রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

পুটিয়া নদে বাঁধ দিয়ে মাছ নিধনের অভিযোগ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে

| প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) উপজেলা সংবাদদাতা : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কের কুইট্টা সেতুর দুই পাশে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল তিতাস নদীর শাখা পুটিয়া নদে বাঁধ দিয়ে পানি সেচে মৎস্য নিধনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। এতে সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের কুইট্টা হাওর এলাকার উন্মুক্ত জলাশয়ে দেশীয় জাতের মাছের বংশবৃদ্ধি হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। সরেজমিন (২০-০১-১৭) দেখা যায়, পুটিয়া সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম পাশের বিশাল এলাকাজুড়ে (প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার এলাকা) নদে বাঁধ দিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। গত ১১ জানুয়ারি থেকে বাঁধের দুই দিকে সাতটি সেচযন্ত্র দিয়ে সেচ কাজ চলছে। বিশাল এলাকা জুড়ে পানি শুকিয়ে মাছ নিধনের পাশাপাশি কৃষি জমিতে পানির সংকটও দেখা দেওয়ার উপক্রম হয়েছে। টানা দুই সপ্তাহ ধরে নদের পানি সেচে মাছ নিধনের এ আয়োজনে অদৃশ্য কারণে প্রশাসন রয়েছে নীরব। এলাকার মৎস্যজীবী ও কৃষকদের অভিযোগ, নোয়াগাঁও ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের জজ মিয়া ও কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ধর্মতীর্থ গ্রামের দুর্গাচরণ দাস সাত-আট বছর ধরে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পুটিয়া নদে সেচ দিয়ে নির্বিচারে মৎস্য নিধন করে আসছেন। এলাবাসী তাঁদের কাছে অসহায়। নদে বাঁধ দিয়ে সেচ কাজ পরিচালনাকারী উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের মনিরবাগ গ্রামের সজল দাস (৩৫) বলেন, ‘আমি জজ মিয়া ও দুর্গাচরণ দাসসহ চার ব্যক্তির কাছ থেকে নয় লাখ ট্যাহা দিয়া এক বছরের জন্য জমা (ইজারা) নিছি। এর জন্য সরকারের সাথে যা করার তারাই করছে।’ নদের পাড়ের কৃষক আরাধন মিয়া (৬০) বলেন, ‘সেচের কারণে নদের পানি কমে যায়, এতে কৃষিজমিতে পানির সংকট দেহা দেয়। প্রতি বছর প্রায় কয়েকশ একর জমি নষ্ট অয়। অনেকে বাধ্য অইয়া দুই মাসের জন্য জমির পাশে পাম্প (অগভীর নলকূপ) বসায়। আমরা এর বিহিত (সমাধান) চাই।’ উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের কানুনগো আনোয়ার হোসেন বলেন পুটিয়া সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম পাশে দুই ব্যক্তি ২৬ একর জায়গায় মাছ ধারার জন্য বন্দোবস্ত নিয়েছেন। এখন তারা ‘মাছ নিধনের লক্ষ্যে কয়েশ একর জায়গাজুড়ে নদে বাঁধ দিয়ে পানি সেচের মতো গর্তিত কাজ করছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হবে।’ এ ব্যাপারে জজ মিয়া ও দুর্গাচরণ দাস মুঠোফোনে বলেন,‘ এখানে মাছ ধরার জন্য সরকারকে রাজস্ব দিয়েছি সাড়ে সাত লাখ টাকা। সেচ না দিলে এত টাকা উসুল করবো কেমন করে। তাই বলা চলে সরকারি নীতিমালা মেনেই মাছ শিকার হচ্ছে।’ সেতুর আশপাশের জলাশয়ের মালিক জজ মিয়ার বলে তাঁরা দাবি করেন। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মকসুদ হোসেন বলেন,‘এভাবে উন্মুক্ত জলাশয়ে বাঁধ ও সেচ দিয়ে মাছ নিধন করা সম্পূর্ণ গর্হিত কাজ। এতে মাছের স্বাভাবিক বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে শিগগির ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধŸতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন