শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

উন্নয়নের চাকা থমকে দিয়েছে কাজিপুর চরাঞ্চলবাসীর

শুষ্ক মৌসুমেও যাতায়াতে দুর্ভোগ

| প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

টি এম কামাল, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে : রাক্ষুসি যমুনার বার বার ভাঙনের শিকার সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের বহু সমৃদ্ধ জনপদ। এককালের সমৃদ্ধ জনপদ আজ অথৈ জলরাশিতে ভরপুর। ভাঙন অধ্যুষিত ইউনিয়নগুলোর লক্ষাধিক মানুষের তাই প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে যাতায়াত। এমনকি জরুরি প্রয়োজনেও মানুষ অসহায়ের মতো পড়ে থাকে। চলাচলের নেই তেমন কোনো রাস্তাঘাট। ফলে শুষ্ক মৌসুম জুড়ে এ অঞ্চলের মানুষের চরম দুর্ভোগ-দুর্দশা পোহাতে হয়। বছরের প্রায় ৮ মাস তাদের এ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মাইলের পর মাইল বালুচর ভেঙে তাদের হাটঘাটসহ প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হয়। বর্ষার শেষের দিকে এ দুর্ভোগের শুরু। কোথাও হাঁটুপানি, কোথাওবা কোমর পানি পার হয়ে গ্রামে গ্রামে যাতায়াত করতে হয়। মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে বিশেষ করে কৃষিপণ্য চর থেকে শহরে আনতে গিয়ে কৃষকগণ চোখের পানি ফেলেন। কৃষিপণ্য বিক্রির পর লভাংশের বেশির ভাগই পরিবহন খাতে ব্যয় হয়। চরাঞ্চলের পরিবহন বলতে এখনও প্রাচীন আমলের ঘোড়ার গাড়িই মালামাল ও যাত্রী পরিবহনের একমাত্র বাহন। চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও চরের বাসিন্দাদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাধীনতার পরবর্তীতে চরাঞ্চলে ব্যাপকভাবে জন মানুষের বসতি গড়ে ওঠে। যমুনার চরাঞ্চলের বালি মিশ্রিত মাটিতে মরিচ, বাদাম, কালাই, আখ, ভুট্টাসহ বিভিন্ন মসলার ও সবজির ব্যাপকভাবে আবাদ হয়ে থাকে। নগর জীবনের আধুনিক সভ্যতার অনেক কিছুই চরাঞ্চলবাসীর ধরাছোঁয়ার বাইরে। অধিক ফসল চাষ করে শহরে এনে তারা বিক্রি করে জীবনযাপনের অতি প্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা মেটায়। কিন্তু তারা পায় না আধুনিক ন্যূনতম সুবিধাদি। বিদ্যুৎ তাদের কাছে স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। সোলার সিস্টেমে অনেকে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়ে নিলেও যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত না হওয়ায় চরাঞ্চলবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় বছরের পর বছর। ১২নং মনসুর নগর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রাজমহর ও ৭নং খাসরাজবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী জানান, সিরাজগঞ্জের চরাঞ্চলে এখন স্কুল-কলেজ মাদ্রাসাসহ নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় নানা ফসল উৎপাদিত হচ্ছে। বিশেষ করে মরিচ ও সবজির আবাদ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকার কারণে পণ্য আনা-নেয়া এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উপজেলা পরিষদে প্রকল্প দেয়া হলেও তা আংশিক বাস্তবায়ন হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে দিনের পর দিন ধরনা দিয়েও সহযোগিতা পাওয়া যায় না। অথচ শুষ্ক মৌসুম জুড়েই জনগণের দাবি রাস্তা ও বাঁধ নির্মাণের। ৮নং চরগিরিশ ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল হক মিন্টু বলেন, যদি চরাঞ্চলের যাতায়াতের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করা যেত তাহলে এখানকার উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে কাজিপুরবাসী তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে সক্ষম হতো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন