রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দূরত্ব কমলেও নৌযানের ভাড়া কমেনি ১ টাকাও

কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুট

| প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শিবচর (মাদারীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : কাওড়াকান্দি থেকে স্থানান্তরিত কাঁঠালবাড়ি ঘাট ইলিয়াছ আহমেদ চৌধুরী ঘাট স্থানান্তরের এক সপ্তাহ না পেরোতেই এখন যাত্রীতে ভরপুর। দূরত্ব কমে পারাপারে কম সময় লাগা, সুবিস্তৃত এলাকায় আধুনিক সুবিধা নিয়ে নতুন ঘাট দিয়ে পারাপারে বেড়েছে যাত্রী সংখ্যা আর যানবাহনও সহজে পার হচ্ছে। নৌ পথের দূরত্ব কমে পারাপারে সময় ও জ¦ালানী ব্যয় কম হলেও নৌযানে ভাড়া কমানোর কোন লক্ষণ চোখে পড়ছে না। উল্টো সড়কপথে দূরত্ব বাড়ায় যানবাহনগুলোতে ভাড়া বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এতে করে স্বস্তি নিয়ে পার হওয়া দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা চরম ক্ষুব্ধ। তবে লঞ্চ মালিকরা এ দায় দিচ্ছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিএর কোন পদক্ষেপ না নেয়ার ওপর। জানা যায়, পদ্মা সেতুর নদী শাসন কাজের জন্য গত ১৫ জানুয়ারি কাওড়াকান্দি ফেরি ঘাট কাঁঠালবাড়ি ইলিয়াছ আহমেদ চৌধুরী দাদাভাই ঘাটে স্থানান্তরিত হয়। গত ২০ জানুয়ারি লঞ্চ ও স্পীডবোট ঘাটও নতুন এ ঘাটে স্থানান্তরিত হওয়ার পরপরই এখন যাত্রীতে ভরপুর। নুতন ঘাট বৃহত্তর ২৩ একর জমিতে ১৫ কোটি টাকা ব্যয় হয় এতে। ৪টি ফেরি ঘাট, ২টি লঞ্চ ঘাটসহ আলাদা আলাদা পল্টুন ও পার্কিং ইয়ার্ডসহ রয়েছে আধুনিক সুবিধা। যাত্রীরাও খুশি দূরত্ব কমায় তারাতাড়ি পার হতে পেরে। নৌপথে দূরত্ব কমলেও কাঁঠালবাড়ি পৌঁছতে যানবাহনগুলোকে পদ্মা সেতুর এপ্রোচ সড়কসহ বর্তমানে সাড়ে ৭ কিলোমিটার সড়ক পথ বাড়তি ঘুরে আসতে হচ্ছে। ফলে কাঁঠালবাড়ি ঘাট হয়ে চলাচলরত বরিশাল, খুলনা, মংলা, পটুয়াখালী, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের দূরপাল্লার ও আভ্যন্তরীণ সকল যানবাহনে ভাড়া বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। এরুট হয়ে প্রতিদিন সহ¯্রাধিক যানবাহন বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। বেশকিছু রুটে বাড়তি ভাড়া আদায়ও শুরু হয়েছে। বিস্ময়কর হলেও সত্য যে নৌপথের দূরত্ব সাড়ে ৫ কিলোমিটার কমলেও এখন পর্যন্ত  ফেরি, লঞ্চ বা স্পীডবোটে ভাড়া কমানোর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। ফলে যাত্রীদের লঞ্চ ভাড়া পূর্বের মতো ৩৫ টাকা হারে ও স্পীডবোটে ১৫০শ’  টাকা আদায় করা হচ্ছে। ফলে এ রুটের ৮৭ টি লঞ্চ  ২ শতাধিক স্পীডবোটে বাড়তি ভাড়া গুনেই যাত্রীদের পারাপার হতে হচ্ছে। তাই পারাপারে স্বস্তি থাকলেও যাত্রীদের মধ্যে ভাড়া গুনতে গিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে। লঞ্চ যাত্রী আবুল কালাম বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ঘাট সরালো এতে আমাদের নৌপথে দূরত্ব কমে ভোগান্তি কমেছে। কিন্তু নৌপথের দূরত্ব কমলেও লঞ্চ ভাড়াতো কমানো হলো না। স্পীডবোট যাত্রী শাহানা বেগম বলেন , আগে শিমুলীয়া থেকে কাওরাকান্দি যেতাম দেড়শ টাকা ভাড়া দিয়ে আর এখন কাঁঠালবাড়ি ঘাটেও দেড়শ টাকাই ভাড়া নিচ্ছে এটা কেমন কথা। দূরত্ব যেহেতু কমলো তাহলে সরকার ভাড়া কমাচ্ছে না কেন। ফরিদপুর বাস মালিক গ্রুপ সহসভাপতি বিমল কুমার মজুমদার টোকন বলেন, কাঁঠালবাড়িতে ঘাট সরানোর কারণে সড়ক পথে প্রায় আট কিলোমিটার দূরত্ব বেড়েছে। তাই পরিবহন সংশ্লিষ্ট সকলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরিবহনের ভাড়াও বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। আর নৌপথে যেহেতু দূরত্ব কমেছে সেক্ষেত্রে নৌপথে ভাড়া কমানো উচিত। কাঁঠালবাড়ি লঞ্চ মালিক সমিতি সভাপতি আতাহার হোসেন বেপারি বলেন, লঞ্চের ভাড়া কমানো বা বাড়ানোর ক্ষেত্রে লঞ্চ মালিক সমিতির কোন এখতিয়ার নেই। এ ব্যাপারে নৌমন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিএ যে সিদ্ধান্ত নেবে আমরা সেটাই মেনে নেবো। বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ঘাট ম্যানেজার আঃ সালাম বলেন, ফেরি ভাড়া আগের মতোই আদায় করা হচ্ছে। নৌপথে দূরত্ব কমার কারণে ভাড়া কমানোর বিষয়ে নৌমন্ত্রণালয় আমাদের যে নির্দেশনা দেবে আমরা সেভাবেই ভাড়া আদায় করবো। বিআইডব্লিউটিএ কাঁঠালবাড়ি ঘাট পরিদর্শক এবিএস মাহমুদ বলেন, লঞ্চ ও স্পীডবোটে ভাড়া কমানোর বিষয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে লঞ্চ ও স্পীডবোট মালিক সমিতির আলোচনা চলছে। এখনো ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত হয়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন