রাবি রিপোর্টার : রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) পরবর্তী বর্ষে উত্তীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ন্যূনতম ক্রেডিট অর্জনের নতুন পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল সকাল ৮টা থেকে রুয়েটের ২০১৩-২০১৪ থেকে ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন তারা। তবে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন অযৌক্তিক দাবি বলে করেন রুয়েট প্রশাসন।
সূত্রে জানা যায়, রুয়েটে ১৩ সিরিজের ব্যাচ বা ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে পরবর্তী বর্ষে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম ৩৩ ক্রেডিটপ্রাপ্তি বাধ্যতামূলক করা হয়। এই পদ্ধতিতে স্নাতক পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীদেরকে ১৬০ ক্রেডিটে পরীক্ষা দিতে হয়। প্রথম বর্ষের দুই সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষায় ৪০ ক্রেডিটের মধ্যে শিক্ষার্থীরা ৩৩ ক্রেডিট পেলে পরবর্তী বছরে বর্ষে পদার্পণের কথা বলা হয়। ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ এই দুই শিক্ষাবর্ষের মোট ১৫০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৫০ জন শিক্ষার্থী ৩৩ ক্রেডিট অর্জন করতে পারেনি। ফলে ইয়ার ড্রপের মুখে পড়ে তারা।
এদিকে ৩৩ ক্রেডিট পদ্ধতি বাতিলের দাবি জানিয়ে গত ২২ জানুয়ারি ভিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছিলো শিক্ষার্থী। স্মারকলিপিতে তারা প্রশাসনকে তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন এই তিন দিনে কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়ার এই আন্দোলন শুরু করেছে তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ৩৩ ক্রেডিটের এ পদ্ধতির কারণে শিক্ষার্থীরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হবে। বিশেষ করে, রুয়েটে ক্লাস-ল্যাবের সঙ্কট থাকার কারণে যারা ক্রেডিট অর্জন করতে পারবে না তাদেরকে অন্য ব্যাচের সাথে ক্লাস বা ল্যাবে থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে জায়গা ও শিক্ষাগত দুই দিকেই সমস্যা হবে। এছাড়া কোন শিক্ষার্থী অসুস্থতা বা কোনো সমস্যার কারণে পরীক্ষা দিতে না পারলে তার এক বছরের বেশি সময় ক্ষতি হবে। এ সময় তারা এ পদ্ধতি বাতিল করে আগের পদ্ধতি পুনরায় চালুর দাবি করেন। পাশাপাশি তাদের দাবি মানা না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি পালন করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
তবে তাদের এ দাবি অযৌক্তিক উল্লেখ করে রুয়েটের ভিসি প্রফেসর ড. রফিকুল আলম বেগ বলেন, ‘ফেল করে কি কখনো উপরের ক্লাসে উঠা যায়? আমরা তাও তো একটি/দুটি বিষয়ে ফেল করলেও যেন পরের বর্ষে উঠতে পারে সে ব্যবস্থা রেখেছি। ওরা তো সব বিষয়ে ফেল করেও পরবর্তী বর্ষে উঠার দাবি করছে। এটা কি সম্ভব।’ উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৫ সালের ১১ আগস্ট একই দাবিতে প্রশাসন ভবনের সামনে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। তবে প্রশাসনের অনড় সিদ্ধান্তের কারণে সেবার সফল হয়নি শিক্ষার্থীরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন