শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

নির্ধারিত সময়ের পরও সম্পন্ন হয়নি অনুবাদ

ঢাবি অধ্যাদেশ-৭৩

| প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এহসান আব্দুল্লাহ : ৬ মাসে অনুবাদ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের ৪ বছর পরও শেষ হয়নি ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ-৭৩’-এর অনুবাদ সম্পন্ন করার কাজ। ২০১০ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ১৩ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে বিষয়টির অনুমোদন হয় এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তৎকালীন সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান এবং অ্যাডভোকেট এ এফ এম মেজবাহ উদ্দিনকে অনুরোধ করা হয়। এরপর দীর্ঘদিন ধরে এ কাজটি কাক্সিক্ষত গতিতে না এগুতে থাকলে পরবর্তীতে পুনরায় ৩ অক্টোবর ২০১১ তারিখে বিষয়টি সিন্ডিকেটে উত্থাপন করা হয়। ঐ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৮ নভেম্বর ২০১১ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের দফতর থেকে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বরাবর অর্থ ছাড় করা হয়। সে সময় অনুবাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাংলা একাডেমিকে ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩২ টাকা প্রদান করে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সে সময় বাংলা একাডেমির ভাষা ও সাহিত্য উপ-বিভাগকে এ অধ্যাদেশটি অনুবাদের কাজ ততত্তবধান করার দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল। তারা অধ্যাদেশের প্রথম খন্ড অনুবাদ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করলেও পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পুনঃ মূল্যায়নে তাতে নানা অসংগতি লক্ষ্য করা যায়, ফলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেটি পুনরায় সংশোধন ও সম্পূর্ণ করার দায়িত্ব প্রদান করে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ভীষ্মদেব চৌধুরী ও আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহকে। এ ব্যাপারে ড. ভীষ্মদেব চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনুবাদের কোন দায়িত্ব তাকে দেয়া হয়নি এবং প্রতিবেদকের কাছে এই তথ্যের সোর্স জানতে চান। ড. মো. রহমত উল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সব জানাবেন বলেন এবং প্রতিবেদককে কোন তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বাংলা একাডেমি যে অনুবাদ জমা দিয়েছে তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুনরায় যথাযথভাবে মূল্যায়ন করে দেখছে। যেহেতু এটা একটা আইন-সংকলন তাই এটি অনুবাদের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ বিশেষ দৃষ্টি রাখছে যাতে কোন ধরনের কোন অসংগতি না থাকে।
প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান বলেন, বাংলা একাডেমির করা অনুবাদে নানা অসংগতি থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের উদ্যোগে এটির অনুবাদ সম্পন্ন করার কাজ হাতে নিয়েছে। তিনি আরো বলেন, আইনি ধারার অনুবাদ সাধারণত সাহিত্যের অনুবাদের মতো নয় বলেই কর্তৃপক্ষ তা যথেষ্ট সতর্কতার সাথে করছে যাতে পরবর্তীতে কোন অসংগতি না থাকে, ফলে অনুবাদে কিছু সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বর্তমানে সর্বোচ্চ গুরত্বের সাথে দেখছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. এনামুজ্জামান এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানালেও তিনি বলেন, যতটুকু জানি প্রো-ভিসি (প্রশাসন) ড. মো. আখতারুজ্জামানের তত্তবধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষক বর্তমানে এ অনুবাদের কাজ দেখাশোনা করছে, এর বাইরে আমি আর কিছু বলতে পারবো না।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে অধ্যাদেশ ’৭৩-এর জন্য নির্ধারিত পাতা থাকলেও তাতে অধ্যাদেশ সম্পর্কিত কোন তথ্যই দেয়া নেই এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা সংস্থা থেকেও সম্প্রতি গত কয়েক বছরে অধ্যাদেশের কোন মুদ্রণ না হওয়াতে তা পাওয়া যায় না বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা সংস্থার বিক্রয় কেন্দ্রেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগীয় সেমিনার ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে অধ্যাদেশের কপি সংরক্ষিত থাকার কথা থাকলেও খোদ আইন বিভাগেই নেই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার এ আইনের কোন কপি। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ১৯৭৩ সালের মুদ্রিত অধ্যাদেশের ১ম খন্ড সংরক্ষিত থাকলেও পরবর্তীতে সংশোধিত অধ্যাদেশসমূহের কোন কপি সংরক্ষিত নেই।
উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালের রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ ১১-এর আদেশবলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ-৭৩ প্রণীত হয়। যা ১৯৭৪ সাল থেকে কার্যকর করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন