মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ফেনী নদীর বাঁধ নির্মাণের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

ভাঙনে ২০ বছরে গৃহহীন ১০ হাজার মানুষ

| প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফেনী জেলা সংবাদদাতা : ফেনী নদীর ভাঙনে গত ২০ বছরে ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের লাঙ্গলমোড়া গ্রামের ১০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছে। প্রতি বছর বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢলে এ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফলে বন্যা এবং পাহাড়ি ঢলে মারাত্মক ভাঙনের কবলে পড়ে গৃহহীন হচ্ছে এলাকাবাসী। এদিকে ফেনী নদীতে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গত বুধবার দুপুরে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। এ সময় এলাকার হাজার হাজার নারী-পুরুষ নদীর পাড়ে এসে জড়ো হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্তরা জানায়, ১৯৭৫ সাল থেকে লাঙ্গলমোড়া গ্রামের মানুষ নদী ভাঙনের শিকার। সর্বশেষ ১৯৯৫ সালে ভাঙন প্রতিরোধে নদীর লুপ কাটিং করা হলেও দুই তীরের বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করায় পুনরায় ভাঙনের কবলে পড়ে স্থানীয় অধিবাসীরা। গত ২-৩ বছরের বন্যায় ৫শ’ লোক গৃহহীন হয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। এছাড়া ১৯৯৫ সাল থেকে অদ্যাবধি ১০ হাজারেরও অধিক লোক ঘর-বাড়ি ও জায়গা-জমি সর্বস্ব হারিয়ে অন্যের জায়গায় বসবাস করছে। জানা গেছে, ফেনী নদীর ২ কিঃমিঃ এলাকা জুড়ে ভাঙনের শিকার লাঙ্গলমোড়া গ্রামবাসী। নদীর ভাঙনে বদলে গেছে গ্রামের মানচিত্র। বর্তমানে অধিকাংশ ফসলি জমি এবং বসত বাড়ি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের অংশে পরিণত হয়েছে। প্রায় ৫শ’ একর জমি ভোগ-দখল করছে ওই উপজেলার মানুষ। এদিকে ২০১৬ সালের অক্টোবরে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালকের কাছে এলাকার ৬শ’ লোক স্বাক্ষরিত একটি স্মারক লিপি প্রেরণ করা হয়। স্মারক লিপিতে উল্লেখ করা হয়, ফেনী নদীর ভাঙন প্রতিরোধে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা না হলে অচিরেই হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়বে। ফেনী-১ আসনের বর্তমান সাংসদ শিরিন আখতার সম্প্রতি নদী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে এলাকাবাসীকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এলাকাবাসীর আয়োজনে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য এমএ হোসাইন স্বপন, ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক মানিক, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা মোঃ মোস্তফাসহ ক্ষতিগ্রস্ত হাজার হাজার নারী-পুরুষ। এ বিষয়ে জানতে ফেনী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কোহিনূর আলম বলেন, ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকার একটি নকশা এবং চূড়ান্ত হিসাব-নিকাশ তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রের অনুমতি পেলে নদীর বাঁধ নির্মাণে কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এদিকে এলাকাবাসী  অভিযোগ করে বলেন লাঙ্গলমোড়া ও মিরসরাইয়ের সীমান্তবর্তী নদীতে ৬টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দিন-রাত বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় ইউপি মেম্বার জসিম উদ্দিনসহ একটি সিন্ডিকেট। বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে ভাঙন অব্যাহত থাকবে বলে জানান এলাকাবাসী। তারা আরও বলেন, লাঙ্গলমোড়ায় যে ২ কিলোমিটারে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে ওই এলাকা থেকেও এক সময় বালু উত্তোলন করা হতো। ইঞ্জিনচালিত বড় ট্রলার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় নদীর পাড়ে প্রচুর চাপ পড়ছে বলে উল্লেখ করেন তারা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন