে রাজনৈতিক বিভেদ অনেক গভীর হয়ে পড়েছে- এ ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ। এই দিন মিছিলে আসা নারী-পুরুষ ও পর্যবেক্ষকদের বিভিন্ন মন্তব্য থেকেও এদিকটাই স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
আগের দিন অভিষেকে দেশটির ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ভাষণ দেন, মানুষের কাছে তা মনে হয়েছিল কট্টর জাতীয়তাবাদ আর রক্ষণশীলতার চূড়ান্ত অভিব্যক্তি। ট্রাম্পের কণ্ঠে দেশের মানুষের বিভেদ ঘোচানো ও ঐক্যবদ্ধ করার ডাক বলতে গেলে ছিল না। তিনি কেবল নিজের সমর্থকদের উদ্দেশ্যেই কথা বলেছেন। শিল্পে বিধ্বংসী অপরাধপ্রবণতার স্বর্গ হিসাবে তুলে ধরেন অতীতে যুক্তরাষ্ট্রকে। এছাড়া পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ট্রাম্প নির্বাহী ক্ষমতাবলে যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাও ব্যাপক দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই নারীদের এই প্রতিবাদ মিছিল সত্যিকার পক্ষেই উৎসাহ-উদ্দীপনার বিষয় বলে মনে করেছেন অনেকে। মিছিলে আসা এক নারী তার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমি একটি নতুন ইতিহাসের অংশ হয়ে গিয়েছি।’
নিউইয়র্কের ইথাকা থেকে আসা পরিবেশ আইন বিশেষজ্ঞ ম্যারি ফস্টার এবারই প্রথম কোন রাজনৈতিক কর্মকা-ে অংশে নেন। তিনি মনে করেন, ইতিহাসের সব চেয়ে নোংরা মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নারী ও অভিবাসন বিদ্বেষী প্রচারে দেশটি আগেই বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। বিতর্কিত ধনকুবেরের জয় ও অভিষেকের মধ্য দিয়ে এ বিভেদ আরও গভীর হয়েছে। ৪২ বছর বয়সী নারী ফস্টারের ভাষায়, ‘আমরা আরও বিভক্ত হয়ে পড়েছি।’ এখন মাঝামাঝি অবস্থানের সুযোগ অবশিষ্ট নেই। অতীতে তিনি ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান দু’দলকেই ভোট দিয়েছিলেন। তবে এ মুহূর্তে ট্রাম্পের রাষ্ট্রনীতিগত অনেক সিদ্ধান্ত তাকে আতঙ্কিত করছে যা নারী ও সংখ্যালঘুদের জন্য বিপজ্জনক। তার কথায় আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য অনেক ইস্যু রয়েছে কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, আমরা আগে যতটা বিভক্ত ছিলাম এখন তার চাইতে বেশি বিভক্ত হয়ে পড়েছি। শনিবার ফস্টারের মত লাখ লাখ নারী তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে নেমে আসেন।
পিও রিসার্চের একটি জরিপে উঠে এসেছে একই আশঙ্কার চিত্র। জরিপে অংশ নেয়া ৮৬ শতাংশ নাগরিকই মনে করেন দেশ এখন রাজনৈতিকভাবে গভীর বিভক্ত। ট্রাম্পের শাসনামলে এ বিভেদ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক পর্যবেক্ষক। তাদের অভিমত বিভিন্ন সময়ে বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে ট্রাম্পের লাগামহীন ও উস্কানিমূলক মন্তব্যও এর অন্যতম কারণ।
ইত্যকার নানা কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পর থেকে বিশ্বে নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এক ধরনের কট্টরপন্থী মার্কিন নাগরিক যেমন এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল প্রভাব বৃদ্ধির স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন তেমনি বাস্তবতাপন্থী মার্কিন রাজনীতিকদের অনেকেই ট্রাম্পের অবাস্তব ও লাগামছাড়া কথাবার্তায় আমেরিকার প্রতি বিশ্ব নেতৃত্বের এত দিনের আস্থায় চিড় ধরার আশঙ্কা করছেন। একথা অনস্বীকার্য যে সোভিয়েত-পরবর্তী বর্তমান বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সব চাইতে উন্নত ও ক্ষমতাশালী রাষ্ট্র হিসাবে সর্বত্র স্বীকৃত। কিন্তু একটি রাষ্ট্রের প্রভাবশালী হওয়াটাই তার উন্নত মর্যাদা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কট্টরপন্থী শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও তার লাগামছাড়া বিভিন্ন কথাবার্তায় এবং ঘোষিত বিভিন্ন নীতির কারণে ইতোমধ্যেই মানবিকতাবোধসম্পন্ন মার্কিন নাগরিকদের কাছে আস্থা হারানো শুরু করেছেন। অপরপক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট হিসাবে সদস্য সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার তৃতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হতে পারতেন যদি সাংবিধানিক বিধান-এ পথে তার জন্য বাধা হয়ে না দাঁড়াত।
ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ জনগণের সমর্থন লাভ না করা সত্ত্বেও মার্কিন সংবিধানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সংক্রান্ত বিধানের বদৌলতে দেশের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পেরেছেন এটা তার জন্য বিশেষ মর্যাদা বহন করে আসেনি। দেশের অধিকাংশ মানুষের সমর্থন লাভে ব্যর্থ হয়েও তথাকথিত অধিকাংশ ইলেকটরাল কলেজের অধিকাংশের ভোটে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন, এটা শুধু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্যই লজ্জার কথা নয়, মার্কিন গণতন্ত্রের জন্যও এটা লজ্জার কথা। এককানের গণতান্ত্রিক বিশ্বের নেতা হিসাবে এবং বর্তমানেও গণতান্ত্রিক বিশ্বের অন্যতম নেতা হিসাবে পরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে এটা খুব শ্লাঘার বিষয় নয়। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দ তাদের সংবিধানের এই গণতন্ত্র-বিরোধী গ্লানি থেকে মুক্তি পেতে বাস্তবে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন কি?
মার্কিন নেতৃবৃন্দ গণতন্ত্রের প্রশংসায় মুখে ফেনা ভুলতে অভ্যস্ত হলেও তাদের অনুসৃত সা¤্রাজ্যবাদী নীতির কারণে বিশ্বের মুক্তিকামী জনতার কাছে তাদের দু’মুখো নীতি ইতোমধ্যেই তাদের জন্য যথেষ্ট দুর্নামের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পপুলার ভোটে পরাজিত হয়েও তথাকথিত ইলেকটরাল কলেজের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এসব প্রথা বহাল রেখে অধিকতর গ্লানির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশটি। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সাথে সঙ্গতিহীন এসব অসঙ্গতি থেকে কবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুক্তি পাবে সে প্রশ্ন রয়েই যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন