মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপ সম্পাদকীয়

সেক্যুলার আমেরিকায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে প্রেসিডেন্টের শপথ : কিন্তু বাংলাদেশে?

| প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোবায়েদুর রহমান : বাংলাদেশে যারা ইসলাম এবং মুসলমান বললেই নাক সিটকান, ইসলামী আচার-আচরণ দেখলেই যারা সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী বলে চিল্লাপাল্লা করতে থাকেন তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ এবং অভিষেক অনুষ্ঠানটি ভিডিওতে একবার দেখুন। একবার দেখলেই নাকে খত দিয়ে বলবেন, ইসলাম আর মুসলমানকে নিয়ে যখন তখন ওই রকম ফালতু কমেন্ট করবেন না। আসুন, আমরা দেখি, কোন কোন আচার-অনুষ্ঠানের (রিচুয়ালস) মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের অভিষেক হলো। যারা ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠান দেখেননি অথবা যারা ওই ভিডিওটিও দেখেননি তাদের অবগতির জন্য ওই অনুষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত একটি বিবরণ নিচে তুলে ধরছি।
ওই অনুষ্ঠান দেখে দেশি এবং বিদেশি সাংবাদিকরা একবাক্যে স্বীকার করেছেন, খ্রিস্টান ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়েছে। আর সে কারণেই অনুষ্ঠানটির মান এবং মর্যাদা এত বেড়েছে। বাংলাদেশের একজন সেক্যুলার লেখক লিখেছেন, আমেরিকা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী একটি দেশ। বিশ্বে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী আরো অনেক দেশ আছে। আমেরিকা তথা খ্রিস্টানরা ঈশ্বরকে বলে গড। এই গডের প্রতি তাদের আস্থা যত অবিচল এমন অবিচল আস্থা অন্যান্য খ্রিস্টীয় দেশে অনেক কমই পাওয়া যায়। সম্ভবত সে কারণেই আমেরিকা একমাত্র দেশ যে দেশে ডলারে লেখা আছে, ‘ইন গড উই ট্রাস্ট।’ অর্থাৎ আমরা গডে বা ঈশ্বরে বিশ্বাস করি। সেক্যুলারিস্ট বা ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদীদের প্রধান বুলি হলো, ধর্ম ও রাজনীতি আলাদা। ধর্ম থাকবে গির্জায়। রাজনীতি থাকবে রাষ্ট্রে। বলাবাহুল্য, ধর্ম নিরপেক্ষতার সুতিকাগার হলো পশ্চিমা বিশ্ব। সেই পশ্চিমা দুনিয়া তথা সমগ্র বিশ্বের অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ আমেরিকায় ধর্মনিরপেক্ষতার ওই সংজ্ঞা মানা হয় না। বাংলাদেশের ওই সেক্যুলার লেখকের মতে, পৃথিবীর অনেক দেশের মতোই ধর্ম তাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই অভিষেকের আগে গির্জায় গিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার  স্ত্রী মেলানিয়া খ্রিস্টান ধর্ম অনুযায়ী প্রার্থনা করেছেন। শপথের দিন হোয়াইট হাউসে এসেছিলেন খ্রিস্ট ধর্মের বিভিন্ন শাখার ধর্ম যাজকরা। এদের মধ্যে ক্যাথলিক, প্রোটেস্ট্যান্ট, লুথারেন প্রভৃতি ধর্মীয় গোষ্ঠীর পাদ্রিরা বিশিষ্ট মেহমান হিসেবে হাজির হয়েছিলেন। তারা যেসব বাণী পাঠ করেন সেসব বাণীতে বারবার উচ্চারিত হয় গড এবং যীশু খ্রিস্টের নাম। এরপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। শপথবাক্য পাঠের মুহূর্তটি ছিল অসাধারণ ধর্মীয় রিচুয়ালে গম্ভীর। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এক হাত ছিল ঊর্ধাকাশে উত্তোলিত, আরেক হাত রাখা ছিল খ্রিস্টানদের মহাপবিত্র ধর্ম গ্রন্থ বাইবেলের ওপর। বাইবেলটি নিজের হাতে একটি ট্রেতে ধরে রেখেছিলেন মেলানিয়া ট্রাম্প এবং সেই বাইবেলের ওপরই হাত রেখেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
আমেরিকার শাসনতন্ত্র বা সংবিধানে এমন কোনো বিধান নেই যে দেশের সর্বোচ্চ পদ গ্রহণের আগে বা পরে গির্জায় যেতেই হবে এবং প্রার্থনা করতেই হবে। কিন্তু সব প্রেসিডেন্টই গির্জায় যান এবং ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন। এবার ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই কাজটি করেছেন, আগেরবার বারাক ওবামা করেছেন, তার আগে অন্যরা করেছেন। প্রিয় পাঠক-পাঠিকা ভাই বোনেরা, আপনারা কল্পনা করুন, কোনো উন্নত, উন্নয়নশীল বা সেক্যুলার মুসলিম রাষ্ট্রের কথা। আপনারা কি শুনেছেন যে, এ ধরনের কোনো মুসলিম দেশের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী শপথবাক্য পাঠ করা বা ক্ষমতা গ্রহণের আগে মসজিদে গেছেন, দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করেছেন, আল্লার কাছে মোনাজাত করেছেন এবং তারপরে শপথ গ্রহণ করেছেন? আপনারা কি কল্পনা করতে পারেন যে, এই বাংলাদেশেই প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ওলামা-মাশায়েকদের ডাকা হয়েছে এবং তারা প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যে আল্লার পবিত্র কালাম থেকে গুরুত্বপূর্ণ আয়াত পাঠ করে প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রীকে দোয়া খায়ের করেছেন? আর সব শেষে আমাদের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী একটি হাত ঊর্ধাকাশে তুলে ধরেছেন এবং অন্য হাত কোরআন শরিফের ওপর রেখেছেন। এমন একটি দৃশ্য আমাদের দেশে কল্পনা করা যায় না। আর সত্যি সত্যি যদি তেমন একটি ঘটনা ঘটে তাহলে তৎক্ষণাৎ এদেশের তথাকথিত প্রগতিবাদী সাংবাদিক, কলামিস্ট এবং পলিটিশিয়ানরা সমস্বরে আওয়াজ তুলবেন দেশটি কট্টর সাম্প্রদায়িক এবং মৌলবাদী হয়ে গেছে। অথচ আমেরিকার মতো দেশে বছরের পর বছর ধরে তারা বুক ফুলিয়ে এ কাজটি করে যাচ্ছে। অথচ সেজন্য তাদেরকে কেউ মৌলবাদী বা সাম্প্রদায়িক তো বলেনই না, উল্টো ধর্মনিষ্ঠতার জন্য তারা প্রশংসিত হন।
দুই.
ট্রাম্প যতই কড়া মেজাজের হোন না কেন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি তাকে শ্রদ্ধাবোধ দেখাতেই হচ্ছে। আড়াইশ বছর হলো আমেরিকাতে গণতন্ত্রের চর্চা চলছে বাধা-বিঘœহীনভাবে। ফলে গণতন্ত্র সেখানে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। ট্রাম্প যখন শপথ নিচ্ছিলেন তখন অদূরে বিক্ষোভ করছিল অন্তত আড়াই লাখ মানুষ। তারা স্লোগান দিচ্ছিল, ‘ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট মানি না’, ‘ট্রাম্প আমাদের প্রেসিডেন্ট নন’, ‘কম ভোট পেয়ে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হয়েছেন’। কিন্তু আমেরিকার গণতন্ত্রের অভ্যন্তরীণ বিউটি হলো এই যে, এত বড় বিশাল বিক্ষোভের পরেও একজনকেও যেমন গ্রেফতার করা হয়নি তেমনি হিলারির তুলনায় পপুলার ভোট কম পাওয়া সত্ত্বেও সেটি ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া এবং শপথ গ্রহণের পথে কোনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
এগুলো তো গেল ট্রাম্পের নির্বাচন এবং অভিষেকের একদিক। কিন্তু দুনিয়াজুড়ে যে তুমুল জল্পনা-কল্পনা ও গবেষণা চলছে, সেটি হলো প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প কী করতে যাচ্ছেন। ইলেকশনের আগে তিনি বেশ কয়েক জায়গায় বলেছেন, তিনি শুধু ভারতকেই ভালোবাসেন না, হিন্দুদেরকেও ভালোবাসেন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও আগে টেলিফোনে কথা বলেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সাথে। আবার অন্যদিকে চীনের প্রেসিডেন্টের সাথে কথা না বলে তিনি কথা বলেছেন তাইওয়ানের সরকার প্রধানের সাথে। এসব ফোনাফুনি থেকে কারো মনে হয়তো কোনো ধারণা জন্ম হতে পারে। কিন্তু তাই বলে এক্ষনি বলা যাবে না, তিনি কোন পথে হাঁটছেন। আমরা কি ট্রাম্পকে সাম্প্রদায়িক বলব? প্রশ্নটি এ জন্যই করলাম যে, ভারত একটি বহুজাতিক দেশ। সেখানে হিন্দু ছাড়াও রয়েছে বৌদ্ধ, মুসলমান, খ্রিস্টান, জৈন, শিখ, পার্শি প্রভৃতি ধর্মীয় সম্প্রদায়। এরা সকলেই ভারতীয়। কাজেই ট্রাম্প যদি বলতেন ভারতকে যেমন ভালোবাসেন, তেমনি ভারতীয়দেরকেও ভালোবাসেন, তাহলে সেটি মানানসই হতো। অবশ্য এ লেখার সময় ইন্টারনেটে দেখলাম, ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হোয়াইট হাউসে দাওয়াত করেছেন। এমন দাওয়াত অবশ্য তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে করেননি। এক শ্রেণির রাজনৈতিক বিশ্লেষক গবেষণা করছিলেন যে, ট্রাম্প হয়তো ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি ভারসাম্যমূলক নীতি অবলম্বন করবেন। নরেন্দ্র মোদিকে সর্বাগ্রে হোয়াইট হাউসে দাওয়াত করায় সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে হচ্ছে। এর মাধ্যমে বরং ভারতের প্রতি নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টের একটি প্রেফারেন্সের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
ওইদিকে আবার চীনের সঙ্গে এ পর্যন্ত কোনোরূপ যোগাযোগ করেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। না করে তিনি তাইওয়ানের সরকার প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিষয়টি যদিও ইঙ্গিতময় তবুও এ সম্পর্কে এখনো চূড়ান্ত কথা বলার সময় আসেনি। ইঙ্গিতটি যদি সঠিক হয় তাহলে সারা দুনিয়া জোড়া তার প্রভাব পড়বে। দুই চীন নীতি সেই সত্তর দশকের শেষেই আমেরিকা পরিত্যাগ করেছে। হংকংকে চীনের অংশ বলে আমেরিকা মেনে নিয়েছে এবং এখন হংকং চীনের অংশ। তাইওয়ানের ক্ষেত্রেও আমেরিকার অ্যাটিচুট সেরকমই। সকলে ধরেই নিয়েছেন যে, চীনে তাইওয়ানের অন্তর্ভুক্তি শুধু সময়ের ব্যাপার। এমন একটি পটভূমিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি আবার নতুন করে দুই চীন নীতি পুনরুজ্জীবিত করেন তাহলে বিশ্ব রাজনীতিতে আমেরিকা ষাটের দশকে ফিরে যাবে।
তিন.
এ বিষয়টির ধাক্কা লাগবে উপমহাদেশীয় রাজনীতিতে। উপমহাদেশ তথা এশীয় রাজনীতির জটিল সমীকরণ ডোনাল্ড ট্রাম্প উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন কিনা সেটি এখনো বোঝা যাচ্ছে না। চীনের প্রতি ট্রাম্পের মনোভাব এখনো বন্ধুসুলভ নয়। তিনি বলেছেন, আমেরিকা চীন থেকে যেসব পণ্য আমদানি করবে সেসব পণ্যের ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এটি এক ধরনের সংরক্ষণবাদ বা প্রোটেকশনিজম। সংরক্ষণবাদের নীতি দুনিয়াজোড়া আজ প্রায় পরিত্যক্ত। যারা সাম্প্রতিক কয়েক বছরে আমেরিকায় গিয়েছেন তারা দেখেছেন যে, আমেরিকার প্রায় প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের প্রায় প্রতিটি স্টোর চীন পণ্যে ঠাসা। শুল্ক প্রাচীর তুলে চীনা পণ্যের আমদানি ঠেকালে সেটি চূড়ান্ত পরিণামে রাজনৈতিক বিরোধে পর্যবসিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কি তাহলে গণচীনকেই প্রধান বৈরী রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করছে? আর সে জন্যই কি তিনি ভারতকে কোলে টেনে নেওয়ার পলিসি করছেন?
চীনের সাথে বৈরিতা করবেন আবার রাশিয়াকে বন্ধু বানাবেনÑ এ দুটো নীতি কি একসাথে যায়? আবার চীনকে মোকাবেলার জন্য ভারতকে ব্যবহার করবেন তেমন কূটচাল কি ভারতও মেনে নেবে? একটি কথা শিক্ষিত সচেতন লোকদের অবশ্যই স্মরণ রাখা দরকার। ১৩০ কোটি লোকের দেশ গণচীন। আর ১১০ কোটি লোকের দেশ ভারত। দুই দেশের মধ্যেই বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পাওয়ার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। চীন ইতোমধ্যেই সমগ্র দুনিয়ার এক নম্বর রফতানিকারক দেশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ভারতের ১১০ কোটি লোকের বিশাল বাজার সে কিছুতেই হারাতে চাইবে না। পণ্যমূল্য এবং পণ্য মানে চীনা পণ্য এখনো দুনিয়ার রফতানি বাজারে একাধিপত্য বজায় রেখেছে। সুতরাং রাজনৈতিক কারণে সে ভারতের বাজার হাতছাড়া করতে চাইবে কেন? দেখা যায় যে, অন্তত তিনটি ভৌগোলিক অঞ্চল নিয়ে গণচীন ও ভারতের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। অঞ্চল তিনটি হলোÑ ভারতের অরুনাচল যেটি নেফা হিসেবে পরিচিত), কাশ্মীরের লাদাখ, বিশেষ করে আকসাই চীন এবং হিমালয়ের তিব্বত। ১৯৬২ সালের যুদ্ধে চীন অরুনাচল দখল করেছিল। যদিও শেষে তারা নিজেরাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অরুনাচল ছেড়ে চলে যায়। এর কারণ হলো এই যে, ভারতের সাথে তারা রাজনৈতিক ও সামরিক বিরোধ জিইয়ে রাখতে চায়নি। অন্যদিকে আকসাই চীন কাশ্মীরের অংশ এবং সেই হিসেবে ভারতেরও অংশÑ এমন দাবি করা সত্ত্বেও ভারত এটি নিয়ে চীনের সাথে বিরোধ পরিহার করে যাচ্ছে। আকসাই চীন দখলে রয়েছে চীনের। ভারত সে ব্যাপারে উচ্চবাচ্য করছে না। একই কথা প্রযোজ্য তিব্বত এবং লাদাখের ক্ষেত্রেও। কারণটি হলো এই যে, ভারত এশিয়াতে দ্বিতীয় বৃহৎ শক্তি। অর্থনৈতিকভাবেও দিনের পর দিন উন্নতি করে যাচ্ছে। এখন কিছু কিছু পণ্য বিদেশে রফতানি করছে। অবশ্য রফতানি ক্ষেত্রে চীনের থেকে ভারত অনেক পেছনে পড়ে আছে। তারপরেও ভারতের চোখ রয়েছে চীনের ১৩০ কোটি লোকের বিশাল বাজারের ওপর। ভারতীয় পণ্য যদি চীনের মতো দামে এবং মানে প্রতিযোগিতামূলক হয় তাহলে একদিন ভারত ও চীনের বিশাল বাজার ধরতে পারবে। এ কারণে চীন এবং ভারত উভয়ই তাদের পারস্পরিক রাজনৈতিক বিরোধকে ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে।
এই পটভূমিতে ভারত গণচীনের বিরুদ্ধে আমেরিকার হাতের পুতুল হতে কতদূর রাজি হবে সে ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। ভারত হলো কৌটিল্য বা চাণক্যের দেশ। সে আমেরিকার অর্থ এবং সামরিক সাহায্য দুহাত ভরে নেবে, কিন্তু চূড়ান্ত মুহূর্তে চীনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করবে না। ভারতের লক্ষ্য আমেরিকাকে ব্যবহার করে সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে চীনের সমকক্ষ হওয়া।
রাজনীতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পূর্ণ নতুন। সৌদি আরব-ইরান, ভারত-পাকিস্তান, ভারত-চীন প্রভৃতি জটিল সমীকরণ বুঝতে তার কত দিন সময় লাগবে সেটি এখন দেখার বিষয়। সেটি বোঝার পর তিনি বিশ্ব রাজনীতিতে কোন স্ট্র্যাটেজি অনুসরণ করেন সেটি দেখার জন্য বিশ্বের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল সর্তকতার সাথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন