রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

আলুর মূল্য কমে যাওয়ায় হতাশ মীরসরাইয়ের কৃষক

| প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আমিনুল হক, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে : গত মৌসুমেও ৭ গন্ডা জমিতে আলুচাষ করেছিলেন ১নং করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর গ্রামের মমতাজ মিয়া। গেলবার থেকে এবার ও আলু ঘরে তুলতেই কমে গেল কমে গেল দাম। তাই বাজারে না তুলে সব আলু ঘরেই তুলে রাখলেন তিনি। কিন্তু পর্যবেক্ষক মহলের মতে মীরসরাই উপজেলার উপযোগী ব্যাপক অঞ্চলে মাটি নির্বাচন করে প্রয়োজনীয় কৃষি পরামর্শে আলুতে বিপ্লব সম্ভব। দুর্গাপুর ইউনিয়নের কৃষক আবুল হোসেন ও নিজের জন্যই চাষ করেছে ৪ গন্ডা জমিতে। একই জমিতে ধনিয়া, কাচা মরিচ আর, বেগুন দেয়ায় ঘরের সবজি কেনার চাপ টা নেই। বর্ষা আর খরার আশংকায় আগাম চাষ করার ঝুকি নিয়ে আগামই অন্যজমিতে চাষ করে অনেকট টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানান তিনি। একই গ্রামের কৃষি সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষক আনোয়ারুল হক জানান মীরসরাই উপজেলার অগণিত খাল ছরার পাশে বেলে মাটিসহ আলু উৎপাদন এর অনুকূল সম্ভাবনা ব্যাপক এখানে অনায়াসে আগাম আলু চাষ সম্ভব।  শুধু প্রয়োজন কৃষি বিভাগের উদ্যোগে পতিত সকল জমিতে প্রচারণা ও প্রণোদনা। আবার  এই বিষয়ে একমত প্রকাশ করেন কৃষি বিভাগ ও। মীরসরাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ সুপারভাইজার নুরুল আলম জানান এবার ও উপজেলার ১ নং করেরহাট, ২ নং হিঙ্গুলী, ৩ নং জোরারগঞ্জ ও ৮নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ৬০ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদ করা হয়। এবারের লক্ষমাত্রা ৯০ টন। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার আরো কমেছে বলে জানান তিনি। আগাম চাষ না করায় উত্তরাঞ্চলের আলু এখানে এসে পৌঁছানোর পর এখানকার আলু উত্তোলন শুরু হবার কারনে উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছে না বলে জানান কৃষি সুপারভাইজার। নানাভাবে প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা কাটানোর উপায় অবলম্বন করে যদি আলু চাষ করা হয় তাহলে লাভজনক হতে পারে এই অঞ্চলের আলু চাষাবাদ। অনেক পর্যবেক্ষকই মনে করছেন এখানকার বিপুল পরিমাণ পতিত জমিতে আলুর ব্যাপক চাষাবাদ এর অনুকূলে। মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান আমরা আগামী দিনে অবশ্যই কৃষকদের এই বিষয়ে বিশেষ সেমিনার করবো। কৃষকরা আরো জানান, বর্তমানে বাজারে আলু বিক্রি করে যে অর্থ পাওয়া যাচ্ছে তাতে লাভ তো দূরের কথা খরচই উঠছে না।  তাই আগাম চাষই হতে পালে লাভজনক উদ্যোগ। এবার ও শুরুতে ৭০ টাকা করে আলু বিক্রি হয়েছে। এখন যেসব আলু ১২ টাকা। এতটা স্বল্প মূল্যেও দরুন কৃষকরা ও আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। পারছে না উৎপাদন ব্যয় পোষাতে। উল্লেখ্য যে, আমাদের অন্যতম অর্থকরী ফসল এই আলু। প্রতি বছর এ দেশে আলুর উৎপাদন যে পরিমাণে হিমাগারে রাখা যায়  তার চেয়ে বেশি। তার পরও খাদ্য হিসেবে আলুর ব্যবহার দিন দিন এমনভাবে বেড়ে গেছে যে, বাজারে আলুর দাম কখনোই আর কম থাকছে না। সে জন্য প্রতি বছরই আলুর মৌসুম শুরুর আগে শুধু কৃষকরাই নয, যারা কৃষি কাজের সাথে জড়িত এমন অনেকেই আলু চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। কারণ আলু চাষে স্বল্প সময়েই লাভ বেশি। কিন্তু কিছু বিষয়ের প্রতি ও লক্ষ না রাখায় আলু চাষে অনেকেই কাংক্ষিত ফল বা ফলন পান না।  মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন ছরা ও খালগুলোর পাড়গুলো অনেকভাবে আলু চাষে সমৃদ্ধ বলে স্বীকার করেন কৃষি বিভাগ। প্রথমেই জমি নির্বাচনে খেয়াল রাখতে হবে। এরপর প্রথম দুএক বছর সার্বক্ষণিক কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে সেই অভিজ্ঞতার আলো ভালো ফলন অব্যাহত রাখা খুবই সহজ বলে জানান মীরসরাই উপজেলা কৃষি বিভাগ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন